০২:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম :
নিজামী-মীর কাসেম-সালাউদ্দিন কাদেরকে মিথ্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে: মির্জা ফখরুল ২০২৩ সাল থেকে ইসরায়েলের যুদ্ধের খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৯ থেকে ৬৭ বিলিয়ন ডলার। মার্কিন সেনা ও সিআইএ এজেন্টদের বহিষ্কারের চিন্তা কলম্বিয়া প্রেসিডেন্ট পেত্রোর পেন্টাগনের বড় চুক্তি পেল ট্রাম্পের ছেলের ড্রোন কোম্পানি কেন ট্রাম্প-পুতিনের বুদাপেস্ট বৈঠক বাতিল হলো? হুমকিতে বিশ্বব্যাপী পোলিও টিকাদান কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্রকে ভেনেজুয়েলার হুঁশিয়ারি: “আমাদের হাতে ৫ হাজার রুশ ক্ষেপণাস্ত্র” সিইসির সঙ্গে বিএনপির বৈঠক বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, গভীর সমুদ্রে যাত্রা নিষেধ আতলেতিকোর জালে ১৪ মিনিটে ৪ গোল, দাপুটে জয়ে আর্সেনাল

বিচার বিভাগে স্বাধীনতার জন্য প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন ও সংস্কার জরুরি: প্রধান বিচারপতি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:৩২:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
  • / 39

ছবি সংগৃহীত

 

প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন ছাড়া একটি কার্যকর ও সুষ্ঠু বিচারব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি বলেছেন, বিচার বিভাগের কাঠামোগত স্বাধীনতা শুধু অভ্যন্তরীণ সংস্কার নয়, বরং সামগ্রিক শাসন ব্যবস্থার রূপান্তরের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

গতকাল রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টার মিলনায়তনে আয়োজিত ‘যথাসময়ে বিচার নিশ্চিত করতে পারিবারিক আদালতের পদ্ধতিগত জটিলতা নিরসন’ শীর্ষক জাতীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালাটি আয়োজন করে ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা (সেলপ) কর্মসূচি।

বিজ্ঞাপন

প্রধান বিচারপতি বলেন, “বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ রূপান্তর পর্বে রয়েছে, যেখানে মূল লক্ষ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষের জন্য ন্যায়বিচারকে সহজপ্রাপ্য করে তোলা। সাম্প্রতিক আইনি সংস্কারগুলো কেবল আধুনিকায়নের প্রয়াস নয়, বরং এর মাধ্যমে নাগরিকবান্ধব সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টাও চলেছে।”

তিনি জানান, দেওয়ানি কার্যবিধির সাম্প্রতিক সংশোধনের মাধ্যমে মামলার স্তর কমিয়ে আনা হয়েছে, যা পদ্ধতিগত অদক্ষতা, মামলা পরিচালনায় বিলম্ব ও জটিলতা কমাতে সহায়ক হবে। মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা তুলে ধরার ক্ষেত্রে ব্র্যাক আয়োজিত পাঁচটি আঞ্চলিক কর্মশালারও প্রশংসা করেন তিনি।

এই কর্মশালাগুলোর মাধ্যমে বিচারক, আইনজীবী, কোর্ট কর্মচারী ও বিচারপ্রার্থীদের সরাসরি অংশগ্রহণে সমন জারির জটিলতা, মামলার অনিয়ন্ত্রিত মুলতবি, অসংগঠিত মামলা ব্যবস্থাপনা, পর্যাপ্ত মানসিক সহায়তার অভাব এবং অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান প্রধান বিচারপতি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব বলেন, “পারিবারিক আদালতের ন্যায়বিচার মানে জয় বা পরাজয় নয়, বরং এটি একটি নিরাময় প্রক্রিয়া। এজন্য এ ব্যবস্থাকে আরও সহজপ্রাপ্য, সহানুভূতিশীল ও দ্রুততর করতে হবে।”

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ বলেন, “আমরা এমন একটি সমাজে বিশ্বাস করি, যেখানে প্রতিটি নারী ও কিশোরী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে নিজের পূর্ণ সম্ভাবনা বাস্তবায়নের সুযোগ পাবে। এজন্য ব্র্যাক জনগণকে সম্পৃক্ত করা, তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নীতিগত ও আইনগত সহায়তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।”

