ঢাকা ১২:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নিরসনে আলোচনা ও কূটনৈতিক সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ: ইরানের প্রেসিডেন্ট

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:৪৩:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
  • / 8

ছবি সংগৃহীত

 

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নিরসনে আলোচনা ও কূটনৈতিক সংলাপকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। তবে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষাপটে তিনি এই আলোচনায় আস্থার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।

ডানপন্থী মার্কিন পডকাস্টার টাকার কার্লসনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আলোচনা করলেই সহজেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিরোধের সমাধান সম্ভব। তবে এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমরা কীভাবে আবার বিশ্বাস করব যে আলোচনার মাঝপথে ইসরায়েলকে আবার আমাদের ওপর হামলার সুযোগ দেওয়া হবে না?’

পেজেশকিয়ানের এই সাক্ষাৎকারটি সম্প্রচার হয় গত সোমবার। এর আগে গত ১৩ জুন ইসরায়েলের নজিরবিহীন বোমা হামলায় ইরানের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীরা নিহত হন। এই হামলার মাত্র দুই দিন পর ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পরমাণুবিষয়ক আলোচনা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত হয়ে যায়। এর এক সপ্তাহ পর, ২১ জুন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ফর্দো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়।

ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, চলমান এই সংঘাতে ১২ দিনে নিহত হয়েছেন অন্তত ১ হাজার ৬০ জন।

আলোচনার ভাঙনের জন্য ইসরায়েলকেই দায়ী করে পেজেশকিয়ান বলেন, ‘ইসরায়েল আমাদের বিশ্বাস ভেঙে দিয়েছে। তারা আলোচনার সময়েই হামলা চালিয়েছে।’ তিনি আরও দাবি করেন, ১৩ জুনের হামলায় তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। তাঁর ভাষায়, ‘হ্যাঁ, তারা চেষ্টা করেছে। আমি সেদিন এক বৈঠকে ছিলাম, সেই এলাকাতেই তারা বোমা ফেলতে চেয়েছিল।’

তাঁর ওপর হামলার পেছনে যুক্তরাষ্ট্র নয়, বরং ইসরায়েলেরই হাত রয়েছে বলে দাবি করেন ইরানের প্রেসিডেন্ট।

এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা থেকে ইসরায়েল এখনো পুরোপুরি সরে আসেনি। যদিও খবর রয়েছে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ নিয়ে আপত্তি তুলেছেন।

গত ২৪ জুন থেকে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে। তবে সাক্ষাৎকারে পেজেশকিয়ান অভিযোগ করেন, নেতানিয়াহু মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চান। তিনি ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান, যেন ইসরায়েলের সঙ্গে মিলে ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে যুদ্ধে জড়ানো না হয়।

পেজেশকিয়ান বিশ্বাস করেন, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং ইসরায়েলকে নিয়ন্ত্রণে রাখার মতো শক্তি ট্রাম্পের রয়েছে। অন্যদিকে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি নেতানিয়াহুর সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করবেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে ‘বড় সফলতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নিরসনে আলোচনা ও কূটনৈতিক সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ: ইরানের প্রেসিডেন্ট

আপডেট সময় ১২:৪৩:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫

 

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নিরসনে আলোচনা ও কূটনৈতিক সংলাপকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। তবে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষাপটে তিনি এই আলোচনায় আস্থার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।

ডানপন্থী মার্কিন পডকাস্টার টাকার কার্লসনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আলোচনা করলেই সহজেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিরোধের সমাধান সম্ভব। তবে এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমরা কীভাবে আবার বিশ্বাস করব যে আলোচনার মাঝপথে ইসরায়েলকে আবার আমাদের ওপর হামলার সুযোগ দেওয়া হবে না?’

পেজেশকিয়ানের এই সাক্ষাৎকারটি সম্প্রচার হয় গত সোমবার। এর আগে গত ১৩ জুন ইসরায়েলের নজিরবিহীন বোমা হামলায় ইরানের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীরা নিহত হন। এই হামলার মাত্র দুই দিন পর ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পরমাণুবিষয়ক আলোচনা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত হয়ে যায়। এর এক সপ্তাহ পর, ২১ জুন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ফর্দো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়।

ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, চলমান এই সংঘাতে ১২ দিনে নিহত হয়েছেন অন্তত ১ হাজার ৬০ জন।

আলোচনার ভাঙনের জন্য ইসরায়েলকেই দায়ী করে পেজেশকিয়ান বলেন, ‘ইসরায়েল আমাদের বিশ্বাস ভেঙে দিয়েছে। তারা আলোচনার সময়েই হামলা চালিয়েছে।’ তিনি আরও দাবি করেন, ১৩ জুনের হামলায় তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। তাঁর ভাষায়, ‘হ্যাঁ, তারা চেষ্টা করেছে। আমি সেদিন এক বৈঠকে ছিলাম, সেই এলাকাতেই তারা বোমা ফেলতে চেয়েছিল।’

তাঁর ওপর হামলার পেছনে যুক্তরাষ্ট্র নয়, বরং ইসরায়েলেরই হাত রয়েছে বলে দাবি করেন ইরানের প্রেসিডেন্ট।

এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা থেকে ইসরায়েল এখনো পুরোপুরি সরে আসেনি। যদিও খবর রয়েছে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ নিয়ে আপত্তি তুলেছেন।

গত ২৪ জুন থেকে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে। তবে সাক্ষাৎকারে পেজেশকিয়ান অভিযোগ করেন, নেতানিয়াহু মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চান। তিনি ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান, যেন ইসরায়েলের সঙ্গে মিলে ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে যুদ্ধে জড়ানো না হয়।

পেজেশকিয়ান বিশ্বাস করেন, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং ইসরায়েলকে নিয়ন্ত্রণে রাখার মতো শক্তি ট্রাম্পের রয়েছে। অন্যদিকে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি নেতানিয়াহুর সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করবেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে ‘বড় সফলতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।