সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষে উতপ্ত লিবিয়া, নাগরিকদের ঘরে থাকার নির্দেশ

- আপডেট সময় ০২:২২:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
- / 17
লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি আবারও কেঁপে উঠেছে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষে। স্থানীয় সময় সোমবার রাত থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় শুরু হওয়া এই সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন একটি প্রভাবশালী সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতা।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আল-আহরার ও আল-ওয়াসাত জানিয়েছে, দক্ষিণ ত্রিপোলিভিত্তিক শক্তিশালী সশস্ত্র সংগঠন ‘সাপোর্ট অ্যান্ড স্ট্যাবিলিটি অ্যাপারেটাস’-এর নেতা আবদেল ঘানি আল-কিকলি এই সংঘর্ষে নিহত হন। রাত ৯টার পর থেকে রাজধানীর একাধিক এলাকায় ভারী অস্ত্রের গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় বলে জানিয়েছে এএফপির সাংবাদিকরা।
ত্রিপোলির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বাসিন্দাদের নিরাপত্তার স্বার্থে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। শহরের বিভিন্ন স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত।
স্থানীয় গণমাধ্যমের দাবি, সংঘর্ষটি ত্রিপোলির একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং মিসরাতা শহরভিত্তিক প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর মধ্যে রাজধানীর দক্ষিণ উপকণ্ঠে শুরু হয়। দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় গোলাগুলি ও বিস্ফোরণ ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের ভেতর আতঙ্ক।
লিবিয়া ২০১১ সালের গাদ্দাফি-বিরোধী বিদ্রোহের পর থেকে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত অস্থিরতায় জর্জরিত। দেশটি বর্তমানে দুটি প্রশাসনে বিভক্ত জাতিসংঘ স্বীকৃত ত্রিপোলিভিত্তিক জাতীয় ঐক্য সরকার এবং পূর্বাঞ্চলে হাফতার পরিবারের নিয়ন্ত্রিত সরকার। এই বিভক্তির সুযোগে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী শক্তি প্রদর্শনে লিপ্ত হয়েছে, যার জেরে প্রায়ই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
২০২৩ সালের আগস্টেও এমন এক সংঘর্ষে ৫৫ জন নিহত হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুলনামূলকভাবে পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও এই ধরণের সহিংসতা নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের লিবিয়া সহায়তা মিশন (ইউএনএসএমআইএল) গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ভারী অস্ত্রের যুদ্ধ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। তারা সতর্ক করেছে, বেসামরিক জনগণ বা অবকাঠামোর ওপর হামলা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। মিশনটি সব পক্ষকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায় এবং সমাজের প্রবীণ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের শান্তি উদ্যোগকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে।
সূত্র: এএফপি