ঢাকা ০৯:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
মিয়ানমারের সামরিক জান্তা-বিরোধী দুটি গোষ্ঠীর তীব্র সংঘর্ষ, পালিয়ে আসছে হাজারো মানুষ চলতি মাসের ৬ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৪২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার: বাংলাদেশ ব্যাংক সাভারে বিশেষ অভিযান শীর্ষ সন্ত্রাসী টুটুল গ্রেপ্তার, বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার কিশোরগঞ্জে সবাইকে অচেতন করে ‘দুর্ধর্ষ চুরি, ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট রাজনৈতিক পরিবর্তন ছাড়া কোনো নীতিই ব্যাংক খাতকে শক্তিশালী করতে পারবে না: গভর্নর গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু, নতুন ভর্তি ৪৯২ ঝিনাইদহে এসআই মিরাজুল হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন নির্বাচনের বিলম্বে দেশের অগ্রগতি ব্যাহত হবে: মির্জা ফখরুল দায়িত্বশীলভাবে কাজ করলে কর্মকর্তাদের জন্য ভয়ের কিছু নেই: এনবিআর চেয়ারম্যান বধিরতা জয় করল বিজ্ঞান: শ্রবণশক্তি ফেরাতে জিন থেরাপির নতুন কৌশল

বধিরতা জয় করল বিজ্ঞান: শ্রবণশক্তি ফেরাতে জিন থেরাপির নতুন কৌশল

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৬:৫০:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫
  • / 1

ছবি সংগৃহীত

 

সুইডেনের খ্যাতনামা ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের একদল বিজ্ঞানী যুগান্তকারী এক জিন থেরাপি উদ্ভাবন করেছেন, যার মাধ্যমে মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দুর্বল শ্রবণশক্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে। তাঁদের দাবি, এক ডোজের এই জিন থেরাপি জন্মগত বধিরতা বা কম শ্রবণশক্তির শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের শ্রবণশক্তি উন্নত করতে সক্ষম।

সম্প্রতি প্রকাশিত এক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গেছে, সাত বছর বয়সী এক শিশু প্রায় পুরোপুরি শ্রবণশক্তি ফিরে পেয়েছে। নেচার মেডিসিন সাময়িকীতে এই গবেষণার বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা জানান, ওটিওএফ (OTOF) জিনের মিউটেশনের কারণে কান থেকে মস্তিষ্কে শব্দের সংকেত ঠিকমতো পৌঁছায় না, যার ফলে বধিরতা তৈরি হয়। এই জিনের ঘাটতিতে প্রোটিন ওটোফেরলিনের অভাব ঘটে, যা শ্রবণ প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত জরুরি। গবেষণায় দেখা গেছে, ওটিওএফ জিনের সঠিক কপি ইনজেকশনের মাধ্যমে কানে প্রবেশ করানোর পর অংশগ্রহণকারীদের শ্রবণশক্তি দ্রুত উন্নত হয়েছে।

এখন পর্যন্ত শিশুদের মধ্যে এই থেরাপি সবচেয়ে ভালো ফলাফল দেখিয়েছে। বিজ্ঞানীদের তথ্য অনুযায়ী, থেরাপির ছয় মাস পরে দশজন অংশগ্রহণকারীরই শ্রবণশক্তি গড়ে ১০৬ ডেসিবেল থেকে নেমে এসেছে ৫২ ডেসিবেলে, যা শ্রবণ ক্ষমতার জন্য বড় অগ্রগতি। পাঁচ থেকে আট বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে।

ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের গবেষক মাওলি ডুয়ান জানান, “প্রথমবারের মতো কিশোর ও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই পদ্ধতি পরীক্ষা করা হয়েছে। অংশগ্রহণকারীদের অনেকের শ্রবণশক্তি যথেষ্ট উন্নত হয়েছে। চিকিৎসাটি নিরাপদ এবং কোনো গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়নি।”

