ঢাকা ০৮:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫, ১৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
আকাশে বিরল বিস্ফোরণের দৃশ্য: আজ দেখা যেতে পারে ‘নোভা’র চমক গাড়ি আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক: ট্রাম্পের ঘোষণা ঘিরে বৈশ্বিক উদ্বেগ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় সজ্জিত সুইসাইড’ বা আত্মঘাতী ড্রোনের সফল পরীক্ষা তদারকি করেলন কিম জং উন: নতুন সামরিক রূপে উত্তর কোরিয়া ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সুপারিশে ক্ষুব্ধ দিল্লি ঈদ উৎসবে ঐতিহ্যের ছোঁয়া: উত্তরে প্রস্তুতি চলছে বর্ণিল ঈদ মিছিলের- জানালেন আসিফ মাহমুদ দুর্নীতির মামলায় জি কে শামীমের সাড়ে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড, খালাস পেয়েছেন মা, বাজেয়াপ্ত ২৯৭ কোটি টাকা ঐতিহ্য আর ভক্তির মিলনমেলা—তিতাস নদীতে গঙ্গাস্নান ও লোকজ উৎসব ভারত থেকে আসল আরও ৯ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চাল, মোট আমদানির পরিমাণ ছাড়াল প্রায় ৩ লাখ টন এশিয়ার অভিন্ন ভবিষ্যৎ গঠনে যৌথ রোডম্যাপের আহ্বান ড. ইউনূসের ঈদের ৯ দিনের ছুটি, তবুও স্থবির হবে না অর্থনীতি: ড. সালেহউদ্দিন

আইফেল টাওয়ারে হিজাবের বিজ্ঞাপন, ফ্রান্সে তীব্র বিতর্ক ও মতবিরোধ

খবরের কথা ডেস্ক

ছবি সংগৃহীত

 

ফ্রান্সে আবারও ধর্মীয় পোশাককে ঘিরে উত্তপ্ত বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে হিজাব। সম্প্রতি ইসলামি পোশাক ব্র্যান্ড ‘মেরাচি’ তাদের একটি ইনস্টাগ্রাম বিজ্ঞাপনে প্যারিসের প্রতীক আইফেল টাওয়ারকে হিজাবে আবৃত করে প্রচারণা চালায়। এই বিজ্ঞাপন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই দেশজুড়ে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা ও মতপার্থক্য।

বিখ্যাত সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমস জানিয়েছে, ফ্রান্সে স্কুল ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে হিজাব পরা আইনিভাবে নিষিদ্ধ। এমন বাস্তবতায় দেশটির জাতীয় টেলিভিশন, রেডিও এবং সংবাদমাধ্যমগুলোতে বিজ্ঞাপনটি ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।

ফরাসি সংবাদ চ্যানেল বিএফএম-এর রাজনৈতিক বিশ্লেষক লরেন্ট নিউম্যান বলেন, “যদিও হিজাব ফ্রান্সে কেবল স্কুলে নিষিদ্ধ, তবুও মেরাচির এই প্রচারণা সরল নয়। তারা দাবি করছে, এটি নিছক ‘বিনয়ী ফ্যাশন’, অথচ এর ধর্মীয় বার্তা সুস্পষ্ট।”

লে পয়েন্ত ম্যাগাজিনের সম্পাদক জেরালদিন ভোসনার মন্তব্য করেন, “বিজ্ঞাপনটি একটি বিভাজনমূলক বার্তা দেয়। এটি যেন বলছে, যারা হিজাব পরেন না, তারা বিনয়ী নন। এই মনোভাব ফ্রান্সের ধর্মনিরপেক্ষ সমাজে বিভেদ বাড়াতে পারে।”

ফ্রান্স এমন এক দেশ, যেখানে ধর্মীয় প্রতীক এবং পোশাক নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলে আসছে। দেশটির ‘লা-সিসিতে’ (ধর্মনিরপেক্ষতা) বিশ্বাসী সমাজে হিজাবকে অনেকেই রাজনৈতিক বা ধর্মীয় প্রতীক হিসেবে দেখে থাকেন। আবার, মুসলিম নারীদের একটি বড় অংশ একে তাদের বিশ্বাস ও মর্যাদার প্রতীক বলে মনে করেন।

