ঢাকা ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামালের ৫৪তম শাহাদাত বার্ষিকী ভাটারায় প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভীতি প্রদর্শনের ঘটনায় এক যুবককে গ্রেফতার করেছে ডিবি চাঞ্চল্যকর ছিনতাইয়ের ঘটনায় মোটরসাইকেল ও দেশীয় অস্ত্রসহ পেশাদার ছিনতাইকারী শাকিলকে গ্রেফতার করেছে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ যুদ্ধবিরতিতে ফিলিস্তিনিদের ‘না’, প্রস্তাবে যা বলেছে ইসরায়েল ড. ইউনূস বাংলাদেশকে নিপীড়নের ছায়া থেকে বের করে আনছেন তালেবান আর সন্ত্রাসী গোষ্ঠী নয়, রায় দিল রাশিয়া গুগল এখন অস্ত্র ও নজরদারির জন্য এআই তৈরি করছে ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে বন্দুকধারীর হামলায় ৫ জন নিহত, ৪ জন আহত — সন্দেহভাজন আটক ইসরায়েল সীমান্তের কাছে হিজবুল্লাহকে হটাতে কাজ করছে লেবানন সেনাবাহিনী সিরিয়ার স্বৈরশাসকের মূল্যবান সম্পদ পাচারে গোপন বিমান মিশন

হাওরে আগাম ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষক, ফলন কমে দুশ্চিন্তায় চাষিরা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৬:৫৭:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৫১১ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

 

নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে শুরু হয়েছে আগাম জাতের বোরো ধান কাটা ও মাড়াই। কাঁচা-পাকা ধানের সমারোহে জমে উঠেছে মাঠের চিত্র, বইছে ফসল কাটার উৎসব। তবে সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় আগাম জাতের ধানে ফলন আশানুরূপ হয়নি, যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা। যদিও কৃষি বিভাগ অন্যান্য জাতের ধানে বাম্পার ফলনের আশা করছে।

জেলার মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরীসহ হাওর অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে মাঠে নেমেছেন কৃষকেরা। কেউ কাঁচি হাতে দল বেঁধে, কেউ বা সরকারি ভর্তুকিতে পাওয়া আধুনিক হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটছেন। প্রকৃতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এখন চলছে সময়ের সাথে যুদ্ধ। আগাম বন্যার ভয় মাথায় রেখে অনেকেই এবার আগাম ও উচ্চফলনশীল জাতের আবাদ করেছেন। কিন্তু অনাবৃষ্টির কারণে ফলন বিপর্যয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন হাজারো কৃষক।

গোবিন্দশ্রী হাওরের কৃষক হেলিম মিয়া জানান, “আগে যেখানে ২৮ জাতের ধান চাষ করতাম, এবার আগাম ফসল বাঁচাতে ৮৮ জাতের ধান আবাদ করেছি। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে ফলন অর্ধেকের মতো কমে গেছে।” একই কথা বললেন জগন্নাথপুর গ্রামের রিপন সরকার ও মতি মিয়া। তাঁদের মতে, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ছিল কৃষির জন্য প্রতিকূল, যার প্রভাব পড়েছে ফসল উৎপাদনে।

তবে আশার কথা শুনিয়েছেন জেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূরুজ্জামান। তিনি জানান, “নেত্রকোনার ১০টি উপজেলায় এবার ১ লাখ ৮৫ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে হাওর এলাকায় আবাদ হয়েছে ৪১ হাজার ৭৫ হেক্টরে। আশা করছি, পুরো মৌসুম শেষে জেলায় উৎপাদিত চালের পরিমাণ দাঁড়াবে ৮ লক্ষ ৪২ হাজার মেট্রিক টনে, যার বাজারমূল্য প্রায় ২৭শ কোটি টাকা। শুধু হাওরেই লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৬শ কোটি টাকার চাল।”

তিনি আরও জানান, মাঠ পর্যায়ে প্রায় ৭০০ হারভেস্টার মেশিন প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যাতে স্বল্প সময়ে ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই হাওরের পুরো এলাকায় পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে বলে জানান তিনি।

বৈরী আবহাওয়া ও অনাবৃষ্টির মাঝে হাওরের কৃষকেরা এখন আশায় বুক বেঁধেছেন, অন্তত পরবর্তী পর্যায়ের জাতগুলো ভালো ফলন দেবে। কারণ এই একমাত্র ফসলই তাদের বছরের ভরসা।

নিউজটি শেয়ার করুন

হাওরে আগাম ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষক, ফলন কমে দুশ্চিন্তায় চাষিরা

আপডেট সময় ০৬:৫৭:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫

 

নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে শুরু হয়েছে আগাম জাতের বোরো ধান কাটা ও মাড়াই। কাঁচা-পাকা ধানের সমারোহে জমে উঠেছে মাঠের চিত্র, বইছে ফসল কাটার উৎসব। তবে সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় আগাম জাতের ধানে ফলন আশানুরূপ হয়নি, যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা। যদিও কৃষি বিভাগ অন্যান্য জাতের ধানে বাম্পার ফলনের আশা করছে।

জেলার মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরীসহ হাওর অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে মাঠে নেমেছেন কৃষকেরা। কেউ কাঁচি হাতে দল বেঁধে, কেউ বা সরকারি ভর্তুকিতে পাওয়া আধুনিক হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটছেন। প্রকৃতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এখন চলছে সময়ের সাথে যুদ্ধ। আগাম বন্যার ভয় মাথায় রেখে অনেকেই এবার আগাম ও উচ্চফলনশীল জাতের আবাদ করেছেন। কিন্তু অনাবৃষ্টির কারণে ফলন বিপর্যয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন হাজারো কৃষক।

গোবিন্দশ্রী হাওরের কৃষক হেলিম মিয়া জানান, “আগে যেখানে ২৮ জাতের ধান চাষ করতাম, এবার আগাম ফসল বাঁচাতে ৮৮ জাতের ধান আবাদ করেছি। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে ফলন অর্ধেকের মতো কমে গেছে।” একই কথা বললেন জগন্নাথপুর গ্রামের রিপন সরকার ও মতি মিয়া। তাঁদের মতে, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ছিল কৃষির জন্য প্রতিকূল, যার প্রভাব পড়েছে ফসল উৎপাদনে।

তবে আশার কথা শুনিয়েছেন জেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূরুজ্জামান। তিনি জানান, “নেত্রকোনার ১০টি উপজেলায় এবার ১ লাখ ৮৫ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে হাওর এলাকায় আবাদ হয়েছে ৪১ হাজার ৭৫ হেক্টরে। আশা করছি, পুরো মৌসুম শেষে জেলায় উৎপাদিত চালের পরিমাণ দাঁড়াবে ৮ লক্ষ ৪২ হাজার মেট্রিক টনে, যার বাজারমূল্য প্রায় ২৭শ কোটি টাকা। শুধু হাওরেই লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৬শ কোটি টাকার চাল।”

তিনি আরও জানান, মাঠ পর্যায়ে প্রায় ৭০০ হারভেস্টার মেশিন প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যাতে স্বল্প সময়ে ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই হাওরের পুরো এলাকায় পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে বলে জানান তিনি।

বৈরী আবহাওয়া ও অনাবৃষ্টির মাঝে হাওরের কৃষকেরা এখন আশায় বুক বেঁধেছেন, অন্তত পরবর্তী পর্যায়ের জাতগুলো ভালো ফলন দেবে। কারণ এই একমাত্র ফসলই তাদের বছরের ভরসা।