সিলেটে অতিবৃষ্টি ও ঢলে সুরমা-কুশিয়ারার পানি বিপৎসীমার ওপরে

- আপডেট সময় ১১:৩২:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫
- / 3
অতিবৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা ঢলের কারণে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। বিশেষ করে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর চারটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সিলেট জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বানভাসি মানুষের আশ্রয়ের জন্য ৫৮২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ জানান, বন্যা দুর্গত মানুষের সহায়তায় সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে এবং তারা নিয়মিত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র রোববার সন্ধ্যায় জানিয়েছে, সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে সকাল ৬টার দিকে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। সন্ধ্যায় এই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছিল। গতকাল সন্ধ্যায় এ পয়েন্টে পানি ছিল বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার নিচে। একই সময়ে কানাইঘাটের লোভা নদীর পানিও বেড়েছে ৮০ সেন্টিমিটার।
সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে পানির উচ্চতা বিপৎসীমার নিচে থাকলেও গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে পানি বেড়েছে ৭৫ সেন্টিমিটার।
অন্যদিকে, কুশিয়ারা নদীর পানি সবচেয়ে বেশি বেড়েছে জকিগঞ্জ উপজেলার আমলশীদ পয়েন্টে, যেখানে তা বিপৎসীমার ১.৫৮ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এক দিনে সেখানে পানি বেড়েছে ৩.৪৫ মিটার। শেওলা পয়েন্টে বিকেল ৩টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে সন্ধ্যায় ৩০ সেন্টিমিটার ওপরে যায়। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টেও পানি বর্তমানে ৫ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, এসব নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে সিলেটের কিছু নিচু এলাকাগুলো ইতোমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে। তবে পাহাড়ি নদীগুলোর সারি, পিয়াইন, গোয়াইন ও ধলাই পানির পরিমাণ কিছুটা কমেছে।
টানা ৪৮ ঘণ্টার বৃষ্টিতে সিলেট নগরে জলাবদ্ধতা দেখা দিলেও রোববার দিনের বেলায় বৃষ্টি না থাকায় পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার সকাল ৬টা থেকে রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ৪০৪.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে, যা জেলার ইতিহাসে একদিনে সর্বোচ্চ। এছাড়া মৌলভীবাজারের দক্ষিণভাগে ৩৫৫ মিলিমিটার, বিয়ানীবাজারের শেওলায় ৩২২, শেরপুরে ২৫৮ এবং জাফলংয়ে ২১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।