লবণাক্ত জমিতে আনারস চাষে অভূতপূর্ব সাফল্য কৃষক সুলতানের

- আপডেট সময় ০২:৪২:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
- / 0
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার দক্ষিণ আদমপুর গ্রামের কৃষক সুলতান সরদার লবণাক্ত পতিত জমিকে সফলভাবে কাজে লাগিয়ে একযোগে আম ও আনারস চাষে পেয়েছেন অভাবনীয় সাফল্য। বাগানের নিচে বাণিজ্যিকভাবে আনারস চাষ করে লাভবান হচ্ছেন তিনি, যা এখন এলাকার অন্য কৃষকদের জন্য অনুকরণীয় উদাহরণ হয়ে উঠেছে। সুলতানের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে কৃষি বিভাগও।
চার বছর আগে বাড়ির পাশের ৩ একর জমিতে আমবাগান গড়ে তোলেন সুলতান। এরপর দুই বছর আগে লেবুখালীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে আমের চারা আনতে গিয়ে সেখানে আনারস বাগান দেখে অনুপ্রাণিত হন। ফিরে এসে জলডুবি জাতের দুই হাজার আনারস চারা এনে আমগাছের নিচেই রোপণ করেন।
সুলতানের নিবিড় পরিচর্যায় রোপণের পরের বছরই গাছে ফল আসে। প্রথম বছরেই তিনি প্রায় ৫০ হাজার টাকার আনারস বিক্রি করেন। সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে গাছ থেকেই কলমের মাধ্যমে নতুন চারা তৈরি করে বাগান বিস্তৃত করেন। বর্তমানে তার বাগানে প্রায় পাঁচ হাজার আনারস গাছ রয়েছে।
তিনি বলেন, “জমিতে লবণাক্ততা থাকলেও ফলন ভালো হয়েছে। আশা করছি, এ বছর লক্ষাধিক টাকার আনারস বিক্রি করতে পারব। এছাড়া চারা বিক্রি করেও বাড়তি আয় হচ্ছে। আমার দেখে এলাকার অনেকেই এখন আনারস চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।”
যেখানে আনারস চাষ সাধারণত পাহাড়ি এলাকায় হয়ে থাকে, সেখানে সমতলের লবণাক্ত জমিতেও এটি সফলভাবে চাষ করা সম্ভব—এই বাস্তব উদাহরণ এখন সুলতানের বাগান। অনেক কৃষক এখন তাঁর বাগান ঘুরে দেখছেন, চারা সংগ্রহ করছেন এবং নিজস্ব জমিতে আনারস চাষ শুরু করছেন।
দশমিনা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাফর আহমেদ বলেন, “আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং জমিতে পানি না জমলে সমতল এলাকায়ও আনারস চাষ সম্ভব। কৃষি বিভাগ নতুন ফসল চাষে সবসময় কৃষকদের উৎসাহ ও সহযোগিতা দিয়ে থাকে। সুলতান সরদারের সাফল্য অন্যদের অনুপ্রেরণা দিচ্ছে।”
কৃষি বিভাগ মনে করছে, পতিত জমিতে সাথী ফসল হিসেবে এভাবে চাষাবাদ চালু হলে কৃষকের আয় যেমন বাড়বে, তেমনি দেশের অর্থনীতিতেও আসবে ইতিবাচক পরিবর্তন।