ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে ইরানের ‘অধিকার’ দাবি, আলোচনা স্থগিত

- আপডেট সময় ০৬:৩৩:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫
- / 24
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি শনিবার জানিয়েছেন, তার দেশের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার পূর্ণ অধিকার রয়েছে। এমন মন্তব্য এসেছে এমন সময়ে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক আলোচনার চতুর্থ দফা হঠাৎ স্থগিত হয়ে গেছে।
এক্স প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক বার্তায় আরাঘচি বলেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (NPT) সদস্য এবং এই চুক্তির আওতায় পরমাণু জ্বালানি তৈরির সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া পরিচালনার অধিকার তার আছে। তিনি বলেন, “এনপিটির অনেক সদস্যই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, কিন্তু তারা পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে না। আমরাও তাই করছি।”
চুক্তি অনুযায়ী, NPT স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর জন্য বাধ্যতামূলক তাদের পারমাণবিক কার্যক্রম জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হতে হবে। যদিও পশ্চিমা বিশ্ব দীর্ঘদিন ধরে ইরানকে গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করে আসছে। কিন্তু তেহরান বারবার বলে আসছে, তাদের কর্মসূচি শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
গত ১২ এপ্রিল ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরমাণু আলোচনা শুরু হয়, যা ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসনের চুক্তি ত্যাগের পর সবচেয়ে উচ্চ পর্যায়ের সংলাপ। তবে মধ্যস্থতাকারী দেশ ওমান জানায়, ‘লজিস্টিক কারণে’ শনিবারের আলোচনা স্থগিত করা হয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফক্স নিউজকে বলেন, “যেসব দেশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে, তারা সবাই পারমাণবিক অস্ত্রধারী। ইরানের উচিত এই প্রক্রিয়া থেকে সরে আসা।” তিনি আরও দাবি করেন, ইরানকে তার পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোতে আন্তর্জাতিক পরিদর্শনের সুযোগ দিতে হবে এবং হুতি বিদ্রোহীদের প্রতি সমর্থনও প্রত্যাহার করতে হবে।
উল্লেখ্য, ইরান বর্তমানে ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধতায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, যা ২০১৫ সালের চুক্তিতে নির্ধারিত সীমা ৩.৬৭ শতাংশের অনেক বেশি। যদিও এটি এখনও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশের নিচে।
আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বলেন, “সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম সহজেই সরানো সম্ভব।” তবে ইরানি মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি একে ‘লাল রেখা’ বলে অভিহিত করেছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সম্প্রতি বলেছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বন্ধ না হলে চুক্তি বিশ্বাসযোগ্য হবে না। জবাবে আরাঘচি অভিযোগ করেন, নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের নীতিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন।