ভারত-কানাডা সম্পর্কে বরফ গলছে, ২ বছর পরে কূটনৈতিক সমঝোতা

- আপডেট সময় ০৩:৫৯:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
- / 3
দীর্ঘ প্রায় দুই বছর ধরে চলা কূটনৈতিক টানাপোড়েন কাটিয়ে এবার সম্পর্ক উন্নয়নের পথে এগোচ্ছে ভারত ও কানাডা। গতকাল মঙ্গলবার (১৭ জুন) কানাডার অ্যালবার্টায় অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির মধ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে উভয় দেশ নিজ নিজ রাজধানীতে হাই কমিশনার পুনঃনিয়োগে সম্মত হয়, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিচ্ছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, নাগরিক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাভাবিক কনস্যুলার সেবা পুনরায় চালুর লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার সারেতে খালিস্তানপন্থী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ডের পর দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। কানাডা ভারতের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ তোলে, যা নয়াদিল্লি ‘অযৌক্তিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ হিসেবে প্রত্যাখ্যান করে।
এই ঘটনার পর একে অপরের কূটনীতিক বহিষ্কার, ভিসা সেবা স্থগিতসহ নানা প্রতিক্রিয়ামূলক পদক্ষেপ নেয় দুই দেশ। ভারত অভিযোগ করে, কানাডা ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে প্রশ্রয় দিচ্ছে। কানাডা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
তবে বিশ্লেষকদের মতে, এবার পরিস্থিতি শান্তির দিকে মোড় নিচ্ছে। ভারত জি-৭ এর সদস্য না হলেও, প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আমন্ত্রণ জানান কানাডার প্রধানমন্ত্রী। কার্নি জানান, বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশের নেতৃত্বকে আলোচনার টেবিলে রাখা যৌক্তিক সিদ্ধান্ত।
বৈঠকে মোদী ও কার্নি প্রযুক্তি, ডিজিটাল রূপান্তর, খাদ্য নিরাপত্তা এবং গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। যদিও নিজ্জর হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করা হয়নি, তবুও কার্নি জানান, এই বিষয়টি নিয়েও মোদীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠক শেষে মোদী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী কার্নির সঙ্গে অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। ভারত ও কানাডা গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে বিশ্বাসী। আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই।” কার্নিও মোদীকে সম্মেলনে আতিথেয়তা দিতে পেরে সম্মানিত বোধ করার কথা জানান।
এদিকে, সম্মেলনের সময় ক্যালগারিতে খালিস্তানপন্থীদের বিক্ষোভে নিজ্জরের হত্যার বিচার দাবি করা হয়। কিছু বিক্ষোভকারী মোদীর সফরের বিরোধিতাও করেন। তবে সামগ্রিকভাবে এই হাই কমিশনার পুনঃনিয়োগকে দুই দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ সূচনা হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।