ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে প্রথমবারের মতো ড্রোন যুদ্ধ, বিশ্বে নজিরবিহীন উত্তেজনা

- আপডেট সময় ১১:৪৯:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫
- / 16
দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের দ্বন্দ্বে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে ড্রোন যুদ্ধ। সাম্প্রতিক সংঘর্ষকে বিশ্বের প্রথম ড্রোন যুদ্ধ বলেও অভিহিত করছেন বিশ্লেষকরা। কয়েক দিনের পাল্টাপাল্টি হামলার পর অবশেষে গতকাল শনিবার (১০ মে) উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) ভারত অভিযোগ করে, পাকিস্তান তাদের তিনটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীরের ভারত-নিয়ন্ত্রিত এলাকাও রয়েছে। তবে পাকিস্তান এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। উল্টো তারা দাবি করে, ভারতের অন্তত ২৫টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে, যার বেশিরভাগই ইসরায়েলি হ্যারপ মডেলের।
ড্রোন ব্যবহারের ফলে এ দ্বন্দ্ব এক নতুন রূপ নিয়েছে বলে মত বিশ্লেষকদের। মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধ কলেজের অধ্যাপক জাহারা ম্যাটিসেক বলেন, “ড্রোন যুদ্ধে যে দক্ষ হবে, ভবিষ্যতের যুদ্ধক্ষেত্র তারাই নিয়ন্ত্রণ করবে।”
এরইমধ্যে পাকিস্তান দাবি করেছে, ভারতের বিমান হামলা ও সীমান্ত গোলাবর্ষণে তাদের ৩৬ জন নিহত ও ৫৭ জন আহত হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, পাকিস্তানের গোলায় অন্তত ১৬ জন বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে। ভারত দাবি করেছে, কাশ্মীরের পেহেলগামে ভারতীয় পর্যটকদের ওপর হামলার জবাবে পাকিস্তানে আঘাত হানা হয়েছে। পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ভারতের ড্রোন শক্তির মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলি হারন, সার্চার, হ্যারপি ও হ্যারপ। সম্প্রতি তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩১টি প্রিডেটর ড্রোন কিনছে, যেগুলো ৪০ ঘণ্টা আকাশে থাকতে পারে। পাশাপাশি, ভারত ‘স্বর্ম ড্রোন কৌশল’ নিয়েও কাজ করছে।
অন্যদিকে, পাকিস্তান চীন ও তুরস্কের সহায়তায় তৈরি করেছে সিএইচ-ফোর, বাইরাকতার আকিঞ্জি, এবং নিজস্ব বুরাক ও শাহপার ড্রোন। তারা এখন ‘লয়্যাল উইংম্যান’ টাইপ ড্রোন তৈরিতেও এগিয়ে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি এখনো সীমিত পরিসরে হলেও ভবিষ্যতের বৃহৎ সংঘাতের সূচনা হতে পারে। পাকিস্তানের বিশ্লেষক ইজাজ হায়দার বলেন, “এই হামলাগুলো বেশি প্রতীকী, পূর্ণ প্রতিশোধ নয়।” মনোজ জোশীর মতে, “ড্রোন ব্যবহারে বড় যুদ্ধ এড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে, তবে এটি ভবিষ্যতের আগুন জ্বালাতে পারে।”
ড্রোন যুদ্ধে ঝুঁকি কম হলেও, প্রতিটি হামলা নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করছে। দুই পক্ষেরই পরমাণু অস্ত্র থাকায় এই সংঘাত আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র: বিবিসি