শেখ হাসিনার ‘গুলি করার নির্দেশ’ সংক্রান্ত অডিও ফাঁস: প্রতিবেদন বিবিসির

- আপডেট সময় ১১:৫৬:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
- / 5
গত বছরের কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরাপত্তা বাহিনীকে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি অডিও রেকর্ডিংয়ে এমন তথ্য উঠে এসেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে তারা দাবি করেছে অডিওর কণ্ঠস্বর যাচাই করে তা শেখ হাসিনার বলেই নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বিবিসির মতে, ২০২৩ সালের ১৮ জুলাই প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে এক অজ্ঞাত উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলছিলেন। সেই আলাপেই শেখ হাসিনা ‘প্রয়োজনে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার’ করার নির্দেশ দেন এবং বলেন ‘যেখানে পাবে, গুলি করো’।
অডিও রেকর্ডিংটি বিশ্লেষণ করেছে ব্রিটেনভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা ইয়ারশট, যারা মানবাধিকার ও পরিবেশ বিষয়ক অডিও বিশ্লেষণে বিশেষজ্ঞ। তারা জানিয়েছে, রেকর্ডিংটি স্পিকারে চালানো একটি ফোনকল থেকে ধারণ করা হয়েছে, যেখানে ব্যাকগ্রাউন্ড নোইজ ও টেলিফোনিক ফ্রিকোয়েন্সি স্পষ্ট ছিল।
ইয়ারশটের ফরেনসিক বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, রেকর্ডিংজুড়ে ‘ইলেকট্রিক নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সি’ (ENF) শনাক্ত করা গেছে, যা অডিওর আসলত্ব প্রমাণ করে। তারা আরও জানিয়েছেন, রেকর্ডিংয়ে কণ্ঠস্বরের ছন্দ, শ্বাসপ্রশ্বাসের শব্দ ও নয়েজের ধারাবাহিকতা বিশ্লেষণ করে কোনো কৃত্রিম সম্পাদনার প্রমাণ মেলেনি।
বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগও বিবিসিকে জানিয়েছে, অডিওর কণ্ঠস্বর শেখ হাসিনার সঙ্গে মিলে গেছে বলে তারা নিশ্চিত হয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান বলেন, “এই রেকর্ডিংগুলো শেখ হাসিনার ভূমিকা প্রমাণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তা নির্ভরযোগ্যভাবে যাচাই করা গেছে।” তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (ICT) চলমান মামলায় পরামর্শকের দায়িত্ব পালন করছেন।
তবে আওয়ামী লীগের একজন মুখপাত্র বলেন, “বিবিসির দাবি অনুযায়ী টেপ রেকর্ডিংটি সত্য কিনা, তা আমরা নিশ্চিত নই।”
এই অডিও ফাঁসের পর বিষয়টি দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত এই অভিযোগের সত্যতা নির্ধারণে ভবিষ্যতে আরও তদন্ত প্রয়োজন হবে বলেও ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।