০৫:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
গণভোট নিয়ে দলগুলো ‘ঐকমত্যে’ পৌঁছাতে না পারলে সিদ্ধান্ত দেবে সরকার পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে ইরাক–তুরস্ক সমঝোতা স্মারক সই হতে যাচ্ছে আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২০ অবিশ্বাস্য উড়ন্ত গাড়ি আনছে টেসলা, জানালেন ইলন মাস্ক এমবাপ্পের পেনাল্টি মিস দেখেই হার্ট অ্যাটাকে রিয়াল সমর্থকের মৃত্যু জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের কোনো সুযোগ নেই: মির্জা ফখরুল যারা আগে গণভোট চায় না তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী না: মুজিবুর রহমান আজ থেকে শুরু জাটকা শিকারে ৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা ঘরোয়া সাজে স্নিগ্ধ জয়া আহসান, নতুন লুকে মুগ্ধ ভক্তরা নতুন ফাঁস হওয়া নথিতে ইসরায়েলের সঙ্গে অ্যামাজন ও গুগলের গোপন চুক্তি উন্মোচিত

গাজায় ভয়াবহ হামলা, শহর ছাড়ছে হাজারো মানুষ

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০১:০৭:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / 100

ছবি সংগৃহীত

 

ইসরায়েলি সেনাদের তীব্র বোমা ও গোলাবর্ষণে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের সবচেয়ে বড় নগরী গাজা সিটি ছেড়ে পালাচ্ছেন হাজারো বাসিন্দা। জাতিসংঘের এক তদন্ত কমিশন চলমান এই যুদ্ধকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

বুধবার প্রকাশিত আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত দুই বছরের মধ্যে গাজা সিটিতে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা। আকাশ ও স্থল থেকে টানা বোমাবর্ষণে শহর পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। জাতিসংঘ মহাসচিবও এ ঘটনাকে “ভয়ংকর” বলে বর্ণনা করেছেন।

বিজ্ঞাপন

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এক্সে লিখেছেন, “গাজা জ্বলছে।” এ সময় হাতে গোনা কিছু মালপত্র, আসবাবপত্র বোঝাই ভ্যান কিংবা গাধার গাড়ি নিয়ে চারপাশে কালো ধোঁয়া ও ভাঙাচোরা ভবনের মাঝ দিয়ে মানুষজন দক্ষিণমুখী আল-রাশিদ সড়কে ছুটছেন।

প্রথম দিকে অনেকে ইসরায়েলের দখল পরিকল্পনার মুখেও শহর ছাড়তে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। তবে সাম্প্রতিক ভয়াবহ হামলায় অসংখ্য বহুতল ভবন, বাড়িঘর ও অবকাঠামো গুঁড়িয়ে যাওয়ায় অনেকেই বাধ্য হয়ে দক্ষিণে যাচ্ছেন। কিন্তু সেখানেও নিরাপদ আশ্রয়ের নিশ্চয়তা নেই।

শুধু মঙ্গলবারেই অন্তত ৯১ জন নিহত হয়েছেন। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উপকূলীয় সড়ক ধরে পালানোর সময় বেসামরিক লোক বহনকারী একাধিক গাড়িতেও বোমা বর্ষণ করা হয়। সেদিন অন্তত ১৭টি আবাসিক ভবন ধ্বংস হয় এবং পূর্ব গাজার তুফফাহ এলাকায় আইবাকি মসজিদকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়।

একই সময়ে উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে বিস্ফোরক বোঝাই রোবট দিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ইসরায়েলি সেনারা। মানবাধিকার সংস্থা ইউরোমেড মনিটরের তথ্য অনুযায়ী, এ ধরনের অন্তত ১৫টি রোবট মোতায়েন করা হয়েছে, প্রতিটি রোবট প্রায় ২০টি বাড়ি ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে।

যুদ্ধের প্রথম ধাপ শেষে প্রায় ১০ লাখ মানুষ ধ্বংসস্তূপের গাজা সিটিতে ফিরেছিলেন। তবে বর্তমানে কতজন রয়ে গেছেন সে বিষয়ে ভিন্নমত রয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করছে, প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষ শহর ছেড়েছে। অন্যদিকে গাজার সরকারি গণমাধ্যম অফিস জানায়, সমান সংখ্যক মানুষ এখনো শহরের কেন্দ্র ও পশ্চিমাংশে আশ্রয় নিয়েছে, আর প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার মানুষ পুরোপুরি শহর ছেড়েছে।

কিন্তু যারা দক্ষিণে পালাচ্ছেন তারাও নিরাপদ নন। রাফাহ ও খান ইউনিস থেকে বিতাড়িত মানুষের ভিড়ে ঠাসা আল-মাওয়াসি ক্যাম্পেও ইসরায়েলি সেনারা হামলা চালিয়েছে। সেখানে ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখে অন্তত ১৫ হাজার মানুষ আবার গাজা সিটিতে ফিরে গেছেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।

এদিকে, ইসরায়েলি সেনারা আকাশপথে গাজা সিটির ভেতরে অগ্রসরমান ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানবাহনের ফুটেজ প্রকাশ করেছে। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র এফি ডেফ্রিন স্বীকার করেছেন, পুরো শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। তিনি আরও বলেছেন, “যত সময়ই লাগুক, গাজায় অভিযান চলবে।”

মঙ্গলবার ভোর থেকে সার্বিক গাজায় অন্তত ১০৬ জন নিহত হয়েছেন বলে মেডিকেল সূত্রে জানা গেছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজায় ভয়াবহ হামলা, শহর ছাড়ছে হাজারো মানুষ

আপডেট সময় ০১:০৭:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

ইসরায়েলি সেনাদের তীব্র বোমা ও গোলাবর্ষণে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের সবচেয়ে বড় নগরী গাজা সিটি ছেড়ে পালাচ্ছেন হাজারো বাসিন্দা। জাতিসংঘের এক তদন্ত কমিশন চলমান এই যুদ্ধকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

বুধবার প্রকাশিত আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত দুই বছরের মধ্যে গাজা সিটিতে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা। আকাশ ও স্থল থেকে টানা বোমাবর্ষণে শহর পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। জাতিসংঘ মহাসচিবও এ ঘটনাকে “ভয়ংকর” বলে বর্ণনা করেছেন।

বিজ্ঞাপন

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এক্সে লিখেছেন, “গাজা জ্বলছে।” এ সময় হাতে গোনা কিছু মালপত্র, আসবাবপত্র বোঝাই ভ্যান কিংবা গাধার গাড়ি নিয়ে চারপাশে কালো ধোঁয়া ও ভাঙাচোরা ভবনের মাঝ দিয়ে মানুষজন দক্ষিণমুখী আল-রাশিদ সড়কে ছুটছেন।

প্রথম দিকে অনেকে ইসরায়েলের দখল পরিকল্পনার মুখেও শহর ছাড়তে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। তবে সাম্প্রতিক ভয়াবহ হামলায় অসংখ্য বহুতল ভবন, বাড়িঘর ও অবকাঠামো গুঁড়িয়ে যাওয়ায় অনেকেই বাধ্য হয়ে দক্ষিণে যাচ্ছেন। কিন্তু সেখানেও নিরাপদ আশ্রয়ের নিশ্চয়তা নেই।

শুধু মঙ্গলবারেই অন্তত ৯১ জন নিহত হয়েছেন। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উপকূলীয় সড়ক ধরে পালানোর সময় বেসামরিক লোক বহনকারী একাধিক গাড়িতেও বোমা বর্ষণ করা হয়। সেদিন অন্তত ১৭টি আবাসিক ভবন ধ্বংস হয় এবং পূর্ব গাজার তুফফাহ এলাকায় আইবাকি মসজিদকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়।

একই সময়ে উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে বিস্ফোরক বোঝাই রোবট দিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ইসরায়েলি সেনারা। মানবাধিকার সংস্থা ইউরোমেড মনিটরের তথ্য অনুযায়ী, এ ধরনের অন্তত ১৫টি রোবট মোতায়েন করা হয়েছে, প্রতিটি রোবট প্রায় ২০টি বাড়ি ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে।

যুদ্ধের প্রথম ধাপ শেষে প্রায় ১০ লাখ মানুষ ধ্বংসস্তূপের গাজা সিটিতে ফিরেছিলেন। তবে বর্তমানে কতজন রয়ে গেছেন সে বিষয়ে ভিন্নমত রয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করছে, প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষ শহর ছেড়েছে। অন্যদিকে গাজার সরকারি গণমাধ্যম অফিস জানায়, সমান সংখ্যক মানুষ এখনো শহরের কেন্দ্র ও পশ্চিমাংশে আশ্রয় নিয়েছে, আর প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার মানুষ পুরোপুরি শহর ছেড়েছে।

কিন্তু যারা দক্ষিণে পালাচ্ছেন তারাও নিরাপদ নন। রাফাহ ও খান ইউনিস থেকে বিতাড়িত মানুষের ভিড়ে ঠাসা আল-মাওয়াসি ক্যাম্পেও ইসরায়েলি সেনারা হামলা চালিয়েছে। সেখানে ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখে অন্তত ১৫ হাজার মানুষ আবার গাজা সিটিতে ফিরে গেছেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।

এদিকে, ইসরায়েলি সেনারা আকাশপথে গাজা সিটির ভেতরে অগ্রসরমান ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানবাহনের ফুটেজ প্রকাশ করেছে। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র এফি ডেফ্রিন স্বীকার করেছেন, পুরো শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। তিনি আরও বলেছেন, “যত সময়ই লাগুক, গাজায় অভিযান চলবে।”

মঙ্গলবার ভোর থেকে সার্বিক গাজায় অন্তত ১০৬ জন নিহত হয়েছেন বলে মেডিকেল সূত্রে জানা গেছে।