ঢাকা ০৭:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রাণঘাতী বিমান হামলার পর এবার গাজায় শুরু হলো স্থল অভিযান, যুদ্ধের ভয়াবহ রূপ স্পষ্ট

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০১:৫৬:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫
  • / 23

ছবি: সংগৃহীত

 

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় নিহতের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। বুধবারের (১৯ মার্চ) হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৭০ ফিলিস্তিনি। টানা দুই দিন ব্যাপক বিমান হামলার পর এবার স্থল অভিযানে নেমেছে ইসরায়েলি সেনারা। আলজাজিরার সংবাদদাতা নিশ্চিত করেছেন, এই নতুন আক্রমণের ফলে জানুয়ারির পর থেকে চলমান ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি কার্যত ভেঙে পড়েছে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, সেনারা নেতজারিম করিডরে প্রবেশ করেছে, যা গাজার উত্তর ও দক্ষিণকে বিভক্ত করে। তারা একযোগে গাজার দুই দিকেই স্থল অভিযান শুরু করেছে।

উত্তর গাজার বেইত হানুনসহ বিভিন্ন এলাকায় সামরিক বাহিনীর উপস্থিতির পর সেখানে জনগণকে স্থানত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশাল এলাকা খালি করার জন্য ইসরায়েল একের পর এক নির্দেশ জারি করছে, যা নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোর মধ্যে। যুদ্ধবিরতির আশায় যারা নিজ বাড়িতে ফিরেছিল, তারা আবারও বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ গাড়িতে করে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ১৮৩ শিশুসহ কমপক্ষে ৪৩৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

এদিকে জাতিসংঘ জানিয়েছে, দেইর আল-বালাহতে তাদের কম্পাউন্ডে বিস্ফোরণে এক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে তীব্র যুদ্ধ শুরু হয়েছে এবং তা আরও বিস্তৃত হতে পারে। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় হামাস আমাদের সেনাদের শক্তি বুঝতে পেরেছে, কিন্তু এটি কেবল শুরু। আমাদের সব জিম্মিকে মুক্ত করতে হবে, হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূল করতে হবে এবং গাজাকে ইসরায়েলের জন্য আর কোনো হুমকি হতে দেওয়া যাবে না।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এক ভিডিও বার্তায় গাজায় ‘শেষ সতর্কতা’ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, হামাস যদি আটক জিম্মিদের ফিরিয়ে না দেয়, তবে এর পরিণতি হবে ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস ও ধ্বংসযজ্ঞ’। ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাসের কাছে এখনো ৫৯ জন জিম্মি রয়েছে, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গাজার আকাশে যুদ্ধবিমানের গর্জন, ধ্বংসস্তূপের ভেতর নিঃস্ব মানুষের আর্তনাদ এই দুই মিলিয়ে গোটা অঞ্চল যেন এক ভয়ংকর যুদ্ধমঞ্চে পরিণত হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

প্রাণঘাতী বিমান হামলার পর এবার গাজায় শুরু হলো স্থল অভিযান, যুদ্ধের ভয়াবহ রূপ স্পষ্ট

আপডেট সময় ০১:৫৬:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

 

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় নিহতের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। বুধবারের (১৯ মার্চ) হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৭০ ফিলিস্তিনি। টানা দুই দিন ব্যাপক বিমান হামলার পর এবার স্থল অভিযানে নেমেছে ইসরায়েলি সেনারা। আলজাজিরার সংবাদদাতা নিশ্চিত করেছেন, এই নতুন আক্রমণের ফলে জানুয়ারির পর থেকে চলমান ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি কার্যত ভেঙে পড়েছে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, সেনারা নেতজারিম করিডরে প্রবেশ করেছে, যা গাজার উত্তর ও দক্ষিণকে বিভক্ত করে। তারা একযোগে গাজার দুই দিকেই স্থল অভিযান শুরু করেছে।

উত্তর গাজার বেইত হানুনসহ বিভিন্ন এলাকায় সামরিক বাহিনীর উপস্থিতির পর সেখানে জনগণকে স্থানত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশাল এলাকা খালি করার জন্য ইসরায়েল একের পর এক নির্দেশ জারি করছে, যা নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোর মধ্যে। যুদ্ধবিরতির আশায় যারা নিজ বাড়িতে ফিরেছিল, তারা আবারও বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ গাড়িতে করে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ১৮৩ শিশুসহ কমপক্ষে ৪৩৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

এদিকে জাতিসংঘ জানিয়েছে, দেইর আল-বালাহতে তাদের কম্পাউন্ডে বিস্ফোরণে এক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে তীব্র যুদ্ধ শুরু হয়েছে এবং তা আরও বিস্তৃত হতে পারে। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় হামাস আমাদের সেনাদের শক্তি বুঝতে পেরেছে, কিন্তু এটি কেবল শুরু। আমাদের সব জিম্মিকে মুক্ত করতে হবে, হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূল করতে হবে এবং গাজাকে ইসরায়েলের জন্য আর কোনো হুমকি হতে দেওয়া যাবে না।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এক ভিডিও বার্তায় গাজায় ‘শেষ সতর্কতা’ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, হামাস যদি আটক জিম্মিদের ফিরিয়ে না দেয়, তবে এর পরিণতি হবে ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস ও ধ্বংসযজ্ঞ’। ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাসের কাছে এখনো ৫৯ জন জিম্মি রয়েছে, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গাজার আকাশে যুদ্ধবিমানের গর্জন, ধ্বংসস্তূপের ভেতর নিঃস্ব মানুষের আর্তনাদ এই দুই মিলিয়ে গোটা অঞ্চল যেন এক ভয়ংকর যুদ্ধমঞ্চে পরিণত হয়েছে।