যুক্তরাষ্ট্র
ট্রাম্প: কানাডা যদি যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হয়, তবু জাতীয় সংগীত বজায় রাখতে পারবে
কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য করার ইঙ্গিত দিয়ে ফের বিতর্ক উসকে দিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মজার ছলে হলেও তার মন্তব্যকে কেন্দ্র করে কূটনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
ওয়াশিংটনে রিপাবলিকান গভর্নরদের এক সভায় ট্রাম্প বলেন, “কানাডা যদি যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হয়, তবে তারা নিজেদের জাতীয় সংগীত ‘ও কানাডা’ রাখতে পারবে।” তিনি আরও দাবি করেন, কানাডা অর্থনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল এবং মার্কিন সামরিক সুরক্ষা ছাড়া দেশটির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। ট্রাম্পের ভাষায়, “অটোয়ার টিকে থাকার জন্য ওয়াশিংটনের সাহায্য প্রয়োজন। কানাডা যদি যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্য হয়ে যায়, তবে সেটি তাদের জন্যই মঙ্গলজনক হবে।”
ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পরই সমালোচনার ঝড় ওঠে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সরাসরি প্রতিক্রিয়া না জানালেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হকির জয়কে কেন্দ্র করে একটি মন্তব্য করেন। ফোর নেশনস ফেস-অফ হকি টুর্নামেন্টে যুক্তরাষ্ট্রকে হারানোর পর ট্রুডো লিখেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র না আমাদের দেশ, না আমাদের খেলার নিয়ন্ত্রক।” তার এই মন্তব্যকে অনেকেই ট্রাম্পের বক্তব্যের পরোক্ষ জবাব হিসেবে দেখছেন।
এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও দাবি করেছেন, ট্রুডো স্বীকার করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতি কানাডার অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। তার মতে, “এ কারণেই ট্রাম্প কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব দিয়েছেন।” তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি নিছক রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করার কৌশল।
ট্রাম্পের এই অবস্থানের পর, কানাডার বহু নাগরিক প্রতিবাদ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সফর বাতিল করছেন। বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, বিশেষ করে ভ্যাঙ্কুভার থেকে যুক্তরাষ্ট্রগামী বিমানের টিকিটের চাহিদা প্রায় ২৫ শতাংশ কমে গেছে। মার্কিন পর্যটন সংস্থাগুলো ইতিমধ্যে সতর্কতা প্রকাশ করেছে, কারণ কানাডীয় পর্যটকদের সংখ্যা হ্রাস পেলে যুক্তরাষ্ট্র বছরে প্রায় ২০০ কোটি ডলার রাজস্ব হারাতে পারে।
রাজনৈতিক চাপানউতোরের মাঝে এই বিতর্ক শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।