ঢাকা ১২:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কানাডার ফিলিস্তিন সিদ্ধান্তের জবাবে ট্রাম্পের বাণিজ্যিক প্রতিশোধ ট্রাম্প বললেন ‘ভারত চাইলে অর্থনীতি ডুবাক’- তেল আমদানিতে ধাক্কা বাংলাদেশের শুল্ক আলোচনায় কূটনৈতিক সাফল্য দেখছেন ড্যানিলোভিচ সেনবাগ থানা পুলিশের অভিযানে নকল স্বর্ণ প্রতারক চক্রের ২ সদস্য গ্রেফতার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাইন আর্টস ক্লাবের নেতৃত্বে সুমন ও ফুয়াদ রংপুরে হিন্দুদের বাড়িতে হামলার ঘটনায় ৫ জনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর কিছুদিনের মধ্যেই নির্বাচনের ঘোষণা শুনবেন: আসিফ নজরুল ‘জুলাই সনদ’ না দেওয়া পর্যন্ত শাহবাগে অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অতিরিক্ত সিম ডি-রেজিস্ট্রেশনের নির্দেশ প্রশংসায় অস্ট্রেলিয়ান সিনেটর,সন্তান কোলে নিয়েই পার্লামেন্টে ভাষণ

রংপুরে হিন্দুপল্লীতে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৬:৪৩:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
  • / 14

ছবি সংগৃহীত

 

রংপুরের গঙ্গাচড়া ‍উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের একটি হিন্দুপল্লীতে হামলা ও বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) শরীফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান।

এর আগে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পার্শ্ববর্তী নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় যৌথবাহিনী অভিযানে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন_মো. ইয়াছিন আলী (২৫), স্বাধীন মিয়া (২৮), আশরাফুল ইসলাম (২৮), এস এম আতিকুর রহমান খান (২৮) ও সাদ্দাম হোসেন সেলিম (২২)। তারা ঘটনাস্থলের পাশের মাগুরা ইউনিয়নের বাসিন্দা।

এর আগে, মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে শ্রী রবীন্দ্রনাথ রায় (৫৫) নামে ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১০০০ থেকে ১২০০ জনের বিরুদ্ধে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা করে। এরপর যৌথ বাহিনী অভিযানে রাতভর তল্লাশি চালিয়ে ভিডিও ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করে ঘটনাস্থানের আশপাশের এলাকার থেকে ওই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।

এদিকে বুধবার দুপুরে আসামিদের রংপুর সদর কোর্টে হাজির করা হলে আদালত তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। রংপুর সদর কোর্ট ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রংপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) শরীফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান জানান, ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হিন্দুপল্লীতে হামলার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। সেই মামলার প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে গত শনিবার (২৬ জুলাই) রঞ্জন কুমার রায় নামে এক কিশোরকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় পাশের উপজেলার এলাকার লোকজন এসে আলদাতপুর ছয়আনি বালাপাড়া হিন্দুপল্লীতে ওই কিশোরের বাড়ি মনে করে অন্য আরেকজনের বাড়িতে ভাঙচুর চালান। পর দিন রোববার আরেক দফা হিন্দুপল্লীতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।

এতে ১৯টির মতো পরিবারের ঘরবাড়ি তছনছ হয়। আতঙ্কে অনেক পরিবার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা। হামলা ঠেকাতে গিয়ে এক পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে সেনাবাহিনী ও পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়।

এদিকে আটক রঞ্জন কুমার রায়কে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার (২৭ জুলাই) আদালতের মাধ্যমে কিশোর পুনর্বাসনকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তবে সোমবার (২৮ জুলাই) বিকেল থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় স্বস্তি ফিরতে শুরু করে হিন্দুপল্লীতে। ভয়ভীতি ও হামলার আতঙ্ক কেটে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো বাড়িতে ফিরে আসেন।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) উপজেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের বাড়িঘর মেরামত করার কাজ শুরু করা হয়। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে ১৫ বান্ডিল টিন ও ৩০ বস্তা শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২০টি মাটির চুলা ও চারটি টিউবওয়েল মেরামত করে দেওয়া হচ্ছে। তাদের ঘরবাড়িগুলো মেরামত করতে যা কিছু লাগবে, তা আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বহন করব।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

রংপুরে হিন্দুপল্লীতে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫

আপডেট সময় ০৬:৪৩:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

 

রংপুরের গঙ্গাচড়া ‍উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের একটি হিন্দুপল্লীতে হামলা ও বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) শরীফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান।

এর আগে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পার্শ্ববর্তী নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় যৌথবাহিনী অভিযানে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন_মো. ইয়াছিন আলী (২৫), স্বাধীন মিয়া (২৮), আশরাফুল ইসলাম (২৮), এস এম আতিকুর রহমান খান (২৮) ও সাদ্দাম হোসেন সেলিম (২২)। তারা ঘটনাস্থলের পাশের মাগুরা ইউনিয়নের বাসিন্দা।

এর আগে, মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে শ্রী রবীন্দ্রনাথ রায় (৫৫) নামে ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১০০০ থেকে ১২০০ জনের বিরুদ্ধে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা করে। এরপর যৌথ বাহিনী অভিযানে রাতভর তল্লাশি চালিয়ে ভিডিও ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করে ঘটনাস্থানের আশপাশের এলাকার থেকে ওই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।

এদিকে বুধবার দুপুরে আসামিদের রংপুর সদর কোর্টে হাজির করা হলে আদালত তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। রংপুর সদর কোর্ট ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রংপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) শরীফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান জানান, ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হিন্দুপল্লীতে হামলার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। সেই মামলার প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে গত শনিবার (২৬ জুলাই) রঞ্জন কুমার রায় নামে এক কিশোরকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় পাশের উপজেলার এলাকার লোকজন এসে আলদাতপুর ছয়আনি বালাপাড়া হিন্দুপল্লীতে ওই কিশোরের বাড়ি মনে করে অন্য আরেকজনের বাড়িতে ভাঙচুর চালান। পর দিন রোববার আরেক দফা হিন্দুপল্লীতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।

এতে ১৯টির মতো পরিবারের ঘরবাড়ি তছনছ হয়। আতঙ্কে অনেক পরিবার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা। হামলা ঠেকাতে গিয়ে এক পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে সেনাবাহিনী ও পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়।

এদিকে আটক রঞ্জন কুমার রায়কে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার (২৭ জুলাই) আদালতের মাধ্যমে কিশোর পুনর্বাসনকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তবে সোমবার (২৮ জুলাই) বিকেল থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় স্বস্তি ফিরতে শুরু করে হিন্দুপল্লীতে। ভয়ভীতি ও হামলার আতঙ্ক কেটে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো বাড়িতে ফিরে আসেন।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) উপজেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের বাড়িঘর মেরামত করার কাজ শুরু করা হয়। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে ১৫ বান্ডিল টিন ও ৩০ বস্তা শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২০টি মাটির চুলা ও চারটি টিউবওয়েল মেরামত করে দেওয়া হচ্ছে। তাদের ঘরবাড়িগুলো মেরামত করতে যা কিছু লাগবে, তা আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বহন করব।