পদ্মা নদীতে ভয়াবহ ভাঙন: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় আতঙ্কে নদীপাড়ের মানুষ

- আপডেট সময় ০৯:৩৭:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
- / 5
পদ্মা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নে নতুন করে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। মুন্সিপাড়া, টিকটিকিপাড়া, মসলেমপুরসহ আশপাশের প্রায় ছয় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রতিদিনই ফসলি জমি, বসতবাড়ি ও নানা স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। হুমকির মুখে পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং নদী প্রতিরক্ষা বাঁধও।
স্থানীয়দের পাশাপাশি পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, উজান থেকে নেমে আসা ঢল, টানা বৃষ্টিপাত এবং নদীর প্রচণ্ড স্রোতের কারণে পদ্মার তীরজুড়ে হঠাৎ করেই ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে মুন্সিপাড়া ও টিকটিকিপাড়ায় ভাঙনের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।
নদীপাড়ের মানুষ এখন আতঙ্ক ও দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। রাত জেগে প্রহরা দিচ্ছেন ভাঙন ঠেকানোর কোনো উপায় আছে কি না, তা দেখার জন্য। ইতোমধ্যে কয়েক একর ফসলি জমি ও বহু ঘরবাড়ি নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে স্কুল, দোকানপাটসহ পদ্মার তীর সংরক্ষণের জন্য নির্মিত প্রতিরক্ষা বাঁধ।
এমন অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দারা মানববন্ধন করে অবিলম্বে স্থায়ী সমাধানমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, “নতুন কোনো আশ্বাস নয়, আমরা দ্রুত বাস্তব পদক্ষেপ চাই।”
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বছরের পর বছর নানা আশ্বাস মিললেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ না থাকায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। তাই এবার যেন প্রতিশ্রুতির চেয়ে বাস্তব কাজকে গুরুত্ব দেওয়া হয়—এটাই নদীপাড়ের মানুষের প্রধান দাবি।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুর রহমান জানান, “তালবাড়িয়া থেকে নয় কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন রোধে প্রায় ১ হাজার ৪৭২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। মুন্সিপাড়া, টিকটিকিপাড়া এবং আশপাশের এলাকায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে ভাঙনের তীব্রতা কিছুটা বেড়েছে। তবে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাওয়া মাত্র দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।”
এদিকে নদীপাড়ের মানুষ এখনই কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে চান, যাতে আর কোনো মানুষের ঘরবাড়ি বা ফসলি জমি নদীগর্ভে না হারায়। তাদের আশা, প্রশাসন এবার আর বিলম্ব না করে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।