বিপদে অতিথি পাখিরা
কুষ্টিয়ার পদ্মার চরে শিকারিদের লোভের শিকার অতিথি পাখি
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মার চরে চলছে অতিথি পাখি শিকার। শিকারিরা ফাঁদ পেতে ও দেশীয় বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে এসব দেশি-বিদেশি অতিথি পাখি শিকার করছে। এতে করে স্থানীয় জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের ভারসাম্য হুমকির মুখে পড়েছে।
শীতের শুরুতেই প্রতিবছরের মতো এবারও ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখি আশ্রয় নিয়েছে পদ্মার চরে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে শিকারিরা বিক্রির জন্য পাখি ধরার ধুম শুরু করেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এবার বুনো হাঁস, শামুকখোল, বড় সারস, ছোট সারস, বালিহাঁস, হরিয়াল, রাজসরালি, রামঘুঘু, নিশাচর ডুবুরি এবং আরও অনেক প্রজাতির পাখি শিকার করা হচ্ছে। এসব পাখি স্থানীয় ও দূরবর্তী বাজারে বিক্রি হচ্ছে অথবা শিকারিরা নিজেরাই রান্না করে খাচ্ছে।
জানা গেছে, উপজেলার মরিচা, ফিলিপনগর, রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের পদ্মার চরগুলোতে বিপুল পরিমাণ অতিথি পাখি এসেছে। শিকারিরা বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চরে অবস্থান করে বড় বড় জাল পেতে ফাঁদ তৈরি করছে। ফাঁদে আটকা পড়া পাখিগুলো ভোরেই স্থানীয় বাজারে নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে পরিবেশ সংগঠকরা জানিয়েছেন, পাখি শিকার বন্ধে প্রশাসনের কার্যকরী ভূমিকা প্রয়োজন। বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক এবং কুষ্টিয়া বার্ড ক্লাবের সভাপতি এসআই সোহেল বলেন, “পাখি শিকার দণ্ডনীয় অপরাধ। এটি শুধু পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয়, আমাদের জীববৈচিত্র্যের জন্যও বড় হুমকি। বন বিভাগ ও প্রশাসনকে এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে।”
দৌলতপুর উপজেলার বন কর্মকর্তা আবুবকর সিদ্দিক জানান, “আমরা বিষয়টি অবগত হয়েছি এবং শিকারিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। শীঘ্রই দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অতিথি পাখি শিকার সম্পূর্ণ বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ প্রয়োজন।”