থ্যালাসেমিয়া রোগ নির্মূলে জনসচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ বাণিজ্য উপদেষ্টার

- আপডেট সময় ০৬:০৭:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫
- / 5
আগামী দশ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে থ্যালাসেমিয়া রোগ নির্মূলের লক্ষ্যে কার্যকর কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের ওপর জোর দিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
বুধবার (৭ মে) আন্তর্জাতিক থ্যালাসেমিয়া দিবস ২০২৫ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত একজন রোগীর চিকিৎসা ব্যয় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এ রোগে আক্রান্তদের জন্য অতিরিক্ত আর্থিক সহায়তা নেই।”
তিনি আরও জানান, দেশে ১০ থেকে ১১ শতাংশ মানুষ থ্যালাসেমিয়া বাহক। এদের মধ্যে মাত্র ১ শতাংশ যদি রোগী হয়, তবে চিকিৎসা খাতে দুই থেকে দশ হাজার কোটি টাকার মতো খরচ হতে পারে। যা দেশের জন্য এক বিশাল আর্থিক চাপ। তাই সচেতনতা বাড়িয়ে এই ব্যয় কমানো জরুরি বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে সমাজজুড়ে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি করা প্রয়োজন। বিশেষ করে বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা নিশ্চিত করা গেলে অনেকাংশে এ রোগ প্রতিরোধ সম্ভব। বিটা থ্যালাসেমিয়া বাহক দুইজন ব্যক্তি বিয়ে করলে তাঁদের সন্তানের থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। অথচ বাহক হলেও একজন ব্যক্তি স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে।
তিনি বিবাহ নিবন্ধনকারী কাজী, ধর্মীয় নেতা এবং স্কুলশিক্ষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই বিষয়ে সচেতনতা তৈরির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। সামাজিক নানা প্ল্যাটফর্মে বিয়ের পূর্বে রক্ত পরীক্ষার বিষয়টি আলোচনায় আনার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে তিনি নিজের রক্ত পরীক্ষা করিয়ে থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের ম্যানেজমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. একেএম আজিজুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ডা. মো. সেলিমুজ্জামান, ডা. আরেফিন এবং প্রফেসর ডা. মো. মনির হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক প্রফেসর ডা. মো. মাহবুবুল হক।
উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী থ্যালাসেমিয়া দিবস পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশে ১৯৯৮ সালে শিশু হাসপাতালে এ রোগের চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়। এ বছরের প্রতিপাদ্য “থ্যালাসেমিয়ার জন্য সামাজিক ঐক্য গড়ি, রোগীর অগ্রাধিকার নিশ্চিত করি।”
অনুষ্ঠানের আগে আয়োজিত শোভাযাত্রা রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে দিনব্যাপী কর্মসূচির সূচনা করে।