০৪:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার জাহাজে জাহাজে ইসরায়েলি জলকামান হামলা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:৩৮:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫
  • / 107

ছবি: সংগৃহীত

 

গাজার জন্য ত্রাণ নিয়ে যাওয়া ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র একটি জাহাজে জলকামান ব্যবহার করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এমন অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১ অক্টোবর) একটি সামরিক জাহাজ থেকে ত্রাণবাহী জাহাজে প্রায় ১০ মিনিট ধরে জলকামান ছোড়া হয়।

নৌবহরে থাকা ‘মিকেনো’ নামের জাহাজের অধিকারকর্মী মুহাম্মদ হুজেফে কুকুকায়তেকিন জানান, ইসরায়েলি নৌবাহিনীর একটি জাহাজ তাদের অনুসরণ করে এবং পরে কাছে এসে জাহাজ ও কর্মীদের সরঞ্জাম ভিজিয়ে দেয়।

বিজ্ঞাপন

ভিডিও বার্তায় কুকুকায়তেকিন বলেন, ‘আমাদের জাহাজ ও সব সামগ্রী ভিজে গেছে। কয়েকজন সহকর্মী ঠান্ডায় কষ্ট পাচ্ছেন। নারী অধিকারকর্মীদের কেউ কেউ কঠিন অবস্থায় আছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারা আমাদের ইঞ্জিন বন্ধ করতে বলে এবং হাত তুলতে নির্দেশ দেয়। তবে আমরা থামিনি। প্রায় ১০–১২ মিনিট পরে তারা সরে যায়।’

‘মিকেনো’ নামের জাহাজ থেকেই এই ভিডিও প্রচার করেছেন কুকুকায়তেকিন। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সও নিশ্চিত করেছে, একই ব্যক্তি আগেও ওই জাহাজ থেকে লাইভ সম্প্রচার করেছিলেন। যদিও ভিডিওগুলো ঠিক কখন ও কোথায় ধারণ করা হয়েছে তা স্বাধীনভাবে যাচাই সম্ভব হয়নি।

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার একাধিক জাহাজ এরইমধ্যে ইসরায়েলি বাহিনী আটক করেছে। ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ‘যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশের চেষ্টা এবং বৈধ নৌ অবরোধ ভাঙার চেষ্টা ব্যর্থ করা হয়েছে।’

‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ হলো গাজার জন্য ত্রাণ পাঠানোর একটি বৈশ্বিক নাগরিক উদ্যোগ। এ বহরে রয়েছে ৪০টির বেশি বেসামরিক নৌযান ও ৫০০ জনের বেশি যাত্রী। তাদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র, আয়ারল্যান্ড, স্পেন, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্য, চিকিৎসক, আইনজীবী, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীরা।

এই বহরের প্রথম অংশ যাত্রা শুরু করে ৩১ আগস্ট, স্পেনের বার্সেলোনা থেকে। এরপর তিউনিসিয়া, ইতালির সিসিলি ও গ্রিসের সাইরাস দ্বীপ থেকেও যুক্ত হয় আরও কয়েকটি নৌযান।

ইসরায়েল ২০০৭ সাল থেকে গাজার ওপর স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে কঠোর অবরোধ চালিয়ে আসছে। ফলে আন্তর্জাতিক অনেক সংস্থাই এ অবরোধকে মানবিক সংকট হিসেবে উল্লেখ করে আসছে। গ্লোবাল ফ্লোটিলা হচ্ছে এমন একটি প্রচেষ্টা, যা সরাসরি এই অবরোধ ভেঙে গাজার জনগণের কাছে ত্রাণ পৌঁছাতে চায়।

এর আগে ২০১০ সালে তুরস্কভিত্তিক একটি ত্রাণবাহী বহরে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ১০ জন নিহত হয়েছিলেন, যা আন্তর্জাতিকভাবে তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়। সেই ঘটনার ছায়া আজও রয়ে গেছে এই ধরনের মানবিক মিশনগুলোর ওপর।

নিউজটি শেয়ার করুন

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার জাহাজে জাহাজে ইসরায়েলি জলকামান হামলা

আপডেট সময় ১২:৩৮:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫

 

গাজার জন্য ত্রাণ নিয়ে যাওয়া ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র একটি জাহাজে জলকামান ব্যবহার করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এমন অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১ অক্টোবর) একটি সামরিক জাহাজ থেকে ত্রাণবাহী জাহাজে প্রায় ১০ মিনিট ধরে জলকামান ছোড়া হয়।

নৌবহরে থাকা ‘মিকেনো’ নামের জাহাজের অধিকারকর্মী মুহাম্মদ হুজেফে কুকুকায়তেকিন জানান, ইসরায়েলি নৌবাহিনীর একটি জাহাজ তাদের অনুসরণ করে এবং পরে কাছে এসে জাহাজ ও কর্মীদের সরঞ্জাম ভিজিয়ে দেয়।

বিজ্ঞাপন

ভিডিও বার্তায় কুকুকায়তেকিন বলেন, ‘আমাদের জাহাজ ও সব সামগ্রী ভিজে গেছে। কয়েকজন সহকর্মী ঠান্ডায় কষ্ট পাচ্ছেন। নারী অধিকারকর্মীদের কেউ কেউ কঠিন অবস্থায় আছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারা আমাদের ইঞ্জিন বন্ধ করতে বলে এবং হাত তুলতে নির্দেশ দেয়। তবে আমরা থামিনি। প্রায় ১০–১২ মিনিট পরে তারা সরে যায়।’

‘মিকেনো’ নামের জাহাজ থেকেই এই ভিডিও প্রচার করেছেন কুকুকায়তেকিন। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সও নিশ্চিত করেছে, একই ব্যক্তি আগেও ওই জাহাজ থেকে লাইভ সম্প্রচার করেছিলেন। যদিও ভিডিওগুলো ঠিক কখন ও কোথায় ধারণ করা হয়েছে তা স্বাধীনভাবে যাচাই সম্ভব হয়নি।

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার একাধিক জাহাজ এরইমধ্যে ইসরায়েলি বাহিনী আটক করেছে। ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ‘যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশের চেষ্টা এবং বৈধ নৌ অবরোধ ভাঙার চেষ্টা ব্যর্থ করা হয়েছে।’

‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ হলো গাজার জন্য ত্রাণ পাঠানোর একটি বৈশ্বিক নাগরিক উদ্যোগ। এ বহরে রয়েছে ৪০টির বেশি বেসামরিক নৌযান ও ৫০০ জনের বেশি যাত্রী। তাদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র, আয়ারল্যান্ড, স্পেন, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্য, চিকিৎসক, আইনজীবী, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীরা।

এই বহরের প্রথম অংশ যাত্রা শুরু করে ৩১ আগস্ট, স্পেনের বার্সেলোনা থেকে। এরপর তিউনিসিয়া, ইতালির সিসিলি ও গ্রিসের সাইরাস দ্বীপ থেকেও যুক্ত হয় আরও কয়েকটি নৌযান।

ইসরায়েল ২০০৭ সাল থেকে গাজার ওপর স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে কঠোর অবরোধ চালিয়ে আসছে। ফলে আন্তর্জাতিক অনেক সংস্থাই এ অবরোধকে মানবিক সংকট হিসেবে উল্লেখ করে আসছে। গ্লোবাল ফ্লোটিলা হচ্ছে এমন একটি প্রচেষ্টা, যা সরাসরি এই অবরোধ ভেঙে গাজার জনগণের কাছে ত্রাণ পৌঁছাতে চায়।

এর আগে ২০১০ সালে তুরস্কভিত্তিক একটি ত্রাণবাহী বহরে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ১০ জন নিহত হয়েছিলেন, যা আন্তর্জাতিকভাবে তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়। সেই ঘটনার ছায়া আজও রয়ে গেছে এই ধরনের মানবিক মিশনগুলোর ওপর।