সিলেট-মৌলভীবাজারে বন্যার প্রকোপ, বাড়ছে নদ-নদীর পানি

- আপডেট সময় ০৭:৪৩:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
- / 2
টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ দুই জেলার প্রধান নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা এবং মৌলভীবাজারের মনু নদীর পানি বর্তমানে বিপৎসীমার ওপরে অবস্থান করছে। সংস্থাটির নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানান, “আগামী ৪৮ ঘণ্টায় সুরমা, কুশিয়ারা এবং মনু নদীর পানি আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে করে সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার নিচু এলাকাগুলোর বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।”
যেসব স্থানে পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে:
* সুরমা নদী (কানাইঘাট): বিপৎসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার ওপরে
* কুশিয়ারা নদী (অমলশীদ): বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার ওপরে
* মনু নদী (মৌলভীবাজার): বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার ওপরে
এছাড়া, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও হবিগঞ্জ জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলেও বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষত, সুরমা, কুশিয়ারা, মনু ও খোয়াই নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকলে এই এলাকায় নতুন করে প্লাবনের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
পাউবো জানিয়েছে, সারিগোরাইন, যাদুকাটা, ধলাই ও সোমেশ্বরী নদীর পানিও বিপৎসীমা ছুঁতে পারে।
অন্যান্য নদ-নদীর পরিস্থিতি:
* ব্রহ্মপুত্র নদ: পানির স্তর ধীরে ধীরে বাড়ছে
* যমুনা নদী: পানির স্তর স্থিতিশীল, এখনও বিপৎসীমার নিচে
* তিস্তা নদী: সতর্কসীমায় পৌঁছাতে পারে
* রংপুর বিভাগ: ধরলা, দুধকুমার ও ভিন্তা নদীতে পানি বাড়বে
চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, ফেনী, হালদা ও সাঙ্গু নদীর পানি আগামী ২৪ ঘণ্টায় বাড়ার সম্ভাবনা থাকলেও পরে তা কমে আসতে পারে। গোমতী ও মাতামুহুরী নদীতেও পানির প্রবাহ বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গঙ্গা-পদ্মার অবস্থা: বর্তমানে পানির সমতল স্থিতিশীল বা হ্রাস পাচ্ছে এবং বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।
প্রশাসনের প্রস্তুতি:
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, সিলেট ও মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলে স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে কয়েকটি প্লাবিত এলাকায় শুকনো খাবার ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণকেও সচেতন থাকতে এবং নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। সতর্কতা হিসেবে স্কুল ও কমিউনিটি সেন্টারগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে।