পাকিস্তানে ভারতের হামলায় শতাধিক জঙ্গি নিহত হয়েছে: সর্বদলীয় বৈঠকে দাবি রাজনাথের

- আপডেট সময় ০৬:৪২:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫
- / 17
পাকিস্তানে চালানো ‘অপারেশন সিঁদুর’ সামরিক অভিযানে শতাধিক জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় দিল্লিতে আয়োজিত সর্বদলীয় বৈঠকে তিনি এ দাবি করেন।
রাজনাথ সিং জানান, অভিযান এখনো চলছে। ভারত যুদ্ধ চায় না, তবে যদি পাকিস্তান পাল্টা হামলার চেষ্টা করে, তাহলে জবাব দিতে ভারত প্রস্তুত রয়েছে। বৈঠকে বিরোধী নেতাদের সামনে পাকিস্তানে ধ্বংস করা সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
বৈঠকে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, “সরকার যা জানিয়েছে, আমরা তা শুনেছি। কিছু বিষয় গোপনীয়তার কারণে প্রকাশ করা হয়নি। তবে এই সংকটে আমরা সরকারের পাশে আছি।”
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাঠানো একটি বার্তা পড়ে শোনানো হয়। বার্তায় প্রধানমন্ত্রী কঠিন সময়ে জাতির ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকেই সর্বদলীয় বৈঠকের দাবি জানিয়ে আসছিল বিরোধীরা। তবে ওই সময় ডাকা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদি উপস্থিত না থেকে বিহার সফরে যান। এরপর থেকেই বিরোধী দলগুলো প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি উপস্থিতির দাবি জানিয়ে আসছিল।
তবে আজকের বৈঠকেও মোদি উপস্থিত ছিলেন না। বৈঠকে নেতৃত্ব দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ, সংসদীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু প্রমুখ।
বিরোধী দলের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডিএমকের টি আর বালু, আম আদমি পার্টির সঞ্জয় সিং, উদ্ধব সেনার সঞ্জয় রাউত এবং এনসিপির সুপ্রিয়া সুলে।
বৈঠক শেষে সংসদীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, “সব নেতাই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক ঐক্য বজায় রাখা জরুরি।”
তবে খাড়গে বৈঠকে আবারও প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “প্রথমবারের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রী আসেননি। উনি নিজেকে সংসদের ঊর্ধ্বে ভাবেন। আমরা পরে তাঁকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করব, যদিও এখন সমালোচনার সময় নয়।”
এদিকে সীমান্তবর্তী উত্তর ও পশ্চিম ভারতের ২৭টি বিমানবন্দরে শনিবার পর্যন্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এদিন ৪৩০টি ফ্লাইট বাতিল হয়, যার মধ্যে এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, স্পাইসজেটসহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার ফ্লাইট রয়েছে। এতে দিল্লি বিমানবন্দরে প্রচণ্ড চাপ পড়েছে। জম্মু-কাশ্মীর থেকে গুজরাট পর্যন্ত আকাশসীমা কার্যত বন্ধ বলে জানিয়েছে ফ্লাইটরাডার।
সাম্প্রতিক হামলার জবাবে নেওয়া এই সামরিক অভিযানে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে উপমহাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি।