ফোনালাপ বিতর্কে সাময়িক বরখাস্ত হলেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী

- আপডেট সময় ০৫:০৪:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫
- / 1
থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। কম্বোডিয়ার সাবেক নেতা হুন সেনের সঙ্গে তার এক ফোনালাপ ফাঁসের পর তাকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে এবং আদালতে আবেদন দায়ের হয়।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফাঁস হওয়া অডিওতে পেতংতার্ন হুন সেনকে ‘আঙ্কেল’ বলে সম্বোধন করেন এবং এক উচ্চপদস্থ থাই সামরিক কর্মকর্তার সমালোচনা করেন। এতে জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয় এবং তার অপসারণের দাবি তীব্র হয়।
এরই প্রেক্ষিতে সাংবিধানিক আদালত ৭-২ ভোটে তাকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত দেয়। তবে তাকে ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে তার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করার জন্য। এই সময়ে ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুনগ্রুনগ্রুয়াংকিত ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন।
যদি শেষ পর্যন্ত তিনি অপসারিত হন, তাহলে সিনাওয়াত্রা পরিবারের তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পূর্ণ মেয়াদ শেষ না করেই তাকে বিদায় নিতে হবে। উল্লেখ্য, গত দুই দশক ধরে থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে সিনাওয়াত্রা পরিবার প্রভাবশালী ভূমিকা রাখছে।
পেতংতার্নের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার এরই মধ্যে টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। মাত্র দুই সপ্তাহ আগে তাদের এক গুরুত্বপূর্ণ রক্ষণশীল জোটসঙ্গী সরকার থেকে সরে দাঁড়ায়।
ফোনালাপ কেলেঙ্কারির পর তার জনপ্রিয়তাও হু হু করে কমে গেছে। মার্চে তার জনপ্রিয়তা যেখানে ৩০.৯ শতাংশে ছিল, চলতি সপ্তাহে তা নেমে এসেছে মাত্র ৯.২ শতাংশে।
এ ঘটনা নিয়ে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, এটি সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার কৌশলের অংশ ছিল। তবে রক্ষণশীলদের অভিযোগ, তিনি কম্বোডিয়ার প্রতি নতি স্বীকার করেছেন এবং এতে থাইল্যান্ডের সামরিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
এদিকে, পেতংতার্নের বাবা এবং দেশটির অন্যতম বিতর্কিত রাজনৈতিক নেতা থাকসিন সিনাওয়াত্রাও নতুন করে বিপাকে পড়েছেন। নয় বছর আগে দক্ষিণ কোরিয়ার এক সংবাদমাধ্যমে রাজপরিবার নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার কারণে তার বিরুদ্ধে লেসে মাজেস্তে আইনে বিচার শুরু হয়েছে।
২০২৩ সালে ১৫ বছরের নির্বাসন শেষে থাকসিন দেশে ফেরেন। এই প্রত্যাবর্তন ছিল ফেউ থাই পার্টি এবং সেনাবাহিনীসহ রক্ষণশীল শিবিরের সঙ্গে এক ধরনের রাজনৈতিক সমঝোতার অংশ, যা সিনাওয়াত্রা পরিবারকে আগেও দুইবার ক্ষমতা হারাতে বাধ্য করেছিল।
এখন পেতংতার্নের ভাগ্য আদালতের চূড়ান্ত রায়ের উপর নির্ভর করছে। যদি তিনি ক্ষমতা হারান, এটি হবে গত এক বছরে ফেউ থাই পার্টির দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রীর অপসারণের ঘটনা।