ঢাকা ০৯:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সন্ত্রাসী ইহুদিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে আমাদের জবাব হবে কঠোর ও চূড়ান্ত: খামেনি ১১ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা: এনবিআর সাবেক র‍্যাব কর্মকর্তা সোহায়েল গুম মামলায় গ্রেপ্তার, কারাগারে প্রেরণ ঈদযাত্রায় সড়কে প্রতিদিন গড় মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের: রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের জাতীয় সংবিধানিক কাউন্সিল গঠনে একমত নাগরিক পার্টি, কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য: নাহিদ ইসলাম এসএসএফকে কাজ করতে হবে সব দলমতের ঊর্ধ্বে থেকে: প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস-তারেক বৈঠকে আপত্তি একটি দলের, মন্তব্য মির্জা ফখরুলের শাহবাগ-পল্টন থানার দুই মামলায় আনিসুল হকসহ ৩ জনের রিমান্ড মঞ্জুর কুয়ালালামপুরে ফের গুলির ঘটনা, শপিংমলের সামনে ২ জনকে হত্যা মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতায় বিশ্ববাজারে আবারও বেড়েছে স্বর্ণ-রুপার দাম

ঈদযাত্রায় সড়কে প্রতিদিন গড় মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের: রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৮:১৯:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
  • / 0

ছবি সংগৃহীত

 

ঈদুল আজহা উপলক্ষে মাত্র ১২ দিনের যাত্রায় দেশের সড়কে প্রাণ হারিয়েছেন ৩১২ জন মানুষ, যা দৈনিক গড়ে ২৬ জন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও এক হাজার ৫৭ জন। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন বলছে, ৩ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সারা দেশে ৩৪৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় এ মর্মান্তিক চিত্র উঠে এসেছে।

বুধবার (১৮ জুন) সকালে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটি ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম এবং সংগঠনটির নিজস্ব তথ্যে ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুর্ঘটনাগুলোতে দেশের মানব সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ হাজার ২১৮ কোটি টাকায়। যদিও, বাস্তবে ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

নিহতদের মধ্যে ৪৭ জন নারী এবং ৬৩ জন শিশু রয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১০৭ জন, যা মোট মৃত্যুর ৩৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। এছাড়া, ৫১ জন চালক ও সহকারী এবং ৪৪ জন পথচারীও নিহত হয়েছেন।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে জাতীয় মহাসড়কে ১৩৬টি (৩৯.১৯%), এরপর আঞ্চলিক সড়কে ১২১টি এবং শহরাঞ্চলে ৫৬টি। যানবাহনের ধরন অনুযায়ী সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ছিল মোটরসাইকেল, থ্রি-হুইলার ও স্থানীয়ভাবে তৈরি ফিটনেসবিহীন বাহন। বিশেষ করে ১৪ থেকে ২০ বছর বয়সী কিশোর ও তরুণদের বেপরোয়া বাইক চালানো দুর্ঘটনার হার বাড়িয়ে দেয় যেখানে এই বয়সীদের মধ্যে মৃত্যুর হার ৫৪ শতাংশেরও বেশি।

বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে ১১৬টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৮৭ জন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছিল ব্যতিক্রম; সেখানে কোনো প্রাণহানির তথ্য পাওয়া যায়নি।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন জানায়, এবার ঈদে ঢাকা থেকে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ এবং দেশব্যাপী প্রায় ৪ কোটির বেশি মানুষ যাতায়াত করেছে। সীমিত ছুটির কারণে একসঙ্গে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে। গণপরিবহনের সংকটে অনেকে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবহনে যাত্রা করেছেন বাসের ছাদ, ট্রাক, পিকআপ ও ইজিবাইকসহ।

ফাউন্ডেশন বলছে, যানবাহনের ফিটনেসের অভাব, অতিরিক্ত ভাড়া, চালকদের বিশ্রামহীন ড্রাইভিং, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা ও বৈরী আবহাওয়ায় এবারের ঈদযাত্রা ছিল চরম ঝুঁকিপূর্ণ। এমনকি, এক পরিবারের সবাই নিহত হওয়ার মতো হৃদয়বিদারক ঘটনাও ঘটেছে একাধিকবার।

