ঢাকা ১১:৩১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার অস্ত্রবিরতির আলোচনা ইসরায়েলের হামলা ও অবরোধে গাজায় একদিনেই ৭১ জনের প্রাণহানি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হেফাজতের বৈঠক: নীতিগত আলোচনা আবহাওয়ার সতর্কতা: ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস আওয়ামী লীগের আমলে ব্যাংকের ৮০ শতাংশ অর্থ পাচার হয়ে গেছে অর্থ উপদেষ্টা রেলপথ গুলোকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে চায় সরকার আরো ১৪ রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলার আসামি ধরতে গিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের ওপর হামলা, এসআই গুরুতর আহত নোয়াখালীতে ৬ হাজার পিস ইয়াবাসহ ২ মাদক কারবারি আটক নিরাপরাধ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয় নিশ্চিত করতেই চার্জশীট দিতে দেরী হচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

শালবন বিহারে পাওয়া গেল প্রাচীন নিদর্শন, খননে মিলল ‘বালাগাজীর মুড়া

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৫:০৪:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
  • / 19

ছবি সংগৃহীত

 

প্রায় ১৩০০ বছরের পুরনো কুমিল্লার ঐতিহাসিক শালবন বিহারের কাছাকাছি লালমাই পাহাড়ে খুঁজে পাওয়া গেল আরও এক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। ধর্মপুর এলাকার চারাবাড়ি টিলায় মাটির নিচে আবিষ্কৃত এ প্রাচীন স্থাপনাটির নাম স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘বালাগাজীর মুড়া’। ইতোমধ্যে এখানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর খনন ও অনুসন্ধান কাজ শুরু করেছে।

প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব বিবেচনায় এ স্থানকে ১৯৪৫ সালের শিমলা গেজেটে সংরক্ষিত প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে এতদিন তা মাটির নিচেই চাপা পড়ে ছিল। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া খনন কাজের মাধ্যমে ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে প্রাচীন এক নির্মাণকাঠামো। এতে উঠে আসছে বড় ইটের প্রাচীর, মাটির পাত্রের ভাঙা টুকরো এবং একাধিক মাটির স্তর।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মোছা. নাহিদ সুলতানার তত্ত্বাবধানে খনন কার্যক্রম চলছে। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফিল্ড অফিসার মো. আবু সাইদ ইনাম তানভীরুল। এ দলে রয়েছেন আরও ছয়জন কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞ। কাজ চলবে আগামী জুন মাস পর্যন্ত।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের রতনপুর বাজার থেকে একটু দক্ষিণে ধর্মপুরের চারাবাড়ি এলাকায় প্রত্নতাত্ত্বিক খননকাজ চলছে। স্থানীয়রা জানায়, এখানকার টিলার উপরিভাগে বহু আগে থেকেই মাটির পাত্রের ভাঙা টুকরো দেখা যেত, সেখান থেকেই ‘চারা বাড়ি’ নামটির উৎপত্তি।

স্থানীয়দের মতে, খনন শেষে এটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হলে প্রত্ন পর্যটনে কুমিল্লায় নতুন মাত্রা যোগ হবে। সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা চাই এখানকার সব নিদর্শন সংরক্ষিত হোক এবং ইতিহাসের প্রকৃত চিত্র সামনে আসুক।”

ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবিরের মতে, এটি সম্ভবত সপ্তম শতাব্দীর পরবর্তী সময়ের কোনো বৌদ্ধ স্থাপনা। তিনি বলেন, “শালবন বিহার ও এই স্থাপনার ইটের মধ্যে মিল রয়েছে। এটি শালবন, আনন্দ বিহার কিংবা ভোজ বিহারের সমসাময়িক হতে পারে।”

তবে খনন না শেষ হওয়া পর্যন্ত স্থাপনার প্রকৃতি নিয়ে নিশ্চিত হতে নারাজ প্রত্নতত্ত্ববিদরা। ময়নামতি জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান মো. শাহীন আলম বলেন, “গবেষণা ছাড়া নির্দিষ্ট কিছু বলা যাচ্ছে না।”

প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে বালাগাজীর মুড়ার উন্মোচন কুমিল্লার ইতিহাসে নতুন আলো ফেলবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

শালবন বিহারে পাওয়া গেল প্রাচীন নিদর্শন, খননে মিলল ‘বালাগাজীর মুড়া

আপডেট সময় ০৫:০৪:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫

 

প্রায় ১৩০০ বছরের পুরনো কুমিল্লার ঐতিহাসিক শালবন বিহারের কাছাকাছি লালমাই পাহাড়ে খুঁজে পাওয়া গেল আরও এক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। ধর্মপুর এলাকার চারাবাড়ি টিলায় মাটির নিচে আবিষ্কৃত এ প্রাচীন স্থাপনাটির নাম স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘বালাগাজীর মুড়া’। ইতোমধ্যে এখানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর খনন ও অনুসন্ধান কাজ শুরু করেছে।

প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব বিবেচনায় এ স্থানকে ১৯৪৫ সালের শিমলা গেজেটে সংরক্ষিত প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে এতদিন তা মাটির নিচেই চাপা পড়ে ছিল। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া খনন কাজের মাধ্যমে ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে প্রাচীন এক নির্মাণকাঠামো। এতে উঠে আসছে বড় ইটের প্রাচীর, মাটির পাত্রের ভাঙা টুকরো এবং একাধিক মাটির স্তর।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মোছা. নাহিদ সুলতানার তত্ত্বাবধানে খনন কার্যক্রম চলছে। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফিল্ড অফিসার মো. আবু সাইদ ইনাম তানভীরুল। এ দলে রয়েছেন আরও ছয়জন কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞ। কাজ চলবে আগামী জুন মাস পর্যন্ত।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের রতনপুর বাজার থেকে একটু দক্ষিণে ধর্মপুরের চারাবাড়ি এলাকায় প্রত্নতাত্ত্বিক খননকাজ চলছে। স্থানীয়রা জানায়, এখানকার টিলার উপরিভাগে বহু আগে থেকেই মাটির পাত্রের ভাঙা টুকরো দেখা যেত, সেখান থেকেই ‘চারা বাড়ি’ নামটির উৎপত্তি।

স্থানীয়দের মতে, খনন শেষে এটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হলে প্রত্ন পর্যটনে কুমিল্লায় নতুন মাত্রা যোগ হবে। সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা চাই এখানকার সব নিদর্শন সংরক্ষিত হোক এবং ইতিহাসের প্রকৃত চিত্র সামনে আসুক।”

ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবিরের মতে, এটি সম্ভবত সপ্তম শতাব্দীর পরবর্তী সময়ের কোনো বৌদ্ধ স্থাপনা। তিনি বলেন, “শালবন বিহার ও এই স্থাপনার ইটের মধ্যে মিল রয়েছে। এটি শালবন, আনন্দ বিহার কিংবা ভোজ বিহারের সমসাময়িক হতে পারে।”

তবে খনন না শেষ হওয়া পর্যন্ত স্থাপনার প্রকৃতি নিয়ে নিশ্চিত হতে নারাজ প্রত্নতত্ত্ববিদরা। ময়নামতি জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান মো. শাহীন আলম বলেন, “গবেষণা ছাড়া নির্দিষ্ট কিছু বলা যাচ্ছে না।”

প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে বালাগাজীর মুড়ার উন্মোচন কুমিল্লার ইতিহাসে নতুন আলো ফেলবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।