রিয়াদে আরব নেতাদের বৈঠক: গাজার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে নতুন কৌশল
আরব বিশ্বের সাতটি দেশের শীর্ষনেতারা শুক্রবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হন। আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার ভবিষ্যৎ ও পুনর্গঠনের কৌশল নির্ধারণ।
এ বৈঠক এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হলো, যখন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা নিয়ে তার বিতর্কিত পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসন যুদ্ধ–পরবর্তী গাজার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি অঞ্চলটি জোরপূর্বক খালি করার কথা ভাবছে। তবে আরব নেতারা এই পরিকল্পনাকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাদের মতে, এটি ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার খর্ব করবে এবং সহিংসতার চক্রকে আরও দীর্ঘায়িত করবে।
বৈঠকে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের আহ্বানে অংশ নেন জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ, মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান, কুয়েতের আমির শেখ মেশাল আল-আহমাদ আল-সাবাহ এবং বাহরাইনের যুবরাজ সালমান বিন হামাদ আল খলিফা।
বৈঠকের শুরুতে মিসরের গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়, যা হামাস-ইসরায়েলের মধ্যে তিন স্তরের যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ। প্রথম পর্যায়ে অস্ত্রবিরতি কার্যকর থাকলেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তি ও গাজার পুনর্গঠন নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে।
আল-জাজিরার প্রতিবেদক হাশেম আহেলবাররার মতে, কায়রোতে ৪ মার্চ অনুষ্ঠেয় আরব লীগের বৈঠকের আগেই একটি গ্রহণযোগ্য প্রস্তাব উপস্থাপনের লক্ষ্যে আরব নেতারা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছেন। মিসরের পরিকল্পনার ওপর ভিত্তি করে তারা এমন একটি রূপরেখা তৈরি করতে চান, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সহজে গ্রহণযোগ্য হবে।
এদিকে, মিসরের সাবেক কূটনীতিক মোহাম্মদ হেগাজি জানিয়েছেন, গাজার পুনর্গঠন পরিকল্পনাটি তিন ধাপে বাস্তবায়ন করার কথা রয়েছে, যা সম্পন্ন হতে তিন থেকে পাঁচ বছর লাগতে পারে। প্রথম ধাপে ছয় মাসের মধ্যে জরুরি পুনরুদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে, দ্বিতীয় ধাপে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে।
আরব নেতারা এবার এক নতুন কৌশল নিতে চাচ্ছেন, যেখানে গাজার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে আন্তর্জাতিক সমর্থন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। কায়রোর বৈঠকে এ বিষয়ে আরও পরিষ্কার দিকনির্দেশনা আসার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।