ঢাকা ০১:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১০ হাজার ছাড়াল, ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৪২৯ জন জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নে সরকারের অগ্রগতি নেই: অভিযোগ নাহিদ ইসলামের পাকিস্তানকে ৩৪০ কোটি ডলারের বাণিজ্যিক ঋণ নবায়ন দিল চীন প্রেমিকার বিয়ের খবর শুনে কিশোরের ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা পদ্মা নদীতে ভয়াবহ ভাঙন: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় আতঙ্কে নদীপাড়ের মানুষ ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস ফিরিয়ে আনতে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে একটি মহল: ছাত্রশিবির সভাপতি হারিয়ে যাচ্ছে আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী ‘গুলতি’ মিসাইল সাথে রাখলেও আমি, আপনি কেউই নিরাপদ নই: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ শেরপুরের হলদীগ্রাম সীমান্তে ২৭৬ বোতল ভারতীয় মদ জব্দ পাকিস্তান ও ভারতে বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি, মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে ৭৯

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস হামলা, নিহত আরও ৪৫

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:৫১:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
  • / 49

ছবি: সংগৃহীত

 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ফের ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। লক্ষ্যবস্তু হয়েছে স্কুল ও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত তাঁবুগুলো, যেখানে নিরাপত্তার আশায় আশ্রয় নিয়েছিলেন বাস্তুচ্যুত অসহায় ফিলিস্তিনিরা। গত ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে এই বর্বর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪৫ জন, যাদের মধ্যে রয়েছেন একজন সাংবাদিক, তার স্ত্রী এবং শিশু কন্যা।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আলজাজিরার লাইভ রিপোর্ট অনুযায়ী, বুধবার ভোররাত থেকে গাজা শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে একযোগে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজা সিটির উত্তরের শেখ রাদওয়ান এলাকায় একটি বাড়িতে চালানো বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন ছয়জন, যার মধ্যে চারজন শিশু এবং একজন নারী। এই হামলার শিকার হন আল-আকসা রেডিওর সাংবাদিক সাঈদ আবু হাসানাইন। তিনি তার স্ত্রী ও কন্যাসহ মধ্য গাজার দেইর এল-বালাহ অঞ্চলে এক তাঁবুতে অবস্থান করছিলেন। বোমা হামলায় একত্রে মৃত্যু হয় তাদের।

স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলায় বহু মানুষ আহত হয়েছেন এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েছেন অনেকে। উদ্ধার কার্যক্রম চললেও টানা হামলার কারণে উদ্ধারকর্মীরা চরম ঝুঁকির মুখে।

উল্লেখ্য, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের সাত মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো থামেনি রক্তক্ষয়। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজার স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায়, যেখানে ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হন এবং ২৫১ জন জিম্মি হন। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় গাজা জুড়ে সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।

যদিও চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি থেকে এক দফা যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল, তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল পুনরায় হামলা শুরু করে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫১ হাজারেরও বেশি মানুষ। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু সংখ্যাগরিষ্ঠ।

গাজায় চলমান এই মানবিক বিপর্যয় বিশ্ববাসীকে হতবাক করেছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। তবে ইসরায়েলি বাহিনী তাদের অভিযান অব্যাহত রাখায় পরিস্থিতির কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন এখনও চোখে পড়ছে না।

বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিন্দা ও প্রতিবাদের মাঝেও গাজা রক্তাক্ত, ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে আছে হাজারো নিরীহ মানুষের স্বপ্ন। শান্তি আর নিরাপত্তার আকাঙ্ক্ষা যেন আজও মরীচিকা।

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস হামলা, নিহত আরও ৪৫

আপডেট সময় ১০:৫১:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ফের ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। লক্ষ্যবস্তু হয়েছে স্কুল ও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত তাঁবুগুলো, যেখানে নিরাপত্তার আশায় আশ্রয় নিয়েছিলেন বাস্তুচ্যুত অসহায় ফিলিস্তিনিরা। গত ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে এই বর্বর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪৫ জন, যাদের মধ্যে রয়েছেন একজন সাংবাদিক, তার স্ত্রী এবং শিশু কন্যা।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আলজাজিরার লাইভ রিপোর্ট অনুযায়ী, বুধবার ভোররাত থেকে গাজা শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে একযোগে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজা সিটির উত্তরের শেখ রাদওয়ান এলাকায় একটি বাড়িতে চালানো বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন ছয়জন, যার মধ্যে চারজন শিশু এবং একজন নারী। এই হামলার শিকার হন আল-আকসা রেডিওর সাংবাদিক সাঈদ আবু হাসানাইন। তিনি তার স্ত্রী ও কন্যাসহ মধ্য গাজার দেইর এল-বালাহ অঞ্চলে এক তাঁবুতে অবস্থান করছিলেন। বোমা হামলায় একত্রে মৃত্যু হয় তাদের।

স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলায় বহু মানুষ আহত হয়েছেন এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েছেন অনেকে। উদ্ধার কার্যক্রম চললেও টানা হামলার কারণে উদ্ধারকর্মীরা চরম ঝুঁকির মুখে।

উল্লেখ্য, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের সাত মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো থামেনি রক্তক্ষয়। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজার স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায়, যেখানে ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হন এবং ২৫১ জন জিম্মি হন। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় গাজা জুড়ে সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।

যদিও চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি থেকে এক দফা যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল, তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল পুনরায় হামলা শুরু করে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫১ হাজারেরও বেশি মানুষ। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু সংখ্যাগরিষ্ঠ।

গাজায় চলমান এই মানবিক বিপর্যয় বিশ্ববাসীকে হতবাক করেছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। তবে ইসরায়েলি বাহিনী তাদের অভিযান অব্যাহত রাখায় পরিস্থিতির কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন এখনও চোখে পড়ছে না।

বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিন্দা ও প্রতিবাদের মাঝেও গাজা রক্তাক্ত, ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে আছে হাজারো নিরীহ মানুষের স্বপ্ন। শান্তি আর নিরাপত্তার আকাঙ্ক্ষা যেন আজও মরীচিকা।