আটকে পড়া মহাকাশচারীদের উদ্ধারে মহাকাশযান অবশেষে রওনা দিল, মহাকাশ থেকে ফিরছেন সুনীতা ও ব্যারি
দীর্ঘ নয় মাস পর অবশেষে পৃথিবীতে ফিরছেন মহাকাশে আটকে পড়া নাসার দুই মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস ও ব্যারি বুচ উইলমোর। তাদের ফেরানোর অপেক্ষায় ছিল গোটা বিশ্ব। স্পেসএক্স ও নাসার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তাদের প্রত্যাবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্পেসএক্সের ফ্যালকন ৯ রকেট চার নভোচারীকে নিয়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের (আইএসএস) উদ্দেশে যাত্রা করে। এই নতুন ক্রুরাই মহাকাশে দীর্ঘ সময় অবস্থান করা সুনীতা ও ব্যারির স্থলাভিষিক্ত হবেন। নতুন অভিযাত্রীদের মধ্যে নাসার দুই নভোচারীর পাশাপাশি জাপান ও রাশিয়ার একজন করে প্রতিনিধি রয়েছেন।
উৎক্ষেপণের পর নাসার আইএসএস প্রোগ্রামের ডেপুটি ম্যানেজার ডিনা কনটেলাম জানান, মহাকাশ স্টেশনে থাকাকালীন সুনীতা ও ব্যারি যখন তাদের স্বাভাবিক রুটিন অনুসারে বিশ্রামে ছিলেন, তখনই ক্রু-১০ মিশনের উৎক্ষেপণ সম্পন্ন হয়।
আগামী শনিবার রাত ১১টা ৩০ মিনিটে নতুন ক্রুদের মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। সব কিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোলে, আগামী বুধবার সুনীতা ও ব্যারি পৃথিবীতে ফিরে আসবেন। নাসার মহাকাশচারী নিক হেগ ও রাশিয়ান মহাকাশচারী আলেকজান্ডার গর্বুনভের সঙ্গে ভোর ৪টায় (০৮০০ জিএমটি) তাদের রওনা দেওয়ার কথা রয়েছে।
গত বছরের জুনে সুনীতা উইলিয়ামস ও ব্যারি উইলমোর বোয়িং স্টারলাইনার মহাকাশযানে চড়ে আইএসএসের উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন। মাত্র আট দিন পরই তাদের পৃথিবীতে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, স্টারলাইনারের প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে তাদের প্রত্যাবর্তন স্থগিত হয়ে যায়।
নাসার বিশেষজ্ঞরা ঝুঁকি বিবেচনা করে স্টারলাইনারকে খালি অবস্থাতেই পৃথিবীতে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেন। ফলে সুনীতা ও ব্যারিকে মহাকাশ স্টেশনেই অপেক্ষা করতে হয়। এই দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে এবার তাদের নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ সফল হতে চলেছে।
আইএসএসে প্রায় ছয় মাসের জন্য পাঠানো হয়েছে নতুন চার মহাকাশচারীকে। তারা হলেন নাসার অ্যান ম্যাক্লেন ও নিকোল আইয়ার্স, জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জাক্সার প্রতিনিধি টাকুয়া ওনিশি এবং রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমসের কিরিল পেসকভ।
এই অভিযান শুধুমাত্র সুনীতা ও ব্যারির প্রত্যাবর্তনই নয়, বরং নতুন গবেষণা ও পরীক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করল। নাসার আশা, মহাকাশ স্টেশনের নতুন দল আরও নতুন গবেষণা ও প্রযুক্তি উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে এই মিশন এক নতুন অধ্যায় যুক্ত করল। দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে সুনীতা ও ব্যারি পৃথিবীর মাটিতে ফিরতে চলেছেন, যা শুধু নাসার জন্য নয়, সমগ্র মহাকাশ গবেষণা জগতের জন্য এক বিশাল স্বস্তির সংবাদ।