গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে প্রাণ হারালেন অন্তত ৮২ ফিলিস্তিনি

- আপডেট সময় ১০:৪২:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫
- / 10
কাতারের মধ্যস্থতায় একদিকে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আলোচনা শুরু হয়েছে, অন্যদিকে গাজা উপত্যকায় অব্যাহত রয়েছে ইসরায়েলি সামরিক অভিযান ও বোমাবর্ষণ। এই হামলায় নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৮২ জন ফিলিস্তিনি।
রবিবার (৬ জুলাই) কেবল গাজা শহরেই নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩৯ জন।
সেখানে শেখ রাদওয়ান পাড়ায় মধ্যরাতে চালানো এক হামলায় বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন বলে জানা গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া মাহমুদ আল-শেখ সালামা বলেন, ‘‘রাত প্রায় ২টার সময় আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ একটি প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শুনি, কিছুক্ষণ পর আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটে। আমরা ছুটে যাই এবং দেখি চারপাশে ধ্বংসস্তূপে মানুষ আটকা পড়েছে। চারটি পরিবারের অনেকেই সেখানে আটকে আছেন।’’
গাজার বিভিন্ন অংশে ধারাবাহিকভাবে বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে আবাসিক ভবন, রাস্তাঘাটসহ নানা স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। আহত ও নিহতের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।
এদিকে হামাসের মুখপাত্র জানিয়েছেন, কাতারের উদ্যোগে যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য যে আলোচনা শুরু হয়েছে, তাতে তারা ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে অংশ নিচ্ছে। তবে হামলা বন্ধ না হলে আলোচনা অর্থহীন হয়ে যাবে বলে সতর্ক করেছে গাজার শাসকগোষ্ঠী।
গাজায় হাসপাতালগুলোতেও চলছে চরম সংকট। আহতদের সেবা দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও জ্বালানি ঘাটতির কারণে অনেকেই ঠিকমতো চিকিৎসা পাচ্ছেন না। ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকা মানুষদের উদ্ধারে কাজ করছে উদ্ধারকারী দল, তবে নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকির কারণে ত্রাণকর্মীরাও প্রায়ই বাধার মুখে পড়ছেন।
ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা হামাসের সামরিক স্থাপনা ও যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। কিন্তু ফিলিস্তিনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বেসামরিক জনগণই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, দিন-রাতের কোনো নিরাপত্তা নেই। প্রতিনিয়ত আকাশে যুদ্ধবিমানের গর্জন এবং বিস্ফোরণের শব্দ তাদের আতঙ্কিত করে রাখছে।
এ পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শিশুরা ভয়ে ঘর ছেড়ে বেরোতে পারছে না, স্কুল-কলেজ বন্ধ, ব্যবসা-বাণিজ্য থমকে গেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যে হামলার তীব্রতা বাড়তে থাকলে এ অঞ্চলের মানবিক বিপর্যয় আরও গভীর হতে পারে।