গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৪, গুলিবিদ্ধ আরও ৯ জন

- আপডেট সময় ০৯:৫৮:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
- / 6
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। বুধবার বিকেলে এই সহিংসতার ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন গোপালগঞ্জ শহরের দীপ্ত সাহা (২৫), কোটালীপাড়ার রমজান কাজী (১৮), টুঙ্গীপাড়ার সোহেল মোল্লা (৪১) ও সদর উপজেলার ভেড়ার বাজারের ইমন (২৪)।
গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জীবিতেষ বিশ্বাস জানান, বিকেলে তিনজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। পরে রাত সাড়ে সাতটার দিকে চতুর্থ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আরও ৯ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন এবং তাঁদের অস্ত্রোপচার চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে এনসিপির সমাবেশ শেষ হওয়ার পরপরই ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে একদল ব্যক্তি লাঠিসোঁটা নিয়ে নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালান। চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে পুলিশ ও এনসিপির গাড়িতে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। কয়েকটি গাড়ি ও পার্শ্ববর্তী স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাই পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়েছে। তিনি বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, কিন্তু সমাবেশস্থলে এসে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
এ ঘটনার আগে দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কংশুর এলাকায় পুলিশের গাড়িতে আগুন এবং ইউএনওর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে ছাত্রলীগের গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. পিয়ালকে ঘটনাস্থলে লাঠি হাতে দেখা যায়।
এদিকে, নিহত দীপ্ত সাহার চাচা জানান, দীপ্ত দুপুরের খাবার খেয়ে দোকানে যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হন। নিহত রমজানের বাবা বলেন, “আমার ছেলেটা কোনো দোষ করেনি, তবুও ওকে মেরে ফেলা হলো।” নিহত সোহেল মোল্লা ছিলেন শহরের চৌরঙ্গী এলাকার মোবাইল ব্যবসায়ী।
এনসিপির সমাবেশ ঘিরে গোপালগঞ্জে সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনায় জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কেউ এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।