এই বিপর্যয় থেকে উত্তরণে সংস্থাটি মধ্য-মেয়াদি সমন্বিত পরিকল্পনার ওপর জোর দিয়েছে রেল ও নৌপথ উন্নয়ন, বিআরটিসির রুট সম্প্রসারণ, ঝুঁকিপূর্ণ বাহনের চলাচল নিষিদ্ধ, পোশাক শ্রমিকদের ধাপে ছুটি প্রদান, চালকদের চাকরি সুরক্ষা ও পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার প্রস্তাব করেছে।

সংস্থাটির মতে, সড়ক পরিবহন খাতে অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বহীনতার কারণেই প্রতিনিয়ত ঘটছে প্রাণহানি। কার্যকর ব্যবস্থাপনা ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ছাড়া এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ঈদযাত্রায় সড়কে প্রতিদিন গড় মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের: রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের

আপডেট সময় ০৮:১৯:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

 

ঈদুল আজহা উপলক্ষে মাত্র ১২ দিনের যাত্রায় দেশের সড়কে প্রাণ হারিয়েছেন ৩১২ জন মানুষ, যা দৈনিক গড়ে ২৬ জন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও এক হাজার ৫৭ জন। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন বলছে, ৩ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সারা দেশে ৩৪৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় এ মর্মান্তিক চিত্র উঠে এসেছে।

বুধবার (১৮ জুন) সকালে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটি ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম এবং সংগঠনটির নিজস্ব তথ্যে ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুর্ঘটনাগুলোতে দেশের মানব সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ হাজার ২১৮ কোটি টাকায়। যদিও, বাস্তবে ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

নিহতদের মধ্যে ৪৭ জন নারী এবং ৬৩ জন শিশু রয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১০৭ জন, যা মোট মৃত্যুর ৩৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। এছাড়া, ৫১ জন চালক ও সহকারী এবং ৪৪ জন পথচারীও নিহত হয়েছেন।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে জাতীয় মহাসড়কে ১৩৬টি (৩৯.১৯%), এরপর আঞ্চলিক সড়কে ১২১টি এবং শহরাঞ্চলে ৫৬টি। যানবাহনের ধরন অনুযায়ী সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ছিল মোটরসাইকেল, থ্রি-হুইলার ও স্থানীয়ভাবে তৈরি ফিটনেসবিহীন বাহন। বিশেষ করে ১৪ থেকে ২০ বছর বয়সী কিশোর ও তরুণদের বেপরোয়া বাইক চালানো দুর্ঘটনার হার বাড়িয়ে দেয় যেখানে এই বয়সীদের মধ্যে মৃত্যুর হার ৫৪ শতাংশেরও বেশি।

বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে ১১৬টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৮৭ জন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছিল ব্যতিক্রম; সেখানে কোনো প্রাণহানির তথ্য পাওয়া যায়নি।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন জানায়, এবার ঈদে ঢাকা থেকে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ এবং দেশব্যাপী প্রায় ৪ কোটির বেশি মানুষ যাতায়াত করেছে। সীমিত ছুটির কারণে একসঙ্গে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে। গণপরিবহনের সংকটে অনেকে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবহনে যাত্রা করেছেন বাসের ছাদ, ট্রাক, পিকআপ ও ইজিবাইকসহ।

ফাউন্ডেশন বলছে, যানবাহনের ফিটনেসের অভাব, অতিরিক্ত ভাড়া, চালকদের বিশ্রামহীন ড্রাইভিং, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা ও বৈরী আবহাওয়ায় এবারের ঈদযাত্রা ছিল চরম ঝুঁকিপূর্ণ। এমনকি, এক পরিবারের সবাই নিহত হওয়ার মতো হৃদয়বিদারক ঘটনাও ঘটেছে একাধিকবার।

এই বিপর্যয় থেকে উত্তরণে সংস্থাটি মধ্য-মেয়াদি সমন্বিত পরিকল্পনার ওপর জোর দিয়েছে রেল ও নৌপথ উন্নয়ন, বিআরটিসির রুট সম্প্রসারণ, ঝুঁকিপূর্ণ বাহনের চলাচল নিষিদ্ধ, পোশাক শ্রমিকদের ধাপে ছুটি প্রদান, চালকদের চাকরি সুরক্ষা ও পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার প্রস্তাব করেছে।

সংস্থাটির মতে, সড়ক পরিবহন খাতে অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বহীনতার কারণেই প্রতিনিয়ত ঘটছে প্রাণহানি। কার্যকর ব্যবস্থাপনা ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ছাড়া এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।