আবু সাঈদ হত্যা: মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল

- আপডেট সময় ১২:০২:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
- / 5
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করা হয়েছে। সোমবার (৩০ জুন) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে এ অভিযোগপত্র জমা দেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। তিনি সাংবাদিকদের জানান, এই অভিযোগ ট্রাইব্যুনাল-২ এ উপস্থাপন করা হয়েছে এবং আজই এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
প্রসিকিউটর তামিম আরও জানান, রোববার ফরমাল চার্জ দাখিলের কথা থাকলেও চিফ প্রসিকিউটর ব্যস্ত থাকায় তা জমা দেওয়া সম্ভব হয়নি।
এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তদন্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনে জমা দেয়। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, গত ২৪ জুন চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে এ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
মিজানুল ইসলাম জানান, আবু সাঈদ ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ। তাকে গত বছরের ১৬ জুলাই দুপুর ২টা ১৭ মিনিটে গুলি করে হত্যা করা হয়। নিরস্ত্র অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা আবু সাঈদকে দুজন মিলে গুলি করেন।
মামলার আসামিদের মধ্যে আছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক এএসআই আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ইমরান চৌধুরী। বাকি আসামিদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ট্রাইব্যুনাল-১ চারজনকে হাজিরের নির্দেশ দেন। এর মধ্যে এএসআই আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে ১৮ জুন এবং শরিফুল ইসলাম ও ইমরান চৌধুরী আকাশকে ১৯ জুন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যে ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আবু সাঈদ গুলিবিদ্ধ হন। ২৫ বছর বয়সী এই শিক্ষার্থী ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের ছাত্র এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক।
নিরস্ত্র আবু সাঈদের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় এবং আন্দোলন আরও বেগবান হয়। সেই ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান।