নববর্ষের শোভাযাত্রা রাজনৈতিক নয়, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ: সংস্কৃতি উপদেষ্টা
বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে আয়োজিত এবারের বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয় এটা দেশের সংস্কৃতিকে রক্ষার জন্য সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বলেন, “আমরা কোনো রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর বিপক্ষে নই, আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। ফ্যাসিবাদ হলো সবচেয়ে বড় অশুভ শক্তি, যার মুখাবয়ব আমরা শোভাযাত্রায় দেখিয়েছি, প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে।”
সোমবার (১৪ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে ‘আনন্দ শোভাযাত্রায়’ অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
ফারুকী আরও বলেন, “এটা কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর উৎসব নয়, এটা বাংলাদেশের প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর, প্রতিটি মানুষের মিলনমেলা। বাঙালি, চাকমা, মারমা, গারো সবার জন্যই বাংলা নববর্ষ এক অনন্য উৎসব।”
শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন নিয়ে চারুকলার শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এবারের শোভাযাত্রার নামকরণ কোনো চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত নয়। আগে যশোরে ছিল বর্ষবরণ শোভাযাত্রা, পরে ঢাকায় এসে হয় আনন্দ শোভাযাত্রা, এরপর কেউ কেউ চাপিয়ে দেন মঙ্গল শোভাযাত্রা নাম। এবার চারুকলা নিজস্ব ঐতিহ্যে ফিরে গিয়ে পুরনো নামেই আয়োজন করেছে এটাই স্বাধীন চিন্তার প্রকাশ।”
তিনি আরও বলেন, “এখানে কোনো দলীয় রঙ নেই। বরং আকবর আমল থেকে সুলতানি আমলের সাংস্কৃতিক রীতি, সবকিছুর এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটেছে এখানে। এটা একটি বিশুদ্ধ সাংস্কৃতিক আয়োজন, যেখানে রাজনীতির কোনো স্থান নেই।”
নববর্ষ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বাংলা নববর্ষ শুধু বাঙালির নয়, এটা বাংলাদেশের প্রাণের উৎসব। এই উৎসব আমাদের জাতীয় পরিচয়ের অংশ এবং সাংস্কৃতিক ঐক্যের শক্ত ভিত। আমরা হয়তো ২০–৩০ বছর পর থাকবো না, কিন্তু এই আয়োজন প্রমাণ রাখবে আমরা কেমন বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলাম।”
শোভাযাত্রার সার্বিক আয়োজন সম্পর্কে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “এবারের বছরটি ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে থাকবে। কারণ, আজ আমরা যেভাবে নববর্ষ উদযাপন করছি, আগামী প্রজন্ম সেভাবেই এগিয়ে যাবে একটি সাম্য, ঐক্য ও সংস্কৃতির বাংলাদেশ গড়ার পথে।”