ঢাকা ০৯:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কানাডায় নির্বাচনে লিবারেলের জয়, প্রধানমন্ত্রী হয়েই ট্রাম্পকে হুঁশিয়ারি দিলেন কার্নি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৩:৩৪:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৪ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

 

কানাডার ফেডারেল নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টিকে পরাজিত করে টানা চতুর্থবারের মতো জয় অর্জন করেছে লিবারেল পার্টি। এর ফলে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন মার্ক কার্নি। সোমবার (২৮ এপ্রিল) স্থানীয় সময় ভোটগ্রহণ শেষে ভোট গণনায় এ ফলাফল প্রকাশ পায়। খবর আল জাজিরার।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকি ও বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এবারকার নির্বাচনকে ভাগ্যের এক নাটকীয় পরিবর্তনের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। নতুন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী কার্নির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকছে মার্কিন শুল্ক ও জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয় সামাল দেওয়া। কার্নি এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকার মার্ক কার্নি নির্বাচনের ফলাফলকে ‘কানাডাকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার সুযোগ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। বিজয়োত্তর ভাষণে তিনি বলেন, “যদি যুক্তরাষ্ট্র আর বিশ্ব অর্থনীতির নেতৃত্বে থাকতে না চায়, তবে কানাডা প্রস্তুত। আমরা লক্ষ লক্ষ আবাসন ইউনিট নির্মাণ করবো, শক্তির সুপারপাওয়ার হবো এবং কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত খুলবো।”

ট্রাম্পের উদ্দেশে তিনি কঠোর ভাষায় বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র আমাদের ভূমি, সম্পদ ও জলসম্পদের দিকে হাত বাড়াচ্ছে। এটি কোনো কাল্পনিক হুমকি নয়। ট্রাম্প আমাদের ভেঙে দিতে চায় যাতে আমেরিকা আমাদের দখল নিতে পারে। কিন্তু এটি কখনোই সফল হবে না।”

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ক নিয়ে কার্নি বলেন, “আমেরিকার সঙ্গে আমাদের পুরনো সম্পর্কের ইতি ঘটেছে। আমরা আমেরিকান বিশ্বাসঘাতকতার ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছি, তবে শিক্ষা ভুলে গেলে চলবে না।”

জয়ের পর লিবারেল পার্টি সামাজিক মাধ্যম ‘এক্স’-এ সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে লিখেছে, “কানাডাকে শক্তিশালী করে গড়বো।” পোস্টের সঙ্গে সংযুক্ত করা ছবিতে লেখা ছিল, ‘আপনাদের প্রধানমন্ত্রী, মার্ক কার্নি।’

ভোটের ফলাফল অনুযায়ী, ৩৪৩ আসনের মধ্যে লিবারেল পার্টি পেয়েছে ১৬৭টি আসন এবং কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ১৪৫টি আসন। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১৭২টি আসন। ফলে লিবারেলদের সরকার গঠনে ছোট দলগুলোর ওপর নির্ভর করতে হবে।

নির্বাচনের আগে কানাডার তৈরি গাড়ির ওপর যুক্তরাষ্ট্র ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেয় এবং কানাডাকে আমেরিকার ৫১তম রাজ্যে পরিণত করার মন্তব্য করে ট্রাম্প, যা কানাডিয়ানদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এসব পদক্ষেপ লিবারেলদের জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে।

এদিকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক্সে পোস্ট দিয়ে কার্নিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “কার্নি একজন আস্থাশীল নেতা, যিনি কানাডিয়ান ও আমেরিকানদের ভাগ করে নেওয়া মূল্যবোধের পক্ষে কাজ করবেন।”

উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুতে টানা ৯ বছর ক্ষমতায় থাকার পর পদত্যাগ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এরপর ৯ মার্চ লিবারেল পার্টির নতুন নেতা নির্বাচিত হন মার্ক কার্নি, যেখানে তিনি পেয়েছিলেন ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৭৪ ভোট। এবারের নির্বাচনে প্রায় ২ কোটি ৯০ লাখ ভোটার ছিলেন, যার মধ্যে রেকর্ড ৭৩ লাখ ভোটার আগাম ভোট দিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

