থাইল্যান্ডে বরখাস্তের পর প্রধানমন্ত্রী থেকে সংস্কৃতিমন্ত্রী হলেন পেতংতার্ন

- আপডেট সময় ০৬:৪০:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫
- / 2
থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে আবারও চমক। প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে বরখাস্তের কয়েকদিনের মধ্যেই নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছে, যেখানে বহিষ্কৃত প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সংস্কৃতিমন্ত্রী হিসেবে।
এএফপির খবরে বলা হয়েছে, কম্বোডিয়ার এক সিনিয়র নেতাকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের অভিযোগে গত মঙ্গলবার পেতংতার্নকে হঠাৎই বরখাস্ত করে সাংবিধানিক আদালত। ওইদিনই থাই রাজা মাহা ভাজিরালংকর্ণ ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুরিয়া জুংরুংরুয়াংকিতকে নিয়োগ দেন এবং নতুন মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেন।
এরপর বৃহস্পতিবার রাজধানী ব্যাংককের আমপোর্নসান থ্রোন হলে রাজা ও রানির উপস্থিতিতে নতুন মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠিত হয়। শপথ নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নও, এবার সংস্কৃতিমন্ত্রীর দায়িত্বে।
নতুন মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছেন ফুমথাম ওয়েচায়াচাই, যিনি পেতংতার্নের বাবার দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। তিনি নতুন সরকারে উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।
পেতংতার্নের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছিল মূলত কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে উত্তেজনার কারণে। গত মে মাসে সীমান্তে সংঘর্ষে একজন কম্বোডিয়ান সেনা নিহত হলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হয়। এরই মধ্যে পেতংতার্নের একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়, যেখানে তিনি থাইল্যান্ডের এক সেনা কর্মকর্তার সমালোচনা করেন এবং হুন সেনকে ‘আঙ্কেল’ বলে সম্বোধন করে অত্যধিক নমনীয়তা দেখান।
ফোনালাপ ফাঁসের পরপরই তার পদত্যাগের দাবিতে রাজপথে নেমে আসে সাধারণ মানুষ। সাংবিধানিক আদালতে দায়ের হয় পিটিশন। আদালতের সাত-দুই ভোটে পেতংতার্নকে বরখাস্তের রায় দেওয়া হয় এবং তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। এসময়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন সুরিয়া জুংরুংরুয়াংকিত।
থাইল্যান্ডে সেনাবাহিনীর সমালোচনার ক্ষেত্রে রীতিমতো শূন্য সহনশীলতা রয়েছে। ফলে ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর পেতংতার্ন প্রকাশ্যে দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের আগস্টে প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন অপসারিত হলে থাই পার্লামেন্ট পেতংতার্নকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করেছিল। মাত্র ৩৭ বছর বয়সে দেশের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি।
পেতংতার্নের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় ২০২১ সালে ফিউ থাই পার্টির উপদেষ্টা কমিটির প্রধান হিসেবে। ২০২৩ সালের নির্বাচনের আগে দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দিয়ে ভোটের ময়দানে নেমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। তিনি থাইল্যান্ডের প্রভাবশালী থাকসিন পরিবারের তৃতীয় সদস্য, যিনি দেশের শীর্ষ পদে আসীন হয়েছেন।