কালবৈশাখীর তাণ্ডবে রংপুর ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি, বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন বিভিন্ন এলাকা

- আপডেট সময় ০২:১৪:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
- / 7
রংপুর ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে বজ্রসহ কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানে। ঝড়ে কয়েক শ কাঁচা ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অসংখ্য গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধান, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসলের খেতও ঝড়ে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, গঙ্গাচড়ায় ঝড়ে ঘর ভেঙে তিনজন আহত হয়েছেন।
রংপুর আবহাওয়া অফিস জানায়, রাত ১০টা থেকে শুরু হয়ে এই ঝড় চলে মধ্যরাত পর্যন্ত।
গঙ্গাচড়া উপজেলার বাসিন্দারা জানান, রাত ১০টার দিকে পশ্চিম দিক থেকে প্রবল কালবৈশাখী আঘাত হানে। গঙ্গাচড়া, কোলকোন্দ, বড়বিল, মর্ণেয়া, গজঘণ্টা, আলমবিদিতর ও লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের অনেক গ্রামের ঘরবাড়ি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
কোলকোন্দ ইউনিয়নের দক্ষিণ কোলকোন্দ গ্রামের নুরজামাল মিয়া জানান, হঠাৎ বৃষ্টি আর ঝোড়ো বাতাসে গাছপালা উপড়ে পড়ে, তাঁর ঘরের চাল উড়ে যায়।
লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের বেশ কিছু বাড়িঘর, গাছপালা ও ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে বিদ্যুৎ–সংযোগ বন্ধ রয়েছে। তবে বড় ধরনের ফসলহানির আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, গঙ্গাচড়ায় প্রায় দেড় শতাধিক বাড়িঘর ভেঙেছে। বলবিল ইউনিয়নে দুজন ও লক্ষ্মীটারিতে একজন আহত হয়েছেন।
রোববার সকালে কাউনিয়ার বানুপাড়া গ্রামে দেখা যায়, তুলার একটি কারখানার টিনের চালা উড়ে গাছে ঝুলে আছে। চর মর্ণেয়া ও আলালের চরে গাছপালা উপড়ে পড়ে রয়েছে।
কাউনিয়ার ইউএনও মহিদুল হক জানান, বড় ধরনের ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি।
রংপুর সদরের ইউএনও সাইফুল ইসলাম বলেন, একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের টিন উড়ে গেছে। আরও তথ্য সংগ্রহ চলছে।
তারাগঞ্জ উপজেলার জুম্মাপাড়ায় গাছ পড়ে ঘর ভেঙেছে। ওই উপজেলায় প্রায় দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি ও আম, লিচু, ভুট্টা, ধান, পাটের ক্ষতি হয়েছে।
দিনমজুর বাবু মিয়ার ঘর ভেঙে গেছে। তিনি বলেন, ‘টাকার অভাবে খুঁটি দিতে পারিনি। হঠাৎ ঝড়ে ঘরটা ভেঙে গেল। খাবারই নেই, ঘর বানাব কী দিয়ে।’
কসাইপাড়া, জগদীশপুর, দোজাহারী ও ফকিরপাড়ায় ঘরবাড়ি ভেঙেছে। কেউ গাছ পড়ে, কেউ চাল উড়ে, কেউবা ঘর দুমড়ে–মুচড়ে গেছে।
কৃষি কর্মকর্তা ধীবা রানী রায় বলেন, ধান-ভুট্টার ক্ষতি কম, কিছু আম-লিচুর গুটি ঝরেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ মাঠ পর্যায়ের রিপোর্টে জানা যাবে।