কানাডায় নির্বাচনে লিবারেলের জয়, প্রধানমন্ত্রী হয়েই ট্রাম্পকে হুঁশিয়ারি দিলেন কার্নি

আপডেট সময় ০৩:৩৪:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

 

কানাডার ফেডারেল নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টিকে পরাজিত করে টানা চতুর্থবারের মতো জয় অর্জন করেছে লিবারেল পার্টি। এর ফলে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন মার্ক কার্নি। সোমবার (২৮ এপ্রিল) স্থানীয় সময় ভোটগ্রহণ শেষে ভোট গণনায় এ ফলাফল প্রকাশ পায়। খবর আল জাজিরার।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকি ও বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এবারকার নির্বাচনকে ভাগ্যের এক নাটকীয় পরিবর্তনের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। নতুন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী কার্নির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকছে মার্কিন শুল্ক ও জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয় সামাল দেওয়া। কার্নি এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকার মার্ক কার্নি নির্বাচনের ফলাফলকে ‘কানাডাকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার সুযোগ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। বিজয়োত্তর ভাষণে তিনি বলেন, “যদি যুক্তরাষ্ট্র আর বিশ্ব অর্থনীতির নেতৃত্বে থাকতে না চায়, তবে কানাডা প্রস্তুত। আমরা লক্ষ লক্ষ আবাসন ইউনিট নির্মাণ করবো, শক্তির সুপারপাওয়ার হবো এবং কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত খুলবো।”

ট্রাম্পের উদ্দেশে তিনি কঠোর ভাষায় বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র আমাদের ভূমি, সম্পদ ও জলসম্পদের দিকে হাত বাড়াচ্ছে। এটি কোনো কাল্পনিক হুমকি নয়। ট্রাম্প আমাদের ভেঙে দিতে চায় যাতে আমেরিকা আমাদের দখল নিতে পারে। কিন্তু এটি কখনোই সফল হবে না।”

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ক নিয়ে কার্নি বলেন, “আমেরিকার সঙ্গে আমাদের পুরনো সম্পর্কের ইতি ঘটেছে। আমরা আমেরিকান বিশ্বাসঘাতকতার ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছি, তবে শিক্ষা ভুলে গেলে চলবে না।”

জয়ের পর লিবারেল পার্টি সামাজিক মাধ্যম ‘এক্স’-এ সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে লিখেছে, “কানাডাকে শক্তিশালী করে গড়বো।” পোস্টের সঙ্গে সংযুক্ত করা ছবিতে লেখা ছিল, ‘আপনাদের প্রধানমন্ত্রী, মার্ক কার্নি।’

ভোটের ফলাফল অনুযায়ী, ৩৪৩ আসনের মধ্যে লিবারেল পার্টি পেয়েছে ১৬৭টি আসন এবং কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ১৪৫টি আসন। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১৭২টি আসন। ফলে লিবারেলদের সরকার গঠনে ছোট দলগুলোর ওপর নির্ভর করতে হবে।

নির্বাচনের আগে কানাডার তৈরি গাড়ির ওপর যুক্তরাষ্ট্র ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেয় এবং কানাডাকে আমেরিকার ৫১তম রাজ্যে পরিণত করার মন্তব্য করে ট্রাম্প, যা কানাডিয়ানদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এসব পদক্ষেপ লিবারেলদের জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে।

এদিকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক্সে পোস্ট দিয়ে কার্নিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “কার্নি একজন আস্থাশীল নেতা, যিনি কানাডিয়ান ও আমেরিকানদের ভাগ করে নেওয়া মূল্যবোধের পক্ষে কাজ করবেন।”

উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুতে টানা ৯ বছর ক্ষমতায় থাকার পর পদত্যাগ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এরপর ৯ মার্চ লিবারেল পার্টির নতুন নেতা নির্বাচিত হন মার্ক কার্নি, যেখানে তিনি পেয়েছিলেন ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৭৪ ভোট। এবারের নির্বাচনে প্রায় ২ কোটি ৯০ লাখ ভোটার ছিলেন, যার মধ্যে রেকর্ড ৭৩ লাখ ভোটার আগাম ভোট দিয়েছেন।