ঢাকা ০৮:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে ‘বাধা সৃষ্টি করছে’ সরকারের একটি অংশ: রিজভী অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত পরিবেশ উপেক্ষিত থাকলে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়: রিজওয়ানা হাসান রামগড়ে সীমান্তে ৫ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ শক্তিশালী মেঘমালায় উত্তাল বঙ্গোপসাগর, সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জাপানে ৫০ নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে ট্যাক্সিচালক গ্রেপ্তার, ৩০০০ ছবি-ভিডিও উদ্ধার সরকারি চাকরি আইন সংশোধনে বড় পদক্ষেপ, অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন গ্রাহক পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের দাম কমালো বিটিআরসি নিশি ইসলামের মামলায় অভিনেত্রী শাওনসহ ১২ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ছাড়লেন, কিশোরগঞ্জে ৩০ নেতাকর্মীর ছাত্রদলে যোগদান

ভৈরবে বাদাম চাষে বিপ্লব, লাভজনক ফসলের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:১৫:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
  • / 6

ছবি সংগৃহীত

 

ভৈরবে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাদাম চাষ। কম খরচ, কম পরিশ্রমে বেশি ফলন এবং বাজারে ভালো দামের কারণে কৃষকেরা দিনদিন ঝুঁকছেন এই লাভজনক ফসলটির দিকে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও কৃষকদের মতে, ভৈরবে উৎপাদিত বাদামের মান উন্নত হওয়ায় এর রয়েছে দেশব্যাপী ব্যাপক চাহিদা।

এক সময় বোরো ধান চাষে লোকসানে পড়া অনেক কৃষক এখন বাদাম চাষে ফিরছেন। কারণ ধান চাষে উৎপাদন খরচ তুলনামূলক বেশি, কিন্তু বাজারদর আশানুরূপ নয়। অপরদিকে বাদাম চাষে কম খরচে অধিক ফলন এবং ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। তাই কৃষকেরা এখন বাদাম চাষকে লাভের অন্যতম উৎস হিসেবে দেখছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চর এলাকার জমিগুলো মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর বেলে-দোআঁশ মাটির হওয়ায় বাদাম চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। চলতি বছর মানিকদি, মৌটুপী, মেন্দিপুর, আগানগর, শ্রীনগর ও বধুনগরসহ সাতটি ইউনিয়নে মোট ৪৫৫ হেক্টর জমিতে বাদামের আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগ বাদাম চাষে আগ্রহী কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করে যাচ্ছে।

মৌটুপী গ্রামের কৃষক নাজমুল মিয়া জানান, “প্রতি বিঘায় তিন থেকে চার হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু ছয় থেকে সাত মণ ফলন পেয়ে আমরা ১৯ থেকে ২২ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারি। বাদাম গাছ রান্নার কাজে জ্বালানি ও গরুর পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার হয়।”

গজারিয়া ইউনিয়নের মানিকদি গ্রামের দুলাল মিয়া বলেন, “আমি ৩ খানি জমিতে বাদাম চাষ করেছি। প্রতি খানি জমি থেকে ৫০০ কেজি বাদাম পেয়েছি। ধানের চেয়ে বাদামের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় এবং খরচ কম থাকায় লাভ বেশি।”

ভৈরবের বাদাম ব্যবসায়ী মুসলিম মিয়া জানান, এখানকার বাদামের মান ভালো হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মৌসুমে প্রতি মণ বাদাম ৩২০০ থেকে ৩৪০০ টাকায় বিক্রি হয়, আর অফ সিজনে তা ৪২০০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এ ছাড়া বাদাম প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে ১৫-২০টি, যেখানে নারী-পুরুষ মিলিয়ে কয়েকশ’ কর্মী কাজ করছেন। নারীরা দিনে ৮০০-৯০০ টাকা উপার্জন করে সংসার চালাতে বড় ভূমিকা রাখছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম বলেন, “কৃষকের আগ্রহ বাড়ায় আমরা উন্নত বীজ সরবরাহ, রোগবালাই নিয়ন্ত্রণ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে বাদাম চাষে সহায়তা করে যাচ্ছি।”

ভবিষ্যতে ভৈরবে বাদাম চাষ আরও বিস্তৃত হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ভৈরবে বাদাম চাষে বিপ্লব, লাভজনক ফসলের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা

আপডেট সময় ১১:১৫:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

 

ভৈরবে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাদাম চাষ। কম খরচ, কম পরিশ্রমে বেশি ফলন এবং বাজারে ভালো দামের কারণে কৃষকেরা দিনদিন ঝুঁকছেন এই লাভজনক ফসলটির দিকে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও কৃষকদের মতে, ভৈরবে উৎপাদিত বাদামের মান উন্নত হওয়ায় এর রয়েছে দেশব্যাপী ব্যাপক চাহিদা।

এক সময় বোরো ধান চাষে লোকসানে পড়া অনেক কৃষক এখন বাদাম চাষে ফিরছেন। কারণ ধান চাষে উৎপাদন খরচ তুলনামূলক বেশি, কিন্তু বাজারদর আশানুরূপ নয়। অপরদিকে বাদাম চাষে কম খরচে অধিক ফলন এবং ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। তাই কৃষকেরা এখন বাদাম চাষকে লাভের অন্যতম উৎস হিসেবে দেখছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চর এলাকার জমিগুলো মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর বেলে-দোআঁশ মাটির হওয়ায় বাদাম চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। চলতি বছর মানিকদি, মৌটুপী, মেন্দিপুর, আগানগর, শ্রীনগর ও বধুনগরসহ সাতটি ইউনিয়নে মোট ৪৫৫ হেক্টর জমিতে বাদামের আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগ বাদাম চাষে আগ্রহী কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করে যাচ্ছে।

মৌটুপী গ্রামের কৃষক নাজমুল মিয়া জানান, “প্রতি বিঘায় তিন থেকে চার হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু ছয় থেকে সাত মণ ফলন পেয়ে আমরা ১৯ থেকে ২২ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারি। বাদাম গাছ রান্নার কাজে জ্বালানি ও গরুর পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার হয়।”

গজারিয়া ইউনিয়নের মানিকদি গ্রামের দুলাল মিয়া বলেন, “আমি ৩ খানি জমিতে বাদাম চাষ করেছি। প্রতি খানি জমি থেকে ৫০০ কেজি বাদাম পেয়েছি। ধানের চেয়ে বাদামের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় এবং খরচ কম থাকায় লাভ বেশি।”

ভৈরবের বাদাম ব্যবসায়ী মুসলিম মিয়া জানান, এখানকার বাদামের মান ভালো হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মৌসুমে প্রতি মণ বাদাম ৩২০০ থেকে ৩৪০০ টাকায় বিক্রি হয়, আর অফ সিজনে তা ৪২০০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এ ছাড়া বাদাম প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে ১৫-২০টি, যেখানে নারী-পুরুষ মিলিয়ে কয়েকশ’ কর্মী কাজ করছেন। নারীরা দিনে ৮০০-৯০০ টাকা উপার্জন করে সংসার চালাতে বড় ভূমিকা রাখছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম বলেন, “কৃষকের আগ্রহ বাড়ায় আমরা উন্নত বীজ সরবরাহ, রোগবালাই নিয়ন্ত্রণ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে বাদাম চাষে সহায়তা করে যাচ্ছি।”

ভবিষ্যতে ভৈরবে বাদাম চাষ আরও বিস্তৃত হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।