রমজানে গ্যাস সংকট: গৃহিণীদের চরম ভোগান্তি
পবিত্র রমজান মাসে রাজধানীতে গ্যাস সংকটের কারণে গৃহিণীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। ইফতার ও সেহেরির খাবার প্রস্তুত করতে তাদের বড় বেগ পেতে হচ্ছে। অনেকেই বিকল্প হিসেবে ইলেকট্রিক চুলা, সিলিন্ডার কিংবা মাটির চুলা ব্যবহার করছেন। শুধু আবাসিক এলাকায় নয়, রাজধানীর ফিলিং স্টেশনগুলোতেও গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রয়োজনের তুলনায় প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ কম থাকায় এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।
গবেষণা অনুসারে, সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান রমজানে মুসল্লিদের ভোগান্তিতে না ফেলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু লোডশেডিং মুক্ত রাখতে গিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানো হয়েছে, যার ফলে বাসাবাড়ির গ্যাসের চাপ কমেছে। ফলে গৃহিণীরা রান্না করতে হিমশিম খাচ্ছেন।
রাজধানীর বনশ্রী, খিলগাঁও, মেরাদিয়া, কাফরুল, মোহম্মদপুর, বসিলা, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় শুক্রবার (০৭ মার্চ) গ্যাসের তীব্র সংকটের খবর পাওয়া গেছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা জানান, গ্যাসের চাপ একদম কম, যা দিয়ে রান্না করা সম্ভব হচ্ছে না।
শ্যামপুরের খাদিজা বেগম বলেন, “গ্যাস সংকট দীর্ঘদিনের সমস্যা। রমজানে এই ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। বিকল্প হিসেবে সিলিন্ডার ব্যবহার করছি, যা দ্বিগুণ খরচ।” তিনি জানান, গ্যাস না থাকলেও প্রতি মাসে দুই মুখী চুলার জন্য ১ হাজার ৮০ টাকা তিতাসকে দিতে হয়।
খিলগাঁওয়ের রহিমা বেগম জানান, “বাসায় গ্যাস থাকে না, তাই ইলেকট্রিক চুলা ব্যবহার করছি। যদি লোডশেডিং হয়, তাহলে খাবার তৈরি করতে সমস্যা হবে।”
বিভিন্ন অঞ্চলের গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন, রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত গ্যাস পাওয়া গেলেও দিনের বেলায় এর দেখা নেই। গ্যাস না থাকলেও মাস শেষে বিল ঠিকই দিতে হচ্ছে।
তিতাসের সূত্র জানায়, চাহিদার তুলনায় ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস কম থাকায় সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তবে তারা আশা প্রকাশ করেছে যে, শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে। তিতাস গ্যাসের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ সাইদুল হাসান জানান, প্রতিদিন প্রায় ১৯৬০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস চাওয়া হচ্ছে, কিন্তু মাত্র ১৫০০ মিলিয়ন পাওয়া যাচ্ছে।
এছাড়া, রাজধানীর ফিলিং স্টেশনগুলোতেও গ্যাস সংকট রয়েছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নির্দেশে রমজান মাসে প্রতিদিন বেলা আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরের সব সিএনজি ফিলিং স্টেশন বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ বলছে, সরবরাহের অভাবের কারণে সংকট দেখা দিয়েছে, এবং তারা অভিযোগ কেন্দ্রে ফোন আসার বিষয়টি লক্ষ্য করছে।