০৩:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
‘জুলাই যোদ্ধা’ শনাক্তে গোয়েন্দা তদন্ত শুরু কুয়াকাটার হোটেলে ঝুলন্ত মরদেহ, স্বামী পরিচয়ে থাকা যুবকের খোঁজ নেই যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকা বৃদ্ধি: যোগ হচ্ছে ফিলিস্তিনসহ আরও ছয় দেশ ‘২৫ তারিখ ইনশা আল্লাহ দেশে ফিরছি’: তারেক রহমান হাদিকে গুলি: প্রধান আসামি ফয়সালের বাবা–মা গ্রেপ্তার, অস্ত্র উদ্ধার সেই মুসলিমকে ‘জাতীয় হিরো’ আখ্যা দিয়ে যা বললেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে সন্ধ্যায় ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা জনসমাগমের মধ্যে দক্ষিণখানে যুবলীগ নেতা খুন জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা গাজায় যুদ্ধবিরতি মানতে ইসরায়েলকে হোয়াইট হাউসের সতর্কবার্তা, নেতানিয়াহুকে সরাসরি বার্তা

হঠাৎ পানি বৃদ্ধিতে চলনবিলে তলিয়ে গেলো শত কৃষকের সোনালি স্বপ্ন

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:৫৬:৪২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫
  • / 44

ছবি সংগৃহীত

 

চলনবিল অঞ্চলে হঠাৎ পানি বৃদ্ধিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের স্বপ্নের সোনালি ধান। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে নদ-নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, উল্লাপাড়া ও শাহজাদপুর উপজেলার শত শত হেক্টর জমির কাঁচা-পাকা ধান পানির নিচে চলে গেছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

কৃষকরা জানান, অসময়ে পানি জমে যাওয়ায় একদিকে যেমন ধান নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে, তেমনি শ্রমিক সংকট ও অতিরিক্ত মজুরির কারণে ধান কাটাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় লোকসানের আশঙ্কায় প্রহর গুনছেন তারা। তবে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে প্রণোদনার আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

তাড়াশ উপজেলার হামকুড়িয়া গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন জানান, সরিষার পরে ব্রি-২৯ জাতের ধান রোপণ করায় ফসল পাকতে একটু সময় লেগেছে। এরই মাঝে টানা বৃষ্টি ও আগাম বন্যায় তার জমির অধিকাংশ ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘১০ বিঘার মধ্যে মাত্র ৫ বিঘার ধান কাটতে পেরেছি। বাকি জমির ধান এখনো পানির নিচে। বিঘা প্রতি সাত-আট হাজার টাকা মজুরি দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।’

একই হতাশা প্রকাশ করেছেন কৃষক আশরাফ। তিনি বলেন, ‘ঋণ করে ধান চাষ করেছিলাম। কিন্তু ফসল উঠানোর আগেই সব পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন কাটাও যাচ্ছে না। কীভাবে পরিবার চালাবো, বুঝতে পারছি না।’

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, চলনবিল অঞ্চলে প্রায় ৯৩ ভাগ বোরো ধান ইতোমধ্যে কাটা হয়ে গেছে। তবে হঠাৎ পানি প্রবেশ করায় বিলের নিচু এলাকাগুলোতে কিছু নাবি জাতের ধান কাটতে সমস্যা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘আশা করছি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অবশিষ্ট ধানও কাটা শেষ হবে।’

এদিকে কৃষকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুধু তাড়াশ ও শাহজাদপুর এলাকায় প্রায় ১১৩ হেক্টর জমির ধান পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নাটোরের সিংড়া ও গুরুদাসপুর এলাকায়ও ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।

চলনবিল অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই হঠাৎ আঘাতে কৃষকের কষ্টের ফসল বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এখন কৃষকের একমাত্র ভরসা সরকারি সহায়তা ও সময়মতো প্রণোদনার ব্যবস্থা।

নিউজটি শেয়ার করুন

হঠাৎ পানি বৃদ্ধিতে চলনবিলে তলিয়ে গেলো শত কৃষকের সোনালি স্বপ্ন

আপডেট সময় ১১:৫৬:৪২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

 

চলনবিল অঞ্চলে হঠাৎ পানি বৃদ্ধিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের স্বপ্নের সোনালি ধান। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে নদ-নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, উল্লাপাড়া ও শাহজাদপুর উপজেলার শত শত হেক্টর জমির কাঁচা-পাকা ধান পানির নিচে চলে গেছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

কৃষকরা জানান, অসময়ে পানি জমে যাওয়ায় একদিকে যেমন ধান নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে, তেমনি শ্রমিক সংকট ও অতিরিক্ত মজুরির কারণে ধান কাটাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় লোকসানের আশঙ্কায় প্রহর গুনছেন তারা। তবে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে প্রণোদনার আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

তাড়াশ উপজেলার হামকুড়িয়া গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন জানান, সরিষার পরে ব্রি-২৯ জাতের ধান রোপণ করায় ফসল পাকতে একটু সময় লেগেছে। এরই মাঝে টানা বৃষ্টি ও আগাম বন্যায় তার জমির অধিকাংশ ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘১০ বিঘার মধ্যে মাত্র ৫ বিঘার ধান কাটতে পেরেছি। বাকি জমির ধান এখনো পানির নিচে। বিঘা প্রতি সাত-আট হাজার টাকা মজুরি দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।’

একই হতাশা প্রকাশ করেছেন কৃষক আশরাফ। তিনি বলেন, ‘ঋণ করে ধান চাষ করেছিলাম। কিন্তু ফসল উঠানোর আগেই সব পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন কাটাও যাচ্ছে না। কীভাবে পরিবার চালাবো, বুঝতে পারছি না।’

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, চলনবিল অঞ্চলে প্রায় ৯৩ ভাগ বোরো ধান ইতোমধ্যে কাটা হয়ে গেছে। তবে হঠাৎ পানি প্রবেশ করায় বিলের নিচু এলাকাগুলোতে কিছু নাবি জাতের ধান কাটতে সমস্যা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘আশা করছি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অবশিষ্ট ধানও কাটা শেষ হবে।’

এদিকে কৃষকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুধু তাড়াশ ও শাহজাদপুর এলাকায় প্রায় ১১৩ হেক্টর জমির ধান পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নাটোরের সিংড়া ও গুরুদাসপুর এলাকায়ও ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।

চলনবিল অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই হঠাৎ আঘাতে কৃষকের কষ্টের ফসল বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এখন কৃষকের একমাত্র ভরসা সরকারি সহায়তা ও সময়মতো প্রণোদনার ব্যবস্থা।