এই বিজ্ঞাপন সেই পুরনো বিতর্ককে নতুন করে উসকে দিয়েছে। কেউ এটিকে শিল্প ও স্বাধীন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হিসেবে দেখছেন, কেউবা ধর্মীয় আগ্রাসনের ইঙ্গিত হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন।

সব মিলিয়ে, ‘মেরাচি’র এই প্রচারণা আবারও মনে করিয়ে দিল ফ্যাশনের আড়ালে ধর্ম, রাজনীতি ও সংস্কৃতির টানাপোড়েন ফ্রান্সে কতটা সংবেদনশীল ও বহুমাত্রিক।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ১২:২৪:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫
৫১০ বার পড়া হয়েছে

আইফেল টাওয়ারে হিজাবের বিজ্ঞাপন, ফ্রান্সে তীব্র বিতর্ক ও মতবিরোধ

আপডেট সময় ১২:২৪:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

 

ফ্রান্সে আবারও ধর্মীয় পোশাককে ঘিরে উত্তপ্ত বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে হিজাব। সম্প্রতি ইসলামি পোশাক ব্র্যান্ড ‘মেরাচি’ তাদের একটি ইনস্টাগ্রাম বিজ্ঞাপনে প্যারিসের প্রতীক আইফেল টাওয়ারকে হিজাবে আবৃত করে প্রচারণা চালায়। এই বিজ্ঞাপন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই দেশজুড়ে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা ও মতপার্থক্য।

বিখ্যাত সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমস জানিয়েছে, ফ্রান্সে স্কুল ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে হিজাব পরা আইনিভাবে নিষিদ্ধ। এমন বাস্তবতায় দেশটির জাতীয় টেলিভিশন, রেডিও এবং সংবাদমাধ্যমগুলোতে বিজ্ঞাপনটি ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।

ফরাসি সংবাদ চ্যানেল বিএফএম-এর রাজনৈতিক বিশ্লেষক লরেন্ট নিউম্যান বলেন, “যদিও হিজাব ফ্রান্সে কেবল স্কুলে নিষিদ্ধ, তবুও মেরাচির এই প্রচারণা সরল নয়। তারা দাবি করছে, এটি নিছক ‘বিনয়ী ফ্যাশন’, অথচ এর ধর্মীয় বার্তা সুস্পষ্ট।”

লে পয়েন্ত ম্যাগাজিনের সম্পাদক জেরালদিন ভোসনার মন্তব্য করেন, “বিজ্ঞাপনটি একটি বিভাজনমূলক বার্তা দেয়। এটি যেন বলছে, যারা হিজাব পরেন না, তারা বিনয়ী নন। এই মনোভাব ফ্রান্সের ধর্মনিরপেক্ষ সমাজে বিভেদ বাড়াতে পারে।”

ফ্রান্স এমন এক দেশ, যেখানে ধর্মীয় প্রতীক এবং পোশাক নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলে আসছে। দেশটির ‘লা-সিসিতে’ (ধর্মনিরপেক্ষতা) বিশ্বাসী সমাজে হিজাবকে অনেকেই রাজনৈতিক বা ধর্মীয় প্রতীক হিসেবে দেখে থাকেন। আবার, মুসলিম নারীদের একটি বড় অংশ একে তাদের বিশ্বাস ও মর্যাদার প্রতীক বলে মনে করেন।

এই বিজ্ঞাপন সেই পুরনো বিতর্ককে নতুন করে উসকে দিয়েছে। কেউ এটিকে শিল্প ও স্বাধীন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হিসেবে দেখছেন, কেউবা ধর্মীয় আগ্রাসনের ইঙ্গিত হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন।

সব মিলিয়ে, ‘মেরাচি’র এই প্রচারণা আবারও মনে করিয়ে দিল ফ্যাশনের আড়ালে ধর্ম, রাজনীতি ও সংস্কৃতির টানাপোড়েন ফ্রান্সে কতটা সংবেদনশীল ও বহুমাত্রিক।