টেকনাফে মানবপাচারকারীদের গোপন আস্তানায় বিজিবির অভিযান: ১৪ জন অপহৃত উদ্ধার

- আপডেট সময় ০২:১৫:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫
- / 11
কক্সবাজারের টেকনাফে কুখ্যাত মানবপাচারকারী চক্রের গোপন আস্তানায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ১৪ জন অপহৃত বাংলাদেশি নাগরিককে উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শুক্রবার (১০ মে) গভীর রাতে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরী এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।
অভিযানটি পরিচালনা করেন বিজিবির টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান। অপহৃতদের সবাইকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
বিজিবির এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এর আগে গত ২৪ এপ্রিল গভীর সাগরপথে মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে মানবপাচারের সময় মো. সাইফুল ইসলাম নামের একজন চিহ্নিত পাচারকারীসহ একটি চক্রকে ধরতে অভিযান চালানো হয়। তবে সে সময় পাচারকারীরা পালিয়ে গেলেও বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়।
ওই ঘটনার পর টেকনাফ মডেল থানায় মানব ও মাদক পাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করে বিজিবি। মামলার ভিত্তিতে এবং উদ্ধার হওয়াদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মেরিন ড্রাইভ ও দমদমিয়া এলাকায় একাধিক অভিযান চালানো হয়।
তদন্তে উঠে আসে, চক্রটি দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সাধারণ মানুষকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টেকনাফে নিয়ে আসত। এরপর সুবিধাজনক সময়ে অপহরণ করে তাদের দুর্গম এলাকায় আটক রাখা হতো। পরিবারের কাছে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করা হতো, আর অপহৃতদের ওপর চালানো হতো নির্যাতন। এমনকি নির্যাতনের ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করে পরিবারে পাঠিয়ে চাপ প্রয়োগ করে আদায় করা হতো মুক্তিপণ।
১০ মে রাত সাড়ে ১১টার দিকে দক্ষিণ লম্বরী এলাকার একটি গোপন আস্তানায় অভিযান চালিয়ে ১৪ জন অপহৃতকে উদ্ধার করে বিজিবি। তারা সবাই দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আসা সাধারণ নাগরিক।
বিজিবি আরও জানায়, চক্রটির মূল হোতা টেকনাফের লেঙ্গুরবিল এলাকার মৃত হাফেজ আহমেদের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম (৩৯)-এর বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যে চক্রটির অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে ধারাবাহিকভাবে অভিযান চালানো হচ্ছে।
মানবপাচারের মতো ভয়াবহ অপরাধ রোধে বিজিবির এমন পদক্ষেপে এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।