ঢাকা ১১:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের ২ কিলোমিটার রক্ষা বাঁধ ভাঙনের ঝুঁকিতে

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:৪৭:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
  • / ১১ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

 

শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকার রক্ষা বাঁধের প্রায় ২ কিলোমিটার অংশ ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। নদীর গভীরতা বেড়ে যাওয়া ও তলদেশের মাটি সরে যাওয়ায় বাঁধটির স্থায়িত্ব মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বর্ষা মৌসুমের আগেই পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) আশঙ্কা করছে, নাওডোবা-পালেরচর সড়ক, মঙ্গল মাঝি-সাত্তার মাদবর বাজার এবং আশপাশের অন্তত চারটি গ্রামের প্রায় ৫৫০টি বসতবাড়ি নদীভাঙনের ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

গত বছর নভেম্বর মাসে জাজিরা প্রান্তের নাওডোবা জিরোপয়েন্ট এলাকায় রক্ষা বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার অংশ নদীতে বিলীন হয়। এরপর পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) যৌথভাবে জরিপ চালিয়ে দেখতে পায়, দুই কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে এক কিলোমিটার অংশে নদীর গভীরতা বিপজ্জনকভাবে বেড়ে গেছে এবং মাটি সরে যাচ্ছে। বাকি অংশেও নদী বাঁধের একেবারে সন্নিকটে চলে আসায় বড় ধরনের ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী সুমন চন্দ্র বনিক জানান, ইতোমধ্যে ভাঙনের মুখে পড়া ১০০ মিটার বাঁধ মেরামতে ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে জিওব্যাগ ও সিসি ব্লক ফেলার কাজ চলছে। তবে পুরো বাঁধজুড়েই ভাঙনের ঝুঁকি রয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, পদ্মা সেতুর নির্মাণকালে ২০১২ সালে নাওডোবা এলাকায় ভাঙন শুরু হলে, সেতু কর্তৃপক্ষ প্রায় ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে। পরবর্তীতে নদী শাসন প্রকল্পও এর সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়।

স্থানীয় মাদবরকান্দি গ্রামের রাজু মাদবর জানান, পদ্মায় তার প্রায় ১০ বিঘা জমি ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। এখন বসতভিটাও ঝুঁকির মুখে রয়েছে। অপরদিকে, জলিল তালুকদার নামে আরেক বাসিন্দা জানান, গত ২০ বছরে তাকে সাতবার ঠিকানা বদলাতে হয়েছে। এখন তিনি নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন বলেন, বাঁধ নির্মাণের পর দীর্ঘদিন ভাঙন না হলেও বর্তমানে পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু না হলে পদ্মা সেতুর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান জানান, বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরুর প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি জোর দেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের ২ কিলোমিটার রক্ষা বাঁধ ভাঙনের ঝুঁকিতে

আপডেট সময় ১২:৪৭:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

 

শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকার রক্ষা বাঁধের প্রায় ২ কিলোমিটার অংশ ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। নদীর গভীরতা বেড়ে যাওয়া ও তলদেশের মাটি সরে যাওয়ায় বাঁধটির স্থায়িত্ব মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বর্ষা মৌসুমের আগেই পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) আশঙ্কা করছে, নাওডোবা-পালেরচর সড়ক, মঙ্গল মাঝি-সাত্তার মাদবর বাজার এবং আশপাশের অন্তত চারটি গ্রামের প্রায় ৫৫০টি বসতবাড়ি নদীভাঙনের ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

গত বছর নভেম্বর মাসে জাজিরা প্রান্তের নাওডোবা জিরোপয়েন্ট এলাকায় রক্ষা বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার অংশ নদীতে বিলীন হয়। এরপর পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) যৌথভাবে জরিপ চালিয়ে দেখতে পায়, দুই কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে এক কিলোমিটার অংশে নদীর গভীরতা বিপজ্জনকভাবে বেড়ে গেছে এবং মাটি সরে যাচ্ছে। বাকি অংশেও নদী বাঁধের একেবারে সন্নিকটে চলে আসায় বড় ধরনের ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী সুমন চন্দ্র বনিক জানান, ইতোমধ্যে ভাঙনের মুখে পড়া ১০০ মিটার বাঁধ মেরামতে ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে জিওব্যাগ ও সিসি ব্লক ফেলার কাজ চলছে। তবে পুরো বাঁধজুড়েই ভাঙনের ঝুঁকি রয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, পদ্মা সেতুর নির্মাণকালে ২০১২ সালে নাওডোবা এলাকায় ভাঙন শুরু হলে, সেতু কর্তৃপক্ষ প্রায় ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে। পরবর্তীতে নদী শাসন প্রকল্পও এর সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়।

স্থানীয় মাদবরকান্দি গ্রামের রাজু মাদবর জানান, পদ্মায় তার প্রায় ১০ বিঘা জমি ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। এখন বসতভিটাও ঝুঁকির মুখে রয়েছে। অপরদিকে, জলিল তালুকদার নামে আরেক বাসিন্দা জানান, গত ২০ বছরে তাকে সাতবার ঠিকানা বদলাতে হয়েছে। এখন তিনি নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন বলেন, বাঁধ নির্মাণের পর দীর্ঘদিন ভাঙন না হলেও বর্তমানে পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু না হলে পদ্মা সেতুর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান জানান, বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরুর প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি জোর দেন।