১২:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
জাতির উদ্দেশ্যে সন্ধ্যায় ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা জনসমাগমের মধ্যে দক্ষিণখানে যুবলীগ নেতা খুন জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা গাজায় যুদ্ধবিরতি মানতে ইসরায়েলকে হোয়াইট হাউসের সতর্কবার্তা, নেতানিয়াহুকে সরাসরি বার্তা শিশু সাজিদের মৃত্যু: ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ মানুষকে ভয় দেখাতেই এসব হামলা: রিজওয়ানা আটকের পর যা বললেন গুলিতে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক হান্নান মোহাম্মদপুরে মা–মেয়েকে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হচ্ছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ঢাকা-১১ আসনে নির্বাচন করবেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম

সাতক্ষীরার বাগদা চিংড়িতে মরক, কালীগঞ্জের ঘেরে দুর্দশায় চাষিরা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৫:২১:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫
  • / 140

ছবি সংগৃহীত

 

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে শুরুতেই ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বাগদা চিংড়ি চাষ। হঠাৎ করে বিভিন্ন ঘেরে শুরু হয়েছে মড়ক। পানিতে ভেসে উঠছে মরা চিংড়ি, চারদিকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। চাষিরা নানাভাবে প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও কোনো ওষুধই কাজ করছে না।

কালীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য অফিস জানায়, উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার ঘের রয়েছে ১৬০০ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে প্রায় ৬ হাজার মেট্রিক টন বাগদা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল। কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই ভাইরাসজনিত মড়কে সেই লক্ষ্য এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

বিজ্ঞাপন

বেড়াখালী গ্রামের চাষি শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘ঋণের টাকা দিয়ে চাষ শুরু করেছিলাম। হঠাৎ করে সব মাছ মরে গেছে। এখন মাথায় হাত, কিছুই করার নেই।’ শ্রীকলা গ্রামের শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘দুই দফায় ঘেরে পোনা ছেড়েছিলাম। দুইবারই সব মাছ মরে গেছে। এখন শুধু পচা গন্ধ।’

চাষি রাজিউন আহম্মেদ বলেন, ‘তিনটি ঘেরে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার পোনা ছেড়েছিলাম। বেশিরভাগই মারা গেছে। আশপাশের সব ঘেরেই একই অবস্থা।’

চাষিরা জানান, লোকাল মার্কেট থেকে কেনা পোনা, ঘেরে ভাইরাসবাহিত পানি প্রবেশ, এবং ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার না করায় দ্রুত ছড়িয়েছে এই মড়ক। অনেকে এখন ঘের শুকিয়ে আবার নতুন করে চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু বিনিয়োগ করা পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা তারা।

কালীগঞ্জের সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তৌকির আহমেদ বলেন, ‘চাষিরা ঘেরের পানি পরিবর্তনের সময় সতর্কতা মানেননি। ভাইরাসযুক্ত পানি খালে ছেড়ে দেওয়ার পর সেটি ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য ঘেরে। ভাইরাস রোধে কোনো কার্যকর ওষুধ নেই। অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতে চাষিরা মাছ ছাড়ার আগে পানি ও মাটি পরীক্ষা করতে মৎস্য অফিসে এলে পরামর্শ দেওয়া যাবে।’

বাগদা চাষে এ ধরণের সংকট শুধু অর্থনৈতিক নয়, একটি সম্ভাবনাময় খাতের ওপরও বড় ধাক্কা। দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এই মড়ক দীর্ঘমেয়াদে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

সাতক্ষীরার বাগদা চিংড়িতে মরক, কালীগঞ্জের ঘেরে দুর্দশায় চাষিরা

আপডেট সময় ০৫:২১:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫

 

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে শুরুতেই ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বাগদা চিংড়ি চাষ। হঠাৎ করে বিভিন্ন ঘেরে শুরু হয়েছে মড়ক। পানিতে ভেসে উঠছে মরা চিংড়ি, চারদিকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। চাষিরা নানাভাবে প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও কোনো ওষুধই কাজ করছে না।

কালীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য অফিস জানায়, উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার ঘের রয়েছে ১৬০০ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে প্রায় ৬ হাজার মেট্রিক টন বাগদা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল। কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই ভাইরাসজনিত মড়কে সেই লক্ষ্য এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

বিজ্ঞাপন

বেড়াখালী গ্রামের চাষি শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘ঋণের টাকা দিয়ে চাষ শুরু করেছিলাম। হঠাৎ করে সব মাছ মরে গেছে। এখন মাথায় হাত, কিছুই করার নেই।’ শ্রীকলা গ্রামের শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘দুই দফায় ঘেরে পোনা ছেড়েছিলাম। দুইবারই সব মাছ মরে গেছে। এখন শুধু পচা গন্ধ।’

চাষি রাজিউন আহম্মেদ বলেন, ‘তিনটি ঘেরে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার পোনা ছেড়েছিলাম। বেশিরভাগই মারা গেছে। আশপাশের সব ঘেরেই একই অবস্থা।’

চাষিরা জানান, লোকাল মার্কেট থেকে কেনা পোনা, ঘেরে ভাইরাসবাহিত পানি প্রবেশ, এবং ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার না করায় দ্রুত ছড়িয়েছে এই মড়ক। অনেকে এখন ঘের শুকিয়ে আবার নতুন করে চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু বিনিয়োগ করা পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা তারা।

কালীগঞ্জের সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তৌকির আহমেদ বলেন, ‘চাষিরা ঘেরের পানি পরিবর্তনের সময় সতর্কতা মানেননি। ভাইরাসযুক্ত পানি খালে ছেড়ে দেওয়ার পর সেটি ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য ঘেরে। ভাইরাস রোধে কোনো কার্যকর ওষুধ নেই। অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতে চাষিরা মাছ ছাড়ার আগে পানি ও মাটি পরীক্ষা করতে মৎস্য অফিসে এলে পরামর্শ দেওয়া যাবে।’

বাগদা চাষে এ ধরণের সংকট শুধু অর্থনৈতিক নয়, একটি সম্ভাবনাময় খাতের ওপরও বড় ধাক্কা। দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এই মড়ক দীর্ঘমেয়াদে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।