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ব্র্যাকের সেলপ ও জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি (জিজেডি) কর্মসূচির সহযোগী পরিচালক শাশ্বতী বিপ্লব বলেন, “আমরা শুধু আদালতের জটিলতা কমাতে নয়, বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতেও কাজ করছি। আমাদের লক্ষ্য একটি ন্যায়সঙ্গত ও সমতাভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা, যেখানে প্রতিটি বিচারপ্রার্থী সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে বিচার পাবে।”

এই কর্মশালাটি বিচার ব্যবস্থার কাঠামোগত সংস্কার এবং মানুষের জন্য ন্যায়বিচারকে সহজলভ্য করার আন্দোলনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

বিচার বিভাগে স্বাধীনতার জন্য প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন ও সংস্কার জরুরি: প্রধান বিচারপতি

আপডেট সময় ১২:৩২:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

 

প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন ছাড়া একটি কার্যকর ও সুষ্ঠু বিচারব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি বলেছেন, বিচার বিভাগের কাঠামোগত স্বাধীনতা শুধু অভ্যন্তরীণ সংস্কার নয়, বরং সামগ্রিক শাসন ব্যবস্থার রূপান্তরের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

গতকাল রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টার মিলনায়তনে আয়োজিত ‘যথাসময়ে বিচার নিশ্চিত করতে পারিবারিক আদালতের পদ্ধতিগত জটিলতা নিরসন’ শীর্ষক জাতীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালাটি আয়োজন করে ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা (সেলপ) কর্মসূচি।

বিজ্ঞাপন

প্রধান বিচারপতি বলেন, “বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ রূপান্তর পর্বে রয়েছে, যেখানে মূল লক্ষ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষের জন্য ন্যায়বিচারকে সহজপ্রাপ্য করে তোলা। সাম্প্রতিক আইনি সংস্কারগুলো কেবল আধুনিকায়নের প্রয়াস নয়, বরং এর মাধ্যমে নাগরিকবান্ধব সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টাও চলেছে।”

তিনি জানান, দেওয়ানি কার্যবিধির সাম্প্রতিক সংশোধনের মাধ্যমে মামলার স্তর কমিয়ে আনা হয়েছে, যা পদ্ধতিগত অদক্ষতা, মামলা পরিচালনায় বিলম্ব ও জটিলতা কমাতে সহায়ক হবে। মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা তুলে ধরার ক্ষেত্রে ব্র্যাক আয়োজিত পাঁচটি আঞ্চলিক কর্মশালারও প্রশংসা করেন তিনি।

এই কর্মশালাগুলোর মাধ্যমে বিচারক, আইনজীবী, কোর্ট কর্মচারী ও বিচারপ্রার্থীদের সরাসরি অংশগ্রহণে সমন জারির জটিলতা, মামলার অনিয়ন্ত্রিত মুলতবি, অসংগঠিত মামলা ব্যবস্থাপনা, পর্যাপ্ত মানসিক সহায়তার অভাব এবং অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান প্রধান বিচারপতি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব বলেন, “পারিবারিক আদালতের ন্যায়বিচার মানে জয় বা পরাজয় নয়, বরং এটি একটি নিরাময় প্রক্রিয়া। এজন্য এ ব্যবস্থাকে আরও সহজপ্রাপ্য, সহানুভূতিশীল ও দ্রুততর করতে হবে।”

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ বলেন, “আমরা এমন একটি সমাজে বিশ্বাস করি, যেখানে প্রতিটি নারী ও কিশোরী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে নিজের পূর্ণ সম্ভাবনা বাস্তবায়নের সুযোগ পাবে। এজন্য ব্র্যাক জনগণকে সম্পৃক্ত করা, তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নীতিগত ও আইনগত সহায়তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।”

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ব্র্যাকের সেলপ ও জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি (জিজেডি) কর্মসূচির সহযোগী পরিচালক শাশ্বতী বিপ্লব বলেন, “আমরা শুধু আদালতের জটিলতা কমাতে নয়, বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতেও কাজ করছি। আমাদের লক্ষ্য একটি ন্যায়সঙ্গত ও সমতাভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা, যেখানে প্রতিটি বিচারপ্রার্থী সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে বিচার পাবে।”

এই কর্মশালাটি বিচার ব্যবস্থার কাঠামোগত সংস্কার এবং মানুষের জন্য ন্যায়বিচারকে সহজলভ্য করার আন্দোলনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।