স্বপ্নের যমুনা রেলসেতু উদ্বোধন: যোগাযোগে নতুন দিগন্তের সূচনা

- আপডেট সময় ০২:৪৩:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫
- / 43
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে দেশের বৃহত্তম যমুনা রেলসেতু। টাঙ্গাইলের ইব্রাহিমাবাদ স্টেশনে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক এই সেতুর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলো।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেলওয়ে সচিব ফাহিমুল ইসলাম বলেন, ‘এই সেতু শুধু একটি অবকাঠামো নয়, এটি দেশের যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাইলফলক।’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা সিনচি এবং জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক ইতো তেরুয়াকি। রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন সভায় সভাপতিত্ব করেন।
২০২০ সালের মার্চে যমুনা বহুমুখী সেতুর ৩০০ মিটার উজানে নতুন রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। একই বছরের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মাধ্যমে প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক কাজের সূচনা করেন। প্রথম পিলারের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২১ সালের মার্চে। চার বছরের নিরলস প্রচেষ্টায় নির্মিত সেতুটি দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রেলসেতু।
প্রকল্পটির ব্যয় প্রথমে নির্ধারণ করা হয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা, যা পরবর্তীতে বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। এই বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রায় ৭২ শতাংশ অর্থায়ন করেছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেছে জাপানের ওটিজি ও আইএইচআইসহ পাঁচটি জাপানি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পে বাংলাদেশ, জাপান, ভিয়েতনাম, নেপাল, ফিলিপাইন ও অস্ট্রেলিয়ার সাত হাজারেরও বেশি কর্মী অংশগ্রহণ করেন।
৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রেলসেতুতে রয়েছে ৫০টি পিলার ও ৪৯টি স্প্যান। সেতুর দুই পাশে অ্যাপ্রোচ রেললাইনসহ মোট দৈর্ঘ্য ৩০ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। গত ১২ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষামূলকভাবে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেসের মধ্য দিয়ে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
আজকের উদ্বোধনের পর থেকেই এই সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচলের গতি হবে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। এর ফলে উত্তরের জেলাগুলোর সাথে রাজধানীসহ সারা দেশের রেল যোগাযোগে নতুন যুগের সূচনা হলো।