দীর্ঘ ১০ মাস পর পৃথিবীতে ফিরছেন মার্কিন নভোচারী সুনিতা ও বুচ

- আপডেট সময় ১০:৫১:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫
- / 34
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) দীর্ঘ ১০ মাস আটকে থাকার পর অবশেষে পৃথিবীতে ফিরছেন মার্কিন নভোচারী বুচ উইলমোর ও সুনিতা উইলিয়ামস। নির্ধারিত মিশন শেষে দ্রুত ফেরার কথা থাকলেও মহাকাশযানের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তাঁরা ফিরে আসতে পারেননি। তবে সব জটিলতা কাটিয়ে আগামী বুধবার তাঁরা পৃথিবীতে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
গতকাল সোমবার মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের ফেরার দিনক্ষণ নিশ্চিত করেছে। একই সঙ্গে মহাকাশ থেকে ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছে।
নাসা ও স্পেসএক্স যৌথভাবে তাঁদের ফেরাতে ক্রু-১০ মিশন পরিচালনা করেছে। গত রোববার মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছানো স্পেসএক্সের ক্রু ড্রাগন মহাকাশযান এবার তাঁদের ফিরিয়ে আনবে। সুনিতা ও বুচ গত বছরের জুন থেকে আইএসএস-এ অবস্থান করছেন। বোয়িংয়ের স্টারলাইনার মহাকাশযানের ত্রুটির কারণে তাঁরা ফিরে আসতে পারেননি। বাধ্য হয়ে নাসা যানটি খালি অবস্থায় পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনে এবং তাঁদের ফিরিয়ে আনার জন্য নতুন পরিকল্পনা নেয়। নাসা জানায়, নভোচারীদের ফেরানোর জন্য ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে গত শুক্রবার স্পেসএক্সের ক্রু ড্রাগন উৎক্ষেপণ করা হয়। প্রায় ২৯ ঘণ্টার যাত্রা শেষে এটি গত রোববার আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে পৌঁছায়।
স্পেসএক্সের এই নতুন মিশনে মহাকাশ স্টেশনে ছয় মাসের জন্য চারজন নভোচারী যোগ দিয়েছেন। তাঁরা হলেন অ্যান ম্যাকক্লেইন, নিকোল আয়ার্স, জাপানের তাকুয়া অনিশি ও রাশিয়ার কিরিল পেসকভ। এদিকে, মহাকাশ স্টেশনে থাকা সাতজন নভোচারীর সঙ্গে স্থান বদল করে এবার পৃথিবীতে ফিরবেন সুনিতা উইলিয়ামস, বুচ উইলমোর, নাসার নিক হেগ এবং রাশিয়ার আলেকসান্দর গরবুনোভ।
বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী মহাকাশযান ক্রু ড্রাগন ইতোমধ্যেই আইএসএস থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। শূন্য মাধ্যাকর্ষণের পরিবেশ থেকে পৃথিবীর অভিকর্ষজ জগতে ফেরার এ প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল। এই মিশন নিয়ে রাজনীতিও হয়েছে। ট্রাম্প ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক দাবি করেন, ট্রাম্পের পূর্বসূরি জো বাইডেনের প্রশাসনের অবহেলার কারণেই সুনিতা ও বুচ এতদিন মহাকাশে আটকে ছিলেন। যদিও এর কোনো প্রমাণ নাসা দেয়নি।
মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফেরার এই জটিল প্রক্রিয়া বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে। আবহাওয়া, মহাকাশযানের অবস্থা, সমুদ্রের পরিস্থিতি এবং পুনরুদ্ধার দলের প্রস্তুতি সবকিছুই ভূমিকা রাখবে। যদি কোনো সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে ফেরার দিনক্ষণ আবার পরিবর্তিত হতে পারে।
দীর্ঘ সময় শূন্য মাধ্যাকর্ষণে থাকার ফলে নভোচারীদের শরীরে নানা পরিবর্তন ঘটে। অস্থিমজ্জার ঘনত্ব কমে যাওয়া, পেশির দুর্বলতা এবং রক্তচাপের পরিবর্তন তাদের জন্য সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই পৃথিবীতে ফেরার পর তাঁদের বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।