তামাক কর বাড়ানোর দাবি: সিগারেটের মূল্যস্তর কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব
তামাকপণ্যের ওপর কর ও মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও রাজস্ব আয়ের দ্বৈত লক্ষ্য পূরণের আহ্বান জানিয়েছে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা)। তারা আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটের বিদ্যমান চারটি মূল্যস্তর কমিয়ে তিনটি করার জোর দাবি জানিয়েছে।
তাদের মতে, নিম্ন ও মধ্যম স্তরের সিগারেট একত্রিত করে দাম বাড়ানো হলে তরুণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ধূমপান থেকে নিরুৎসাহিত করা সম্ভব হবে। একইসঙ্গে সরকারের রাজস্ব আয় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রজ্ঞা ও আত্মার পক্ষ থেকে বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বিআইআইএসএস-এর রিসার্চ ডিরেক্টর ড. মাহফুজ কবীর, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি দৌলত আকতার মালাসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি।
বক্তারা জানান, বর্তমানে আশি শতাংশের বেশি ধূমপায়ী নিম্ন ও মধ্যম স্তরের সিগারেট ব্যবহার করেন। এই দুটি স্তরকে একীভূত করে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। উচ্চ স্তরে ১৪০ টাকা ও প্রিমিয়াম স্তরে ১৯০ টাকা খুচরা মূল্য প্রস্তাবিত হয়েছে। পাশাপাশি খুচরা মূল্যের ওপর ৬৭% সম্পূরক শুল্ক, ১৫% ভ্যাট ও ১% স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বহাল রাখার দাবি জানানো হয়েছে।
এছাড়া বিড়ি ও অন্যান্য তামাকপণ্যের ক্ষেত্রেও কর বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়। প্রস্তাব অনুযায়ী, ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকা বিড়ির দাম ২৫ টাকা ও ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকার দাম ২০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫% সম্পূরক শুল্ক আরোপের দাবি তোলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রস্তাবিত কর কাঠামো বাস্তবায়িত হলে ২০ হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত রাজস্ব অর্জন সম্ভব। একই সঙ্গে প্রায় ১৭ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু রোধ করা যাবে, যার মধ্যে প্রায় ৯ লাখই তরুণ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে তামাকজনিত রোগে প্রতিবছর মৃত্যু ঘটে এক লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষের। অথচ তামাকপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার নিত্যপণ্যের তুলনায় অতি নগণ্য যেখানে চিনির দাম বেড়েছে ৮৯ শতাংশ, সেখানে সিগারেটের দাম মাত্র ৬-১৫ শতাংশ।