ঢাকা ০৯:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
এআই চ্যাটবট নিয়ে গুরুতর তথ্য ফাঁস স্বীকার করল মেটা নবীগঞ্জে ৩০ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদককারবারি আটক সংগ্রাম-শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় ৮১ বছরে খালেদা জিয়া রাশিয়ার সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলায় ড্রোন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলছে লিথুয়ানিয়া এআই–ভিত্তিক হার্ডওয়্যারে বড় উদ্যোগ নিচ্ছে অ্যাপল জেরুজালেমকে চিরতরে ছিনিয়ে নিতে ই-ওয়ান বসতি প্রকল্প পুনরুজ্জীবনের ঘোষণা ইসরাইলি অর্থমন্ত্রীর ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলল ইউরোপ সিরিয়ার পুনর্গঠনে ইদলিব হবে কেন্দ্রবিন্দু: প্রেসিডেন্ট শারআ নির্বাচন করলে তফসিলের আগেই উপদেষ্টার পদ ছেড়ে দেব: আসিফ মাহমুদ রাজনীতি থেকে মাইনাস হবে, যারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করবে: সালাহউদ্দিন

মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় নিবাস: বাংলাদেশিদের অবস্থান এবং অর্থনৈতিক প্রভাব

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:০৭:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫
  • / 46

ছবি: সংগৃহীত

 

মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় নিবাস (মাই সেকেন্ড হোম) গড়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের অবস্থান ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত, মাই সেকেন্ড হোম (এমএম২এইচ) কর্মসূচির মাধ্যমে তিন হাজার ৬০৪ জন বাংলাদেশি দেশটিতে দ্বিতীয় নিবাস প্রতিষ্ঠা করেছেন। সামগ্রিকভাবে, ৫৮ হাজার ৪৬৮ জন বিদেশি নাগরিক মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় হোম তৈরি করেছেন, যার মধ্যে বাংলাদেশিরা উল্লেখযোগ্য অংশ।

মালয়েশিয়ার পর্যটন, শিল্প ও সংস্কৃতি মন্ত্রী দাতুক সেরি তিয়ং কিং সিন সম্প্রতি বলেছেন, মাই সেকেন্ড হোম প্রোগ্রাম এখন বিশ্বের যেকোনো দেশের নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত। এই প্রোগ্রামের আওতায় বিদেশিরা মালয়েশিয়ায় বসবাসের জন্য নির্দিষ্ট শর্তে আবেদন করতে পারেন, এবং সফল হলে এক বছরের জন্য বসবাসের অনুমতি পেতে পারেন।

আগে, ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত, ৫৬ হাজার ৬৬ জন একটিভ সেকেন্ড হোম পাসধারী ছিল। এর মধ্যে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং বাংলাদেশিরা শীর্ষস্থান অধিকার করেছে। মন্ত্রী আরো জানান, নতুন নীতির আওতায় ৭৮২টি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৪৬৩ জন ডিপেন্ডেন্ট রয়েছেন। এটি দেখায় যে, সেকেন্ড হোমের জন্য বাংলাদেশিদের আগ্রহ ক্রমেই বাড়ছে।

বাংলাদেশিরা মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম তৈরি করতে মূলত দুটি কারণে আগ্রহী—একটি হলো দেশে অস্থিরতা থেকে নিরাপত্তা খোঁজা, আরেকটি হলো মালয়েশিয়ায় ভালো বিনিয়োগের সুযোগ। অনেক ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ এবং উচ্চ আয়ের ব্যক্তিরা মালয়েশিয়াকে দ্বিতীয় নিবাস হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। এর ফলে, বাংলাদেশ থেকে বৈধ পথে অর্থের স্থানান্তর না হয়ে হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচারও হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি অধ্যুষিত অনেক এলাকাও গড়ে উঠেছে। সেখানে ফ্ল্যাট এবং বাড়ি কিনে বসবাস করছেন বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশের তুলনায় মালয়েশিয়ায় বাড়ির দাম অনেক কম, যা তাদের সেকেন্ড হোম প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করছে। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা সেকেন্ড হোমের সুবিধা নিয়ে সেখানে রেস্টুরেন্ট, হোটেল, গার্মেন্টস এবং অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করছেন। তবে, এই অর্থের উৎস নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা হয় না।

ডা. শংকর পোদ্দার, মালয়েশিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্সের সদস্য, বলেন, “মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোমের মাধ্যমে বাংলাদেশিরা নিজের নিরাপত্তা এবং বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছেন।” তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ সরকারকে এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে, কেন দেশের মানুষ মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় হোম তৈরি করতে চাইছে।”

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের বাইরে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কঠোর নীতি অনুসরণ করলেও, মালয়েশিয়া ও কানাডায় বাংলাদেশিদের সেকেন্ড হোম তৈরি এবং অর্থ পাচারের বিষয়টি এখনো আলোচিত।

এভাবে, মালয়েশিয়া সেকেন্ড হোম প্রোগ্রাম বাংলাদেশের অর্থনীতি ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করছে, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় নিবাস: বাংলাদেশিদের অবস্থান এবং অর্থনৈতিক প্রভাব

আপডেট সময় ১২:০৭:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫

 

মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় নিবাস (মাই সেকেন্ড হোম) গড়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের অবস্থান ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত, মাই সেকেন্ড হোম (এমএম২এইচ) কর্মসূচির মাধ্যমে তিন হাজার ৬০৪ জন বাংলাদেশি দেশটিতে দ্বিতীয় নিবাস প্রতিষ্ঠা করেছেন। সামগ্রিকভাবে, ৫৮ হাজার ৪৬৮ জন বিদেশি নাগরিক মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় হোম তৈরি করেছেন, যার মধ্যে বাংলাদেশিরা উল্লেখযোগ্য অংশ।

মালয়েশিয়ার পর্যটন, শিল্প ও সংস্কৃতি মন্ত্রী দাতুক সেরি তিয়ং কিং সিন সম্প্রতি বলেছেন, মাই সেকেন্ড হোম প্রোগ্রাম এখন বিশ্বের যেকোনো দেশের নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত। এই প্রোগ্রামের আওতায় বিদেশিরা মালয়েশিয়ায় বসবাসের জন্য নির্দিষ্ট শর্তে আবেদন করতে পারেন, এবং সফল হলে এক বছরের জন্য বসবাসের অনুমতি পেতে পারেন।

আগে, ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত, ৫৬ হাজার ৬৬ জন একটিভ সেকেন্ড হোম পাসধারী ছিল। এর মধ্যে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং বাংলাদেশিরা শীর্ষস্থান অধিকার করেছে। মন্ত্রী আরো জানান, নতুন নীতির আওতায় ৭৮২টি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৪৬৩ জন ডিপেন্ডেন্ট রয়েছেন। এটি দেখায় যে, সেকেন্ড হোমের জন্য বাংলাদেশিদের আগ্রহ ক্রমেই বাড়ছে।

বাংলাদেশিরা মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম তৈরি করতে মূলত দুটি কারণে আগ্রহী—একটি হলো দেশে অস্থিরতা থেকে নিরাপত্তা খোঁজা, আরেকটি হলো মালয়েশিয়ায় ভালো বিনিয়োগের সুযোগ। অনেক ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ এবং উচ্চ আয়ের ব্যক্তিরা মালয়েশিয়াকে দ্বিতীয় নিবাস হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। এর ফলে, বাংলাদেশ থেকে বৈধ পথে অর্থের স্থানান্তর না হয়ে হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচারও হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি অধ্যুষিত অনেক এলাকাও গড়ে উঠেছে। সেখানে ফ্ল্যাট এবং বাড়ি কিনে বসবাস করছেন বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশের তুলনায় মালয়েশিয়ায় বাড়ির দাম অনেক কম, যা তাদের সেকেন্ড হোম প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করছে। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা সেকেন্ড হোমের সুবিধা নিয়ে সেখানে রেস্টুরেন্ট, হোটেল, গার্মেন্টস এবং অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করছেন। তবে, এই অর্থের উৎস নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা হয় না।

ডা. শংকর পোদ্দার, মালয়েশিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্সের সদস্য, বলেন, “মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোমের মাধ্যমে বাংলাদেশিরা নিজের নিরাপত্তা এবং বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছেন।” তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ সরকারকে এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে, কেন দেশের মানুষ মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় হোম তৈরি করতে চাইছে।”

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের বাইরে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কঠোর নীতি অনুসরণ করলেও, মালয়েশিয়া ও কানাডায় বাংলাদেশিদের সেকেন্ড হোম তৈরি এবং অর্থ পাচারের বিষয়টি এখনো আলোচিত।

এভাবে, মালয়েশিয়া সেকেন্ড হোম প্রোগ্রাম বাংলাদেশের অর্থনীতি ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করছে, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে।