গাওকাও পরীক্ষায় চিটিং ঠেকাতে চীনে চ্যাটবট ফিচার বন্ধ, নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা

- আপডেট সময় ০১:৫১:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫
- / 31
চীনের অন্যতম কঠিন ও প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষা গাওকাও শুরু হয়েছে ১৩.৩ মিলিয়ন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে। এই পরীক্ষা কলেজে ভর্তির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, আর চিটিং বা অসাধু উপায় ঠেকাতে এবার দেশজুড়ে নেওয়া হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
গত ৭ থেকে ১০ জুন পর্যন্ত চলা গাওকাও পরীক্ষায় চীনা সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ ছিল—বড় বড় এআই কোম্পানিগুলোর চ্যাটবট ফিচার সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া। আলিবাবা, টেনসেন্ট, বাইটড্যান্সের মতো কোম্পানির চ্যাটবটগুলোতে ছবি বিশ্লেষণ ও সরাসরি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সুবিধা ছিল, যা পরীক্ষার সময় অচল করে দেওয়া হয়।
চ্যাটবট ব্যবহারকারীদের স্ক্রিনে তখন লেখা ভেসে উঠছিল, “পরীক্ষার ন্যায্যতা রক্ষায় ফিচার সাময়িকভাবে বন্ধ।”
শুধু ডিজিটাল নিরাপত্তা নয়, পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতেও নেওয়া হয় কঠোর ব্যবস্থা। পরীক্ষার্থীদের স্মার্টফোন, স্মার্টওয়াচ, ল্যাপটপসহ সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে রাখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়। পাশাপাশি মোবাইল সিগনাল ব্লক করতে ব্যবহার করা হয়েছে সিগনাল জ্যামার যুক্ত গাড়ি।
এছাড়াও, শিক্ষার্থীদের আচরণ পর্যবেক্ষণ করতে ব্যবহার করা হয়েছে উন্নত নজরদারিমূলক এআই প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে পরীক্ষাকেন্দ্রে সন্দেহজনক আচরণ শনাক্ত করা হয়েছে।
চীনা সরকার জানিয়েছে, গাওকাওয়ের মতো উচ্চস্তরের পরীক্ষায় নকল বা প্রযুক্তির অপব্যবহার ঠেকাতে পরিষ্কার ও নিরপেক্ষ পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। আর তাই এবারের মতো এমন কড়া পদক্ষেপে কোনো আপস করা হয়নি।
বিশ্লেষকদের মতে, প্রযুক্তির অপব্যবহার যেভাবে বেড়েছে, তাতে ভবিষ্যতের বড় পরীক্ষা ও প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রেও এমন এআই নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারির ধারা আরও বিস্তৃত হবে।
চীনে প্রতি বছর গাওকাও পরীক্ষা জাতীয়ভাবে গুরুত্ব পায়, কারণ এটি শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির দরজা খুলে দেয় না বরং শিক্ষার্থীদের জীবনের গতি নির্ধারণ করে দেয়। তাই এর প্রতি সরকারের কঠোর দৃষ্টি নতুন কিছু নয়, তবে এবারের ব্যবস্থা অনেক বেশি দৃঢ় ও প্রযুক্তিনির্ভর ছিল।