বিসিবির আম্পায়ারের চাকরি ছাড়তে চান এলিট প্যানেলের আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা !

- আপডেট সময় ১২:৪৮:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
- / 26
মোহামেডানের অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়ের শাস্তি কমিয়ে মাঠে ফেরার সুযোগ দেয়ায় দেশীয় ক্রিকেটে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। আম্পায়ারের সঙ্গে অসদাচরণ ও গণমাধ্যমে বিতর্কিত মন্তব্যের পর দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পাওয়া হৃদয় হঠাৎই এক ম্যাচ পরই খেলতে নামেন অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে। এই ঘটনায় আম্পায়ারদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে আইসিসির এলিট প্যানেলের আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহিদ বিসিবির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
আবাহনীর বিপক্ষে সুপার লিগের ম্যাচে আম্পায়ার তানভীর আহমেদ ও শরফুদ্দৌলার বিরুদ্ধে মাঠেই প্রতিবাদ জানাতে দেখা যায় হৃদয়কে। সেই ঘটনার জেরে তাকে প্রথমে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়। পরে গণমাধ্যমে বিস্ফোরক মন্তব্য করায় আরও এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা এবং চারটি ডিমেরিট পয়েন্ট যোগ করা হয় তার নামের পাশে। সব মিলিয়ে দুই ম্যাচ মাঠের বাইরে থাকার কথা ছিল জাতীয় দলের এই ক্রিকেটারের।
তবে মোহামেডান ক্লাব শাস্তি কমাতে টেকনিক্যাল কমিটির কাছে আবেদন করলেও তারা তাতে সাড়া দেয়নি। কিন্তু বিস্ময়করভাবে বিসিবির আম্পায়ারস বিভাগ সেই আবেদন আমলে নিয়ে হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা এক ম্যাচেই সীমিত করে দেয়। এই সিদ্ধান্তে বেজায় চটেছেন আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা, যিনি মনে করছেন এই ঘটনায় আম্পায়ারদের সম্মান হানি হয়েছে। নিয়ম না মেনে এমন সিদ্ধান্তে তার কাজের স্বাধীনতা এবং মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলেই বিসিবির কাছে চাকরি ছাড়ার চিঠি জমা দিয়েছেন তিনি।
বিসিবির অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, টেকনিক্যাল কমিটি এবং সিসিডিএম ছাড়া এমন শাস্তি হ্রাসের ক্ষমতা আম্পায়ারস বিভাগের নেই। অথচ সেই নিয়ম ভেঙেই হৃদয়ের মাঠে ফেরার সুযোগ দেয়া হয়েছে, যা দেশের ক্রিকেটে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার প্রশ্ন তুলছে।
বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু এ বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করতে নারাজ থাকলেও শরফুদ্দৌলার পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা। তিনি নাকি মনে করছেন, আম্পায়ারদের পেশাদারিত্ব ও স্বাধীনতার সঙ্গে এই ঘটনা বড় ধরনের আঘাত।
দেশের ক্রিকেট অঙ্গনে এখন এই ঘটনা নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, জাতীয় দলের একজন খেলোয়াড় কি বিশেষ সুবিধা পাবেন? নাকি সব ক্রিকেটারের জন্যই নিয়ম এক?
ক্রিকেট সমর্থকদের একাংশও বিসিবির এই সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি, এই ধরনের পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্ত দেশের ক্রিকেটকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং ভবিষ্যতে নিয়মশৃঙ্খলার জায়গায় বড় ধরণের সংকট তৈরি করবে।
বিসিবির উচ্চ পর্যায়ে এই ঘটনার তদন্ত ও আলোচনার দাবি উঠেছে। ক্রীড়া সংগঠক, বিশ্লেষক এবং সাবেক ক্রিকেটাররাও মনে করছেন, নিয়ম ভেঙে একজন খেলোয়াড়কে সুযোগ দেয়ার ঘটনাটি ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত।