আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস আজ: বন উজাড়ে হুমকিতে প্রকৃতি ও প্রাণবৈচিত্র্য

- আপডেট সময় ১১:১৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
- / 4
আজ ২২ মে, বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে যথাযোগ্য গুরুত্ব ও সচেতনতা সৃষ্টির প্রত্যয়ে। জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা, প্রাকৃতিক সম্পদের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার এবং বিলুপ্তপ্রায় বন্য প্রাণীর করুণ বাস্তবতা স্মরণ করিয়ে দিতে দিবসটির গুরুত্ব অপরিসীম।
বর্তমানে বিশ্বব্যাপী এক ভয়াবহ বাস্তবতা হলো বনভূমি ক্রমাগত সংকুচিত হচ্ছে। মানুষের বসবাসের জায়গা তৈরি, কাঠ ও জ্বালানির চাহিদা পূরণ এবং শিল্পায়নের অজুহাতে নির্বিচারে বন উজাড় করা হচ্ছে। এর ফলে শুধু প্রকৃতি নয়, হারিয়ে যাচ্ছে অগণিত জীববৈচিত্র্যও। কৃষিজমি রূপ নিচ্ছে শিল্পাঞ্চলে—এই অনিয়ন্ত্রিত প্রবণতা শুধু পরিবেশ নয়, খাদ্য নিরাপত্তাকেও করছে হুমকির মুখোমুখি।
১৯৯২ সালে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের গুরুত্ব উপলব্ধি করে জাতিসংঘ জীববৈচিত্র্য কনভেনশনের সূচনা করে। ১৯৯৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো দিবসটি পালিত হয়। তবে ২০০১ সাল থেকে প্রতি বছর ২২ মে তারিখকে ‘আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস’ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির উদ্যোগে বিশ্ববাসীকে জীববৈচিত্র্য রক্ষার বার্তা দিতে দিবসটি পালন করা হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বনভূমি উজাড় হওয়ার কারণে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, জলবায়ুর স্বাভাবিক ধারা পাল্টে যাচ্ছে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের হার বেড়েছে। জাতিসংঘের সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, প্রকৃতির এই ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত থাকলে আগামী দশ বছরের মধ্যে প্রায় দশ লাখ প্রজাতি চিরতরে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।
এছাড়া গবেষণায় দেখা গেছে, গত ৫০ বছরে বিশ্বে গড়ে ৬০ শতাংশ বন্যপ্রাণী কমে গেছে। আর এই হারে প্রজাতি বিলুপ্তি ঘটছে বর্তমানে যা গত ১ কোটি বছরের গড় হারের চেয়ে ১০ থেকে ১০০ গুণ বেশি।
এই ভয়াবহ চিত্র আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এখনই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। মানুষ, প্রকৃতি ও প্রাণীর সহাবস্থানের ভারসাম্য রক্ষা করতে হলে বন, নদী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সক্রিয় হতে হবে সকলকে। দিবসটি আমাদের সামনে সেই বার্তাই নতুন করে তুলে ধরছে।