তিনি আরও বলেন, এখন বধিরতার অন্যান্য সাধারণ জিন যেমন জিজেবি২ (GJB2) এবং টিএমসি১ (TMC1) নিয়ে গবেষণা চলছে। তবে এসব জিনের চিকিৎসা পদ্ধতি তুলনামূলকভাবে জটিল। তবুও তিনি আশাবাদী, ভবিষ্যতে বিভিন্ন ধরনের জেনেটিক বধিরতার রোগীরাও এ ধরনের চিকিৎসা থেকে উপকার পেতে পারবেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নতুন জিন থেরাপি প্রযুক্তি ভবিষ্যতে শ্রবণ প্রতিবন্ধী মানুষের জীবনে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে।

সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট

নিউজটি শেয়ার করুন

বধিরতা জয় করল বিজ্ঞান: শ্রবণশক্তি ফেরাতে জিন থেরাপির নতুন কৌশল

আপডেট সময় ০৬:৫০:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫

 

সুইডেনের খ্যাতনামা ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের একদল বিজ্ঞানী যুগান্তকারী এক জিন থেরাপি উদ্ভাবন করেছেন, যার মাধ্যমে মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দুর্বল শ্রবণশক্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে। তাঁদের দাবি, এক ডোজের এই জিন থেরাপি জন্মগত বধিরতা বা কম শ্রবণশক্তির শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের শ্রবণশক্তি উন্নত করতে সক্ষম।

সম্প্রতি প্রকাশিত এক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গেছে, সাত বছর বয়সী এক শিশু প্রায় পুরোপুরি শ্রবণশক্তি ফিরে পেয়েছে। নেচার মেডিসিন সাময়িকীতে এই গবেষণার বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা জানান, ওটিওএফ (OTOF) জিনের মিউটেশনের কারণে কান থেকে মস্তিষ্কে শব্দের সংকেত ঠিকমতো পৌঁছায় না, যার ফলে বধিরতা তৈরি হয়। এই জিনের ঘাটতিতে প্রোটিন ওটোফেরলিনের অভাব ঘটে, যা শ্রবণ প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত জরুরি। গবেষণায় দেখা গেছে, ওটিওএফ জিনের সঠিক কপি ইনজেকশনের মাধ্যমে কানে প্রবেশ করানোর পর অংশগ্রহণকারীদের শ্রবণশক্তি দ্রুত উন্নত হয়েছে।

এখন পর্যন্ত শিশুদের মধ্যে এই থেরাপি সবচেয়ে ভালো ফলাফল দেখিয়েছে। বিজ্ঞানীদের তথ্য অনুযায়ী, থেরাপির ছয় মাস পরে দশজন অংশগ্রহণকারীরই শ্রবণশক্তি গড়ে ১০৬ ডেসিবেল থেকে নেমে এসেছে ৫২ ডেসিবেলে, যা শ্রবণ ক্ষমতার জন্য বড় অগ্রগতি। পাঁচ থেকে আট বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে।

ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের গবেষক মাওলি ডুয়ান জানান, “প্রথমবারের মতো কিশোর ও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই পদ্ধতি পরীক্ষা করা হয়েছে। অংশগ্রহণকারীদের অনেকের শ্রবণশক্তি যথেষ্ট উন্নত হয়েছে। চিকিৎসাটি নিরাপদ এবং কোনো গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়নি।”

তিনি আরও বলেন, এখন বধিরতার অন্যান্য সাধারণ জিন যেমন জিজেবি২ (GJB2) এবং টিএমসি১ (TMC1) নিয়ে গবেষণা চলছে। তবে এসব জিনের চিকিৎসা পদ্ধতি তুলনামূলকভাবে জটিল। তবুও তিনি আশাবাদী, ভবিষ্যতে বিভিন্ন ধরনের জেনেটিক বধিরতার রোগীরাও এ ধরনের চিকিৎসা থেকে উপকার পেতে পারবেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নতুন জিন থেরাপি প্রযুক্তি ভবিষ্যতে শ্রবণ প্রতিবন্ধী মানুষের জীবনে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে।

সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট