ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা, বিশ্বজুড়ে প্রশংসায় বিশ্বনেতারা

- আপডেট সময় ০৩:৫১:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫
- / 21
ভারত ও পাকিস্তান কয়েক দিনের ভয়াবহ সংঘাতের পর অবশেষে একটি সম্পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে। গতকাল শনিবার এই সিদ্ধান্তে পৌঁছায় দুই দেশ। ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধবিমান ও গোলাবর্ষণে চলা প্রাণঘাতী সংঘাতের পর এই শান্তির পথে পদক্ষেপকে বিশ্বনেতারা স্বাগত জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, চলতি উত্তেজনার সূত্রপাত ঘটে ২২ এপ্রিল, যখন ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সশস্ত্র হামলায় ২৬ জন নিহত হন। কোনো তদন্ত ছাড়াই ভারত পাকিস্তানকে এ হামলার জন্য দায়ী করে। তবে পাকিস্তান সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে এবং একটি নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানায়।
এই ঘটনার পর ভারত পাকিস্তানে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যাতে বেসামরিক নাগরিকরা হতাহত হন। পাকিস্তানের আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, দেশটির ছয়টি স্থানে মোট ২৪টি হামলায় ৩৩ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ৭৬ জন আহত হয়েছেন।
জবাবে পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে এবং নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর একাধিক তল্লাশিচৌকিতে পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় দুই দেশ গতকাল একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে একে শান্তির পথে ‘ইতিবাচক পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এক বিবৃতিতে জানান, গুতেরেস এই সিদ্ধান্তকে দায়িত্বশীল নেতৃত্বের নিদর্শন হিসেবে দেখছেন।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার জানিয়েছেন, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই তাঁকে ফোন করে পাকিস্তানের সংযম ও দায়িত্বশীল ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
সৌদি আরবের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আদেল আল-জুবেইরও দুই দেশের এই যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। সৌদি পররাষ্ট্র দপ্তরের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে দেওয়া পোস্টে বলা হয়েছে, উভয় দেশ যেন এই বিরতির সুযোগ কাজে লাগিয়ে সরাসরি ও কার্যকর সংলাপে বসে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে লেখেন, “ভারত-পাকিস্তানের আজকের যুদ্ধবিরতিকে দারুণভাবে স্বাগত জানাই। আমি উভয় পক্ষকে এটি বজায় রাখার আহ্বান জানাই। সবার স্বার্থেই উত্তেজনা প্রশমন জরুরি।”
এই যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন করে শান্তির আশা দেখা দিয়েছে। এখন সময় দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা গড়ে তুলে স্থায়ী সমাধানের পথে এগিয়ে যাওয়ার।