বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি রেকর্ড, ঘাটতিও চরমে

- আপডেট সময় ০১:০৯:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫
- / 37
বাণিজ্যযুদ্ধের শঙ্কার মধ্যেই ২০২৪ সালের মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যঘাটতি বেড়েছে ১৪ শতাংশ। মূলত সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য পাল্টা শুল্ক নীতির আশঙ্কায় আমদানিকারকেরা বিপুল পরিমাণে পণ্য আমদানি করেছেন। এ কারণে মার্চ মাসে দেশটির বাণিজ্যঘাটতি পৌঁছেছে রেকর্ড ১৪০ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে, যা রয়টার্সের পূর্বাভাসকেও ছাড়িয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসে আমদানি হয় ৪১৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, যা ইতিহাসে সর্বোচ্চ। অন্যদিকে রপ্তানি হয় ২৭৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, যা আগের মাসের তুলনায় শূন্য দশমিক ২ শতাংশ বেশি। ফলে মার্চেই পণ্য বাণিজ্যের ঘাটতি দাঁড়ায় ১৬৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার, যা ১১ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি।
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে, অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়েও আমদানির এই উল্লম্ফনের প্রভাব পড়ে অর্থনীতিতে। ওই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি সংকুচিত হয়েছে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ, যার প্রধান কারণ হিসেবে বিশ্লেষকেরা দেখছেন এই বাড়তি আমদানিকে। তাদের মতে, বাণিজ্যঘাটতির কারণে জিডিপির ৪ দশমিক ৮৩ শতাংশীয় পয়েন্ট হ্রাস পেয়েছে।
চীন থেকে আমদানি গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন হলেও মেক্সিকো, ভিয়েতনামসহ আরও ১০টি দেশ থেকে রেকর্ড পরিমাণ পণ্য আমদানি হয়েছে। অন্যদিকে রপ্তানি বেড়েছে শিল্পপণ্য, গাড়ি, ইঞ্জিন ও যন্ত্রাংশ খাতে, যদিও মূলধনি পণ্য ও বেসামরিক বিমানের রপ্তানি কমেছে। এক্ষেত্রে বিমান রপ্তানিতে হ্রাস ১৮০ কোটি ডলার।
২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মোট বাণিজ্যঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৯১৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি।
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ট্রাম্পের আগ্রাসী বাণিজ্যনীতিই এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী। বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমতে থাকায় তাঁরা ডলারভিত্তিক বন্ড ও শেয়ার বিক্রি করে অন্যান্য মুদ্রা ও সম্পদে বিনিয়োগ করছেন। মার্চ মাসে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি কমে যাওয়া এবং নভেম্বরে আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষিতে স্বর্ণ ও রুপার বুলিয়নে বিনিয়োগ বেড়ে যাওয়াই তার প্রমাণ।
সার্বিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যনীতি এখন চাপের মুখে, যার প্রভাব অর্থনীতির নানা খাতে প্রতিফলিত হচ